জনপ্রিয় চিত্রনায়ক ও ঢাকা-১৭ আসনের সংসদ সদস্য আকবর হোসেন পাঠান ফারুক মারা গেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। বাংলা চলচ্চিত্রের মিয়াভাই খ্যাত এ নায়ক সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুকের ছেলে রওশন হোসেন পাঠান শরৎ দেশের একটি শীর্ষ স্থানীয় পত্রিকাকে বলেন, বাংলাদেশ সময় সোমবার (১৫ মে) সকাল ১০টার দিকে মারা গেছেন বাবা। তার মরদেহ আগামীকাল (মঙ্গলবার) দেশে আনা হবে।
দীর্ঘ সময় ধরে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন ফারুক। এর মধ্যে দুবার তার মৃত্যুর গুজব ছড়ায়। নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ২০২১ সালের মার্চের প্রথম সপ্তাহে সিঙ্গাপুরে যান ফারুক। তখন রক্তে সংক্রমণ ধরা পড়লে মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। সিঙ্গাপুরে প্রায় চার মাস ধরে আইসিইউতে ছিলেন ফারুক। শারীরিক অবস্থার উন্নতি হওয়ায় মাস ছয়েক আগে তাকে কেবিনে নেয়া হয়। এরপর থেকে সেখানেই চিকিৎসা নিচ্ছিলেন ফারুক।
কিংবদন্তি এ অভিনেতা প্রায় পাঁচ দশক ধরে বড় পর্দা মাতিয়েছেন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে ঢাকা-১৭ আসনে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি।
১৯৪৮ সালের ১৮ আগস্ট মানিকগঞ্জের সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন চিত্রনায়ক ফারুক। মানিকগঞ্জে জন্ম হলেও তার শৈশব, কৈশোর ও যৌবনকাল কেটেছে পুরান ঢাকায়। ১৯৭১ সালে এইচ আকবর পরিচালিত ‘জলছবি’তে অভিনয়ের মধ্যদিয়ে বাংলা চলচ্চিত্রে ফারুকের আত্মপ্রকাশ ঘটে। প্রথম সিনেমায় তার বিপরীতে ছিলেন কবরী। এরপর ১৯৭৩ সালে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র খান আতাউর রহমানের পরিচালনায় ‘আবার তোরা মানুষ হ’ ও ১৯৭৪ সালে নারায়ণ ঘোষ মিতার ‘আলোর মিছিল’ – এ দুটি সিনেমায় পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি।
১৯৭৫ সালে তার অভিনীত \’সুজন সখী\’ ও \’লাঠিয়াল\’ সিনেমা দুটি ব্যাপক জনপ্রিয় ও ব্যবসা সফল হয়। ওই বছর \’লাঠিয়াল\’র জন্য তিনি সেরা-পার্শ্ব অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান। ১৯৭৬ সালে \’সূর্যগ্রহণ\’ ও \’নয়নমণি\’, ১৯৭৮ সালে শহীদুল্লাহ কায়সারের উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত আব্দুল্লাহ আল মামুনের \’সারেং বৌ\’, আমজাদ হোসেনের \’গোলাপী এখন ট্রেনে\’সহ বেশকিছু সিনেমায় \’মিয়া ভাই\’খ্যাত চিত্রনায়ক ফারুকের অভিনয় প্রশংসিত হয়। ২০১৬ সালে চলচ্চিত্রে আজীবন সম্মাননা অর্জন করেন এ অভিনেতা। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের ইতিহাসে তিনি সবচেয়ে সফল ও সেরা নায়কদের একজন হিসেবে স্বীকৃত।