বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি থেকে চিত্রনায়ক জায়েদ খানের সদস্যপদ বাতিল করেছে সংগঠনটির বর্তমান কমিটি। এ কারণে আসন্ন নির্বাচনে ভোট দিতে পারবেন না তিনি। এবারের বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন জায়েদ। পাশাপাশি সমিতির সাধারণ সম্পাদক নিপুণকেও রীতিমতো ধুয়ে দিয়েছেন এই অভিনেতা।
তার সদস্যপদ বাতিলকে অবৈধ বলে প্রতিবাদ করেছেন জায়েদ খান। তিনি বলেন, আমি সমিতিকে নিয়ে কোনো বাজে মন্তব্য করিনি। আমি ব্যক্তি নিপুণকে বলেছি। এখনো বলছি, তিনি একজন নির্লজ্জ মানুষ। পরাজিত হয়েও এতদিন সাধারণ সম্পাদকের পদ দখল করে ছিলেন। এ কারণেই আমি তার বিরুদ্ধে বলেছি। এটি সমিতির গঠনতন্ত্রের মধ্যে পড়ে না।
জায়েদ খান বলেন, আমার সদস্যপদ বাতিলের জন্য মাত্র একটি চিঠি দিয়েছে সমিতি। সেটিও অবৈধ মনে করি। কারণ চিঠিটিও নিপুণ স্বাক্ষরিত ছিল। যিনি নির্বাচিতই নয়, সে আমাকে চিঠি দিতে পারে না। তাছাড়া এই পদের মামলা এখনো সুপ্রিমকোর্টে ঝুলে আছে। তারপরও আমি চিঠির উত্তর দিয়েছি। আমার চিঠি পাওয়ার পর চূড়ান্ত বাতিলের সিদ্ধান্ত নিতে আরও দুটি চিঠি সমিতির আমাকে দিতে হবে; কিন্তু কোনো চিঠি দেয়নি।
এই অভিনেতা বলেন, শুনলাম- পিকনিকে ইসি কমিটির সিদ্ধান্তের লিখিত চিঠি পাঠ করেই আমার সদস্য বাতিল করে দিয়েছে; কিন্তু সেখানে সাধারণ সদস্যদের হাত তুলে মতামত লাগে। সেটিও তো দেখলাম না। বড় কথা, পিকনিকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মঞ্চে এভাবে দ্বিবার্ষিক সভা করার আগে সমিতির কোনো কমিটির বেলায় দেখিনি। পুরো প্রক্রিয়াটিই অবৈধ।
এর আগে পরপর দুইবার সমিতির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। শিল্পী সমিতির সদস্যপদই বাতিল, ভোটও প্রয়োগ করতে পারবে না। খারাপ লাগছে কিনা- জানতে চাইলে জায়েদ খান বলেন, খারাপ লাগার কিছু নেই। আমি সদস্যদের ভোটে নির্বাচিত হয়েও পদে বসতে পারিনি, এর চাইতে তো খারাপের কিছু হতে পারে না। অবৈধ ব্যক্তির অবৈধ সিদ্ধান্তে আমি বিচলিত নই।
এদিকে সদস্যপদ বাতিল নিয়ে জায়েদ খানের করা অভিযোগ প্রসঙ্গে কথা বলেছেন নিপুণ। এ সময় জায়েদ খানের বিরুদ্ধেও পাল্টা অভিযোগ তুলেছেন তিনি।
নিপুণ বলেন, আমি তো সমিতির সাধারণ সম্পাদক। সমিতিকে জড়িয়ে কুরুচিপূর্ণ ভাষায় আমার বিরুদ্ধে একাধিকবার বক্তব্য দিয়েছেন জায়েদ খান। এভাবে প্রকাশ্যে মিডিয়ার সামনে আমাকে নিয়ে বলাতে সামাজিকভাবে আমার মর্যাদা ক্ষুণ্ন হয়েছে। এতে সমিতিকে ছোট করা নয়?
তিনি বলছেন, সমিতিকে ছোট করে কিছু বলেননি। আমার কাছে সব তথ্যই সংগ্রহ আছে। তার বিরুদ্ধে যা যা করা হয়েছে, সমিতির গঠনতন্ত্র অনুযায়ীই করা হয়েছে। এর বেশি আর বলতে চাই না।
জানা গেছে, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ২০২৪-২৬ মেয়াদের নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল আগামী ১৯ এপ্রিল। তবে আট দিন পিছিয়ে আগামী ২৭ এপ্রিল নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। সোমবার (৪ মার্চ) নির্বাচন কমিশনের এক মিটিংয়ে এ সিদ্ধান্ত হয়।
এদিকে ধারাবাহিকভাবে সমিতির সাধারণ সম্পাদক নিপুণ সম্পর্কে নেতিবাচক মন্তব্য করার অভিযোগ তুলে ভোটের আগে শিল্পী সমিতি থেকে সাবেক সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খানের সদস্যপদ বাতিল করা হয়।
২ মার্চ বাংলাদেশ শিল্পী সমিতির পিকনিক মঞ্চে দ্বিবার্ষিক সভায় সাধারণ সদস্যদের উপস্থিতিতে জায়েদ খানের সদস্যপদ বাতিল অনুমোদন হয়। তার আগে ২০২৩ সালের ২ এপ্রিল সমিতির কার্যকরী পরিষদের মিটিংয়ে সদস্যপদ বাতিলের এ সিদ্ধান্ত আসে। প্রায় ১৮ বছর ধরে সমিতির সদস্য ছিলেন জায়েদ খান।