পাগলাটে ভক্তদের যত কাণ্ড!

তারকাদের রয়েছে লক্ষ কোটি ভক্ত। সেই ভক্তদের রয়েছে আবার কতশত আবদার। মাঝেমধ্যে তারকারা তা মিটিয়েও থাকেন।  কোন কোন ভক্ত পাগলাটে হয়ে যায় তার প্রিয় তারকার জন্য। এমন সব কান্ড ঘটিয়ে ফেলে যা দেখে রীতিমত হকচকিয়ে যান তারা। কয়েকজন তারকার এমন সব পাগল ভক্তের খোঁজ পাওয়া গেছে যার গল্প শুনলে আপনারও অবাক হতে হবে।

সালমান শাহ
সালমানই একমাত্র বাংলাদেশী নায়ক যার মৃত্যুতে চারজন ভক্ত আত্মহত্যা করেছিলেন। তাঁর মৃত্যুর পর আজও রয়েছে অজস্র ভক্ত অনুরাগী। কিন্তু একজন ভক্তের কথা আলাদাভাবে বলতেই হবে। তার নাম মাসুদ রানা নকিব।

সালমান যখন মারা যান, তখন এই ভক্ত মাত্র ক্লাস এইটে পড়েন। নায়কের মৃত্যু তিনি সহজভাবে মেনে নিতে পারেননি। প্রিয় নায়কের ভালবাসার জন্য জীবনে অনেক কিছু ত্যাগ করেছেন এই ভক্ত। একটা সময় নিজ গ্রামে গড়ে তুলেছিলেন সালমান শাহ্‌ ফ্যান ক্লাব। সেখানে সালমানের ভিউ কার্ড, পোস্টার দিয়ে ভরিয়ে তুললেন। সালমান শাহ ইন্ডাস্ট্রিতে আসার পর মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তাকে নিয়ে যত আর্টিকেল পত্রিকায় ছাপা হয়েছে সব তার সংগ্রহে ছিল। এমন পাগলামি তার বাবা মেনে নিতে পারছিলেন না। রাগ করে ক্লাবের সমস্ত পোস্টার আর ভিউ কার্ড অর্ধেক পুড়িয়ে ফেললেন আর বাকি অর্ধেক পানিতে ফেলে দিলেন।বাবার এমন কান্ডে রাগে হতবুদ্ধি হয়ে তিনি পরিবারের সাথে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করে ঢাকায় চলে আসেন। আজ পর্যন্ত তিনি তার বাবার সাথে এই ঘটনার কারণে কথা বলেন না।

ঢাকায় আসার পর থেকে নিজের উপার্জনেরও একটা বড় অংশ খরচ করে সালমানের জন্য। এমনকি তিনি যাকে বিয়ে করেছেন তিনিও সালমানের ভক্ত। এখনো সালমানের মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনের জন্য তিনি আশাবাদি। সালমানকে নিয়ে রয়েছে তার আরও অনেক প্ল্যানিং।

মোশাররফ করিম
মোশাররফ করিমের ভক্তকূলও কম নয়। দেশ ছাড়িয়ে বিদেশেও রয়েছে তা। যেমন কলকাতার অভিজিৎ। তাঁর সাথে দেখা করার জন্য কলকাতা থেকে এসেছেন। এ কথা শুনে দেখাও করলেন মোশাররফ। যখন রেস্টুরেন্টে দেখা হলো। অমনি মোশাররফকে জড়িয়ে ধরে হু হু করে কান্না! ৩০ মিনিটেরও বেশি সময় কেঁদেছে।  একটু স্থির হওয়ার পর অনেকক্ষন গল্প করলেন মোশাররফ। ওই ভক্তর বাড়ি নদীয়াতে, থাকে কলকাতায়। পড়াশোনা শেষ করে এখন ব্যবসা করছে। মোশাররফ করিম এর এমন কোনো নাটক নাই যে তিনি দেখেননি। কলকাতায় প্রিয় অভিনেতাকে নিয়ে ফ্যান ক্লাব খুলেছেন। সেই ক্লাবের সদস্য বাড়ানোর মোশাররফের নাটক সবাইকে দেখায়। মোশাররফ এর সাথে তার যোগাযোগ এখনো রয়েছে।

