কাল শহীদ মিনারে ইমতিয়াজ বুলবুলকে শেষ শ্রদ্ধা

ভোরের আলো ফুটে ওঠার আগে পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে চলে গেলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা, প্রখ্যাত সংগীত পরিচালক, গীতিকার, সুরকার আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল।

আজ মঙ্গলবার ভোর ৪টার দিকে মারা যান তিনি। তার মরদেহ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের হিমাগারে রাখা হয়েছে। সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা জানাতে কিংবদন্তি এই শিল্পীর মরদেহ আগামীকাল বুধবার সকাল ১১টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেওয়া হবে।

শহীদ মিনারে ইমতিয়াজ বুলবুলের মরদেহ দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত রাখা হবে। এরপর তাকে নিয়ে যাওয়া হবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে। সেখানে বাদ জোহর তার প্রথম নামাজে জানাজা সম্পন্ন হবে।

পরে দুপুরে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনে (বিএফডিসি)নিয়ে যাওয়া হবে তার মরদেহ। এফডিসিতে দ্বিতীয় জানাজা শেষে কিংবদন্তি এই সংগীতশিল্পী মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে চিরনিন্দ্রায় শায়িত হবেন।

সাংস্কৃতিক জোটের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের এক বোন দেশের বাইরে আছেন। তিনি আজ মঙ্গলবার বিকেলের মধ্যে দেশে ফিরবেন। আগামীকাল সকালে শহীদ মিনার ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে জানাজা শেষে তাকে মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফনের ব্যবস্থা করা হবে।

আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগে ভুগছিলেন। গত বছরের মাঝামাঝি তার হার্টে আটটি ব্লক ধরা পড়ে। পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার চিকিৎসার দায়িত্ব নেন। তখন তার হার্টে দুটি রিং পরানো হয়। এরপর চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরেন তিনি। কিন্তু হঠাৎ আজ মঙ্গলবার ভোর ৪টার দিকে তার শারীরিক অসুস্থতা বেড়ে যাওয়ায় দ্রুত তাকে মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (আয়েশা মেমোরিয়াল) নেওয়া হয়। সেখানে জরুরি বিভাগের চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

উল্লেখ্য, আহমেদ ইমতিয়াজ ১৯৭০ সালের শেষ লগ্ন থেকে আমৃত্যু বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পসহ সংগীত শিল্পে সক্রিয় ছিলেন। ১৯৭১ সালে মাত্র ১৫ বছর বয়সে তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নেন। যুদ্ধ থেকে ফেরার পর টানা দেড় দশক শুধু দেশের গান তৈরি করেছেন তিনি।

বুলবুল ১৯৭৮ সালে ‘মেঘ বিজলি বাদল’ ছবিতে সংগীত পরিচালনার মাধ্যমে চলচ্চিত্রে কাজ শুরু করেন। স্বাধীনভাবে গানের অ্যালবাম তৈরি করেছেন এবং অসংখ্য চলচ্চিত্রের সংগীত পরিচালনা করেছেন।

সাবিনা ইয়াসমিন, রুনা লায়লা, সৈয়দ আব্দুল হাদী, এন্ড্রু কিশোর, সামিনা চৌধুরী, খালিদ হাসান মিলু, আগুন, কনক চাঁপাসহ বাংলাদেশি জনপ্রিয় সংগীতশিল্পীদের নিয়ে কাজ করেছেন তিনি। সংগীতে অবদানের জন্য ইমতিয়াজ বুলবুল রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ সম্মাননা একুশে পদক, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার এবং রাষ্ট্রপতির পুরস্কারসহ অন্যান্য অসংখ্য পুরস্কার পান।

Scroll to Top