চলতি বছরের শুরুতে কণ্ঠশিল্পী সালমা তার দ্বিতীয় বিয়ের খবর গণমাধ্যমকে জানান। এই বিয়ের খবর প্রকাশের তিন মাস পর জানা গেল, সালমার বর্তমান স্বামী ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটের ছেলে সানাউল্লাহ নূরে সাগর আগে আরেকটি বিয়ে করেছেন।
তাসনিয়া মুনিয়াত কক্সবাজারের মেয়ে, ঢাকার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছেন। ২০১৪ সালের ৩ জুন সানাউল্লাহ নূরে সাগর ও তার বিয়ে হয়। এরপর প্রথম স্ত্রীকে না জানিয়ে সালমাকে বিয়ে করেন সাগর। বিয়ের পর সাগর লন্ডনে চলে যান।
স্বামীর দ্বিতীয় বিয়ের ব্যাপারে কিছুই জানতেন না বলে শুরুতে সংবাদমাধ্যমকে জানালেও পরে সালমা জানান, তিনি বর্তমান স্বামীর দ্বিতীয় বিয়ের ব্যাপারে সব জানতেন।
ক’দিন ধরেই বিষয়টি নিয়ে হইচই চলছে। এ বিষয়ে সালমা একাধিকবার গণমাধ্যমের সামনে মুখ খুললেও তার স্বামী সাগরের কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যাচ্ছিল না।
অবশেষে মুখ খুলেছেন সাগরও, ‘আমাদের বিয়েটা হয়েছে কাজী অফিসে। কিন্তু তারা অভিযোগ করেছেন বিয়েতে নাকি আমাকে পাঁচ লাখ টাকার আসবাবপত্র, পাঁচ তোলা স্বর্ণালংকার ও পঞ্চাশ হাজার টাকার পোশাক দিয়েছেন। এগুলো সব মিথ্যে, এত আসবাবপত্র আমি কাজী অফিসের কোথায় রাখবো? তাছাড়া আমরা প্রেম করে বিয়ে করেছি। সেখানে আমার সাবেক স্ত্রীর মা-বাবা কিংবা পরিবারের কেউই উপস্থিত ছিলেন না। বিয়েতে উপস্থিত ছিল শুধুমাত্র আমার বন্ধুরা।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি একজন আইনজীবী। আইনের উপর আমার শ্রদ্ধা ও আস্থা আছে। আইনের সব নিয়ম মেনেই আমি সাবেক স্ত্রীকে ডিভোর্স দিয়েছি। কিন্তু আমার সাবেক স্ত্রী, শ্বাশুড়ি জলঘোলা করতে এত কিছু করছে। তারা বিষয়টি সমাধান করতে চাননি। তারা আমাকে হুমকি-ধামকিও দিয়েছে। তারা বলেছেন, “আমাকে তারা দেখে ছাড়বেন, জেল খাটাবেন।” আমার বিরুদ্ধে করা মিথ্যা মামলাই তার প্রমাণ।’
প্রথম স্ত্রীর মা অভিযোগ করেন, সাগর তার প্রথম স্ত্রী তাসনিয়া মুনিয়াতকে যৌতুকের জন্য মারধর করতো। যৌতুকের দাবিতে সাগর তার স্ত্রীকে গত বছর ৫ সেপ্টেম্বর নির্যাতন করলে, সে গুরুতর আহত হন। এরপর তাকে কক্সবাজারের একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। মামলায় তুলে ধরা হয় মেডিকেল সার্টিফিকেটও। তবে এটি মিথ্যে ও সাজানো নাটক বলে উল্লেখ করেন সাগর।
সাগরের দাবি, গত বছর সেপ্টেম্বরের ৭ তারিখ আমি যুক্তরাজ্যে যাই। আমার ফ্লাইট ছিল সকাল ১০টায়। ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আমাকে বিদায় জানাতে আমার স্ত্রী ছিলেন। সে বেশ প্রাণবন্তই ছিল। অভিযোগ করা হয়, ৫ তারিখ আমি আমার সাবেক স্ত্রীকে মারধর করে হাসপাতালে পাঠিয়েছি। আমরা নাকি ছিলাম কক্সবাজারে। কিন্তু ৫ সেপ্টেম্বর আমরা দু’জনেই ছিলাম ঢাকাতে। ওইদিন আমি আমার বন্ধুদের সঙ্গে বিদায় নিতেই ব্যস্ত ছিলাম।
ধানমণ্ডির একটি কফিশপে বন্ধুদের সঙ্গে অনেক রাত পর্যন্ত আড্ডা দিয়েছি। যার ভিডিও ফুটেজ খুঁজলে পাওয়া যাবে। পরদিন ৬ সেপ্টেম্বর সকালে, আমি ঢাকার একটি ব্যাংকে গিয়ে টাকা এনডোরস করেছি। চাইলে সে ফুটেজও পাওয়া যাবে। ঢাকায় থেকে তাহলে কিভাবে আমি আমার সাবেক স্ত্রীকে কক্সবাজারে গিয়ে মারলাম। আবার আমার শ্বশুড়বাড়ির লোকজন তাকে কক্সবাজারের একটি হাসপাতালেও নিয়ে গেল। এটা কীভাবে সম্ভব।’
এদিকে প্রথম স্ত্রীর অনুমতি না নিয়ে, গোপনে সংগীতশিল্পী সালমাকে বিয়ে করেছেন সাগর। এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সাগর বলেন, ‘গত বছর সেপ্টেম্বরের ২৮ তারিখ আমি তাসনিয়া মুনিয়াতকে ডিভোর্স দেই। আর অক্টোবরের ২১ তারিখ তারা ডিভোর্স লেটার গ্রহণও করে। ডাকযোগে পাঠানো ডিভোর্স লেটার গ্রহণ করেছে তার মা। প্রাপ্তি স্বীকারপত্রে তার স্বাক্ষরও আছে। ডিভোর্সের তিনমাস পার হওয়ার পরই আমি সালমাকে বিয়ে করেছি। আমাকে ও আমার পরিবারকে হয়রানি করার জন্যই, তারা ১৯ নভেম্বর মামলা করেছে। বিচ্ছেদের বিষয়টি আমি আইনের নিয়ম মেনেই করেছি। একটি মিথ্যা ঢাকতে, তারা অসংখ্য মিথ্যা দাঁড় করিয়েছে।’