পূর্ণিমা
পূর্ণিমার পাগল ভক্তেরও তো অভাব নেই। যখন সিনেমায় অভিনয় করতেন । তখন সংখ্যাটা বেশি ছিল। এখন তুলনামূলক ভাবে কম বলা যায়। তারও এক পাগল ভক্ত রয়েছে। আরিফিন আল ইমরান নামের একটি ছেলে। ওকে পূর্ণিমা সামনাসামনি কখনো দেখেনি। ফেসবুকে কিছুটা পরিচয়। তাই বলে পূর্ণিমার সাথে সারাক্ষন আড্ডা দিতে তিনি আগ্রহী নন। কিন্তু তার সৌন্দর্য বর্ণনা করে এমন সব কবিতা পাঠায়, পূর্ণিমাই উল্টো তার সঙ্গে কথা বলতে চায়। পূর্ণিমাকে নিয়ে অনুগল্প লেখে সে। তার প্রশংসা করে বিভিন্ন পেজে লেখাও দেয়। মাঝে মধ্যে অন্যদের সঙ্গে ঝগড়াও করে তাকে নিয়ে। অথচ পূর্ণিামার কাছে কখনো ধরা দেয় না। তার লেখা পূর্ণিমার এত ভালো লাগে যে প্রায়ই ফেসবুক ওয়ালে শেয়ার করে। পূর্ণিমা তার সঙ্গে বেশ কয়েকবার দেখা করতে চেয়েছে। ব্যাক্তিগত নাম্বার দিয়েছে। কিন্তু কখনো ওই ছেলে কল দেয়নি। পূর্ণিমা অপেক্ষায় থাকে। অপেক্ষায় থাকে নিত্যনতুন কোন প্রশংসা পাওয়ার।

তাহসান
তার এক ভক্ত তার জন্য চাকরি ছেড়ে চলে আসছিল। ‘ইউনিক্লো’ নামের একটা পোষাকের ফ্যাশন হাউসের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর তাহসান। ‘ইউনিক্লো’ একটা অফার দেয় নির্দিষ্ট পরিমাণ পোশাক কিনলে তাহসানের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ রয়েছে। এমন ২০ জনের সঙ্গে তাহসান দেখা করে। তাদের সবাই তাহসানের ফ্যান। তাদের সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছেলেন। এর জন্য একজন অন্যমনস্ক হয়ে বসে আছে। তাহসান অনেকক্ষন ধরে লক্ষ্য করলো ব্যাপারটা। জিজ্ঞাস করলো আপনার কি মন খারাপ?  জানতে পারলেন ঢাকার বাহিরে একটা চাকরি করতেন তিনি । দেখা করতে আসবে কিন্তু ছুটি না দেয়াতে চাকরিই ছেড়ে দিয়ে এসেছে।

আরিফিন শুভ
শুভর এই ভক্ত মাত্র ক্লাস সেভেনে পড়ে। কী রোগে যেন অসুস্থ। খাওয়া-দাওয়া সব বন্ধ। ডাক্তার জানালেন এরকম চললে অবস্থা ক্রমশই খারাপ হবে। তার পরিবার জানে সে শুভর বিশাল বড় ভক্ত। অনেক কষ্টে শুভর ফোন নাম্বার জোগাড় করল। শুভকে সব কথা বুঝিয়ে বলার পর শুভ ফোন দিল। খাওয়ার জন্য অনুরোধ করে। মেয়েটি শত অনিচ্ছা সত্বেও খায়। মেয়েটি সুস্থ হয়ে উঠে।

বিদ্যা সিনহা মিম
মিমের কপালে জুটলো ভয়ানক এক ভক্ত। সাধারণত মেয়ে তারকাদের ছেলে ফ্যানই বেশি হয়। তার বেলায় নাকি উল্টো হয়। মেয়েদের সংখ্যাই বেশি। গত জন্মদিনে একজনে বিশাল বড় একটি কেক পাঠিয়েছে। নাম লেখেনি, কেকের ওপর লেখা ‘হ্যাপি বার্থ ডে, তোমার ছোট বোন’। একজন আবার কিছুদিন আগে তার দৃষ্টি আকর্ষনের জন্য তার হাত কেটে মিমের নাম লিখে টুইটারে পোষ্ট করেছে। যা দেখে রীতিমতো বিরক্ত মিম। অন্বেষা নামের সেই মেয়ের খোজ নিতে হলো মিমেরই। খোজ নিয়ে তার সাথে কথা বলে জানা গেল সে নাকি তার প্রতি খুবই দুর্বল। সব সময় বোনের মত তার কেয়ার পেতে চায়। মিমও তার আবদার ফেলতে পারেনি। নিয়মিতই খোঁজ খবর নেয়।

বাংলাদেশ সময়: ১১৫৪ ঘণ্টা, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৭
লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/পিকে

Scroll to Top