ঢাবিতে আব্দুল জব্বারের দ্বিতীয় জানাজা, দাফন মিরপুরে

স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের অন্যতম শব্দ সৈনিক ও জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী আব্দুল জব্বারের মরদেহের দ্বিতীয় জানাজা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে দাফনের লক্ষে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তার মরদেহ নেওয়া হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে ২টার দিকে এ জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় ঢাবির বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। এর আগে রাজধানী আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ বেতার ভননে তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

এদিকে, সকাল ১১টার পরে তার মরদেহ শহীদ মিনারে রাখা হয়। সেখানে সর্বস্তরের মানুষ প্রিয় শিল্পীকে ফুল দিয়ে ও চোখের জলে শেষ বিদায় জানান। পরে তার মরদেহে ঢাকা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে \’গার্ড অব অনার\’ দেওয়া হয়।

গত বুধবার ( ৩০ আগস্ট) সকাল ৯টা ২০ মিনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে তিনি মারা যান। ৭৯ বছর বয়সী এ শিল্পী কিডনি, হার্ট, প্রস্টেট, ডায়াবেটিসসহ নানা জটিলতায় ভুগছিলেন। গত ২৬ আগস্ট সকালে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ তাকে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) স্থানান্তর করে।

‘ওরে নীল দরিয়া, আমায় দে রে দে ছাড়িয়া’, ‘তুমি কি দেখেছ কভু জীবনের পরাজয়’, ‘সালাম সালাম হাজার সালাম’ ও ‘জয় বাংলা বাংলার জয়’ ‘পীচঢালা এই পথটারে ভালোবেসেছি’সহ অনেক কালজয়ী গানের গায়ক আবদুল জব্বার।

স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় আবদুল জব্বার হারমোনিয়াম গলায় ঝুলিয়ে কলকাতার বিভিন্ন ক্যাম্পে গিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্বুদ্ধ করেন। মুক্তিযুদ্ধকালে তিনি ভারতের বিভিন্ন স্থানে গণসঙ্গীত গেয়ে পাওয়া প্রায় ১২ লাখ টাকা স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের ত্রাণ তহবিলে দান করেন। ১৯৭১ সালে ভারতের প্রখ্যাত কণ্ঠশিল্পী হেমন্ত মুখোপাধ্যায়কে সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য জনমত তৈরিতেও নিরলসভাবে কাজ করেন তিনি।

১৯৩৮ সালের ৭ নভেম্বর বৃহত্তর কুষ্টিয়া জেলায় জন্মগ্রহণ করেন আবদুল জব্বার। সঙ্গীতকে ভালোবেসেই তিনি জীবনের পথে চলছেন। ১৯৫৮ সালে বেতারে গান করেন। ১৯৬২ সালে বংলাদেশ বেতার ও ১৯৬৪ সালে বিটিভির তালিকাভুক্ত শিল্পী হন। ১৯৬৮ সালে ‘এতটুকু আশা’ ছবিতে সত্য সাহার সুরে তার গাওয়া ‘তুমি কি দেখেছ কভু জীবনের পরাজয়’ গানটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। তিনি বাংলাদেশ সরকার প্রদত্ত তিনটি সর্বোচ্চ পুরস্কার- বঙ্গবন্ধু স্বর্ণপদক (১৯৭৩), একুশে পদক (১৯৮০) ও স্বাধীনতা পুরস্কারে (১৯৯৬) ভূষিত হন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২৮ ঘণ্টা, ৩১ আগস্ট ২০১৭
লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/এসডিএম

Scroll to Top