নাজমুন মুনিরা ন্যান্সি, শ্রোতাদের কাছে বেশ জনপ্রিয় এ শিল্পী তার গানের স্বকীয়তা দিয়ে। সাম্প্রতিক সময়েও বেশ কিছু গান শ্রোতামহলে প্রশংসা কুড়িয়েছে। এবারের ঈদেও তার গান প্রকাশ হচ্ছে। বর্তমান ব্যস্ততা ও সমসাময়িক বিভিন্ন প্রসঙ্গ নিয়ে আজকের ‘হ্যালো…’ বিভাগে কথা বলেছেন তিনি।
ঈদে শ্রোতারা আপনার কণ্ঠের কয়টি গান পাচ্ছেন?গান করেছি বেশ কিছু। তবে কোনগুলো ঈদে আসবে এ বিষয়ে আমি জানি না। গানগুলো কি ঈদ উপলক্ষ্যে বানানো?
গান আসলে কোনো উপলক্ষ্য করে হয় না। আমরা কাজ করলাম, দেখা গেল প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান সময় মতো শেষ করতে পারেনি। তাই সেটা পরে প্রকাশ করা হচ্ছে। তখন কিছু করার থাকে না। সিনেমার পাশাপাশি নাটকেও এখন গানের ব্যবহার হচ্ছে। বিষয়টি কীভাবে দেখছেন?
নাটকে ইদানিং অনেক গান ব্যবহার হচ্ছে। এটা অবশ্যই পজিটিভ দিক। তাতে করে শ্রোতাদের কাছে নাটকের মাধ্যমেও গান পৌঁছে যাচ্ছে। আমরা যারা কাজ করছি প্রত্যেকেরই গান কিন্তু কমবেশি হিট হচ্ছে। তাছাড়া সিনেমায়ও এখন গানগুলো বেশ হিট করছে। গত কয়েক বছর অনেক সাড়া ফেলেছে সিনেমার গান।
তাতে কি শিল্পীদের ব্যস্ততা বেড়েছে?
ব্যস্ততা তো অবশ্যই বেড়েছে। তাছাড়া গান এখন নাটকের প্রয়োজনেই গাওয়া হচ্ছে। তাতে করে আরও একটি মাধ্যম বেড়ে গেলো গান প্রকাশের। এদিকে গানের এখন ফরম্যাট চেঞ্জ হয়েছে। আগে অ্যালবাম হিসেবে গান আসতো, আর এখন অনলাইনে আসছে ইউটিউব-ফেসবুকের মাধ্যমে। গান প্রকাশের সংখ্যা আরও বেড়েছে। সেক্ষেত্রে শিল্পীদেরও ব্যস্ততা বাড়বে, এটাই স্বাভাবিক। নাটক বা সিনেমা যেখানেই আসুক, আসছে তো। গান দর্শক-শ্রোতারাও নাটক সিনেমার মাধ্যমেই শুনছেন। তাদের সাড়া অবশ্যই আছে, শ্রোতারা শুনছে বলেই কিন্তু এসব হচ্ছে। গানের বাজার একেবারে দমে যায়নি।
অনেক হচ্ছে ঠিক, কিন্তু সাড়া ফেলছে কম। এমনটাও শোনা যায়…
সাড়া ফেলছে না, কথাটা ঠিক নয়। এখনকার সময়ে যারা গান করছেন প্রত্যেকেই বেশ সাড়া পাচ্ছেন। এখন আর্টিস্টের সংখ্যাও বেড়েছে। অনেক আর্টিস্ট নিয়মিত গান গাইছেন। কিছুদিন আগেও ইত্যাদির একটা গান বেশ ট্রেন্ডিংয়ে ছিল। তবে অনেক ভালো গান ভাইরাল হয় না বলে আলোচনায় থাকে না। অনেক ভালো গান আছে যেগুলো রাস্তার মোড়ে মোড়ে বাজানোর মতো নয়। তাই অনেকের কাছে এমন মনে হতে পারে গান হাইপ তুলছে না, বা সাড়া ফেলছে না।
ভাইরাল প্রসঙ্গে কী বলবেন?
ভাইরাল হওয়ার ব্যাপারটা একেবারেই আলাদা। ভাইরাল হতেই হবে এমনটা নয় কিন্তু। গানটা শ্রোতাপ্রিয় হোক এটা চাইব। অনেক ভালো গান আছে যে ভাইরাল হয় না। কিন্তু মানুষ অনেক বছর ধরেই শুনে। আমি এভাবেই হিসেব করব যে, একটি গান আসলে কত বছর মানুষ শুনল। পুরনো গানটি স্টেজে দর্শক-শ্রোতারা শুনতে চায় কিনা। তাহলেই সেই গান শ্রোতাপ্রিয় বা জনপ্রিয়। একটা গান ভাইরাল হলো তারপর হুট করেই কয়েকমাস পর আর কেউ শুনল না, এভাবে গান হয় না। ভাইরাল হবার চাইতে শ্রোতাপ্রিয় হওয়াটা জরুরি।
ভিউ চর্চা বিষয়টি কীভাবে দেখেন?
প্রত্যেক ক্ষেত্রেই আর্থিক একটা ব্যাপার থাকে। যারা অর্থ লগ্নি করেন তারা তো চাইবেন তাদের অর্থ ফেরত তুলতে। সেক্ষেত্রে তাদের ভিউ দরকার আছে। ভিউ চাওয়াটা খারাপ কিছু নয়। যারা ভিউয়ের উপর ভিত্তি করে ইনভেস্ট করে তাদের ভিউ চাওয়াটাই স্বাভাবিক। তবে ভিউ দিয়ে শিল্প ও শিল্পীকে বিচারের পক্ষে আমি নই। আমাদের দেশে অনেক প্রথিতযশা শিল্পী আছেন, তাদের গান খুঁজে দেখেন, তেমন ভিউ নেই। তাহলে তাদেরকে কী শিল্পী হিসেবে আপনি মূল্যায়ন করবেন না? তাই বলছি, ভিউ ব্যবসার ক্ষেত্রে জরুরী, তবে শিল্পীর মান বিচারে নয়।