রাজ মাল্টিমিডিয়ার কর্ণধার কথিত চলচ্চিত্র প্রযোজক নজরুল ইসলাম রাজ পরীমনিকে সিনেমার জগতে নিয়ে আসেন। তবে সিনেমায় নাম লেখানোর আগে দীর্ঘদিন তার কাছেই থাকতেন পরীমনি। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর রাজ নিজের জেলার পরিচয়ে বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। র্যাব সূত্র এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে।
র্যাব জানিয়েছে, একেক সময় একেক পরিচয়ে চলাফেরা করেন পরীমনির গডফাদার হিসেবে পরিচিত নজরুল ইসলাম রাজ। কখনও চিত্রপরিচালক, কখনও ব্যবসায়ী আবার কখনও রাজনীতিবিদ। প্রতারণার মাধ্যমে তিনি বনে গেছেন অঢেল টাকার মালিক।
গত বুধবার রাতে বনানীর বাসা থেকে ঢাকাই সিনেমার আলোচিত চিত্রনায়িকা পরীমনিকে বিপুল পরিমাণ মাদকসহ গ্রেফতার করে র্যাব। পরে তাকে র্যাব সদর দপ্তরে নেওয়া হয়।
ঐ দিনই র্যাব পরীমনি ও পিয়াসার গডফাদার হিসেবে পরিচিত রাজকে গ্রেফতার করেছে। রাজ তার প্রতারণা ও পর্নো ব্যবসায় দুই তরুণীকে ব্যবহার করে আসছেন। এদের একজনের ডাক নাম সেমি এবং অপরজন কাঁকন। দুজনই তার সার্বক্ষণিক সঙ্গী। এ দুই তরুণীকে দিয়ে তিনি ব্ল্যাকমেইলিংয়ের কাজ করতেন।
পাশ্চাত্য পোশাকে অভ্যস্ত সেমি এবং কাঁকনকে নিয়ে রাজ হাজির হতেন সরকারি কর্মকর্তাদের ফ্ল্যাটে অথবা বাসায়। অনেকেই একপর্যায়ে তাদের প্রেমে পড়ে যেতেন। যেকোনো মূল্যে তাদের সান্নিধ্য পেতে চাইতেন।
এমন দুর্বলতার সুযোগ কাজে লাগিয়ে রাজ সরকারি কাজ বা তদবিরের টোপ ফেলতেন। আর এই টোপ কোটি টাকা ঘুসের চেয়ে দ্রুততার সঙ্গে তার কাজ হয়ে যেত। এছাড়া এ দুই তরুণীকে ব্যবহার করে তিনি কাছাকাছি পৌঁছে যান ক্যাসিনো সম্রাট ইসমাইল চৌধুরীর।
ঠিকাদারি কাজের ডন হিসেবে পরিচিত জিকে শামীমের সঙ্গেও গড়ে ওঠে তার সখ্য। সম্প্রতি তিনি জিকে শামীমকে কারাগারে বিশেষ সুবিধা পাইয়ে দিতে তদবির করছিলেন রাজ। শামীমের বোন সুবর্ণা মোস্তাফার সঙ্গে তিনি প্রতি সপ্তাহে করেন নানা বিষয়ে শলা-পরামর্শ।
সন্ধান পাওয়া গেছে রাজের বেশ কয়েকটি ব্যাংক হিসাবেরও। এর মধ্যে ১৪টি হিসাবে ৯ কোটি টাকা লেনদেনের তথ্য পেয়েছে র্যাব। অবশ্য তার হাতে ব্যাংকের বাইরেও বিপুল পরিমাণ নগদ টাকা রয়েছে।