ঢাকা বোট ক্লাবে পরীমণির সেই ভিডিও ভাইরাল (ভিডিও সহ)

রাজধানীর ঢাকা বোট ক্লাবে চিত্রনায়িকা পরীমণির সেই মধ্যরাতের ঘটনার আরেকটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। এ ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, পরীমণি চিৎকার-চেঁচামেচি করছেন। দুর্ব্যবহার করছেন ব্যবসায়ী নাসির ইউ মাহমুদের সঙ্গে। তবে উল্টো নাসিরকে ক্লাব থেকে বের হয়ে যেতে বলেন। ভাইরাল এ ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখছে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা। অন্যদিকে, দুবাই, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুরে ভালো চাকরির কথা বলে তুহিন সিদ্দিক অমির সিন্ডিকেট শত শত মানুষকে বিভিন্ন দেশে পাচার করেছে বলে জানিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত সংস্থা-সিআইডি। এদিকে ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, ক্লাবে ঢুকেই বারের সামনে চেয়ারে বসে তার সঙ্গীদের নিয়ে মদ পান করছেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন পরীমণির মেকআপ আর্টিস্ট জাহিদ হোসেন জিমি এবং কারাবন্দী অমি।

এ সময় দূর থেকে বোট ক্লাবের পরিচালনা পরিষদের সদস্য নাসির ইউ মাহমুদ তাকে মদ পান করতে বারণ করেন। তখন পরীমণি একটি বোতল নিতে চাইলে নাসির ইউ মাহমুদ বলেন, আপনি কোনো বিদেশি মদ নিতে পারবেন না। এখানেও তাকে নিবৃত করার চেষ্টা করেন পরিচালনা পরিষদের সদস্য। জানা গেছে, পরীমণি মদ পানে বাধা পেয়েই বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। এরপর ক্ষুব্ধ পরীমণি ক্লাবে ভাঙচুর চালান। গ্লাস, প্লেট ভাঙেন এবং নাসির ইউ মাহমুদের দিকে বোতলও ছুড়ে মারেন।

একপর্যায়ে নাসির মাহমুদ ক্ষুব্ধ হয়ে পরীমণিকে চড় মেরে বসেন। পরে পরীমণিও সংবাদ সম্মেলনে চড় মারার বিষয়টি সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন। তবে চিত্রজগতের অনেকেই বলছেন, চড় মারার ক্ষোভ থেকেই সব কিছু করেছেন পরীমণি। প্রসঙ্গত, গত ৯ জুন ঢাকা বোট ক্লাবে যৌন হেনস্তার অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেন চিত্রনায়িকা পরীমণি। পরদিন মামলা করেন সাভার থানায়। পুলিশ ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে ব্যবসায়ী নাসির ইউ মাহমুদসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করে। তবে এরপরই একের পর এক বেড়িয়ে আসতে থাকে ঢাকার বিভিন্ন ক্লাবে পরীমণির উচ্ছৃঙ্খল আচরণের ফিরিস্তি।

বিদেশে অর্থ পাচার করেছে অমি : দুবাই, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুরে ভালো চাকরির কথা বলে শত শত মানুষকে বিভিন্ন দেশে পাচার করেছে তুহিন সিদ্দিক অমির সিন্ডিকেট। এভাবে তারা কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। এ টাকা দিয়েই বিলাসী জীবনযাপন করে আসছিলেন অমি ও তার সহযোগীরা। গতকাল রাজধানীর মালিবাগে সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব জানান সংস্থাটির অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ ওমর ফারুক। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিশেষ পুলিশ সুপার খালিদুল হক হাওলাদার ও মুক্তা ধর। গত ১৯ জুন রাজধানীর দক্ষিণখান থানায় অমি ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে মানব পাচারের অভিযোগে মামলা করা হয়।

পরে মামলাটি সিআইডিতে স্থানান্তর করা হয়। এ মামলায় সিআইডি এখন পর্যন্ত ৯ জনকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতাররা হলেন- জসিম উদ্দিন, সালাউদ্দিন, মুসা, রাকিবুল ইসলাম রানা, গোলাপ হোসেন বুলবুল, জাকির হোসেন, নাজমুল, আলম ও শাহজাহান সরকার। সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ ওমর ফারুক জানান, গত কয়েক দিন ঢাকা ও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অভিযান চালিয়ে মানব পাচার চক্রের ওই ৯ সদস্যকে গ্রেফতার করেছেন তারা। এই চক্রের হোতা তুহিন সিদ্দিক অমি। গ্রেফতারদের কাছ থেকে ৩৯৫টি পাসপোর্ট, অমির চারটি বিলাস বহুল গাড়ি, ২২টি হার্ড ডিস্ক, সম্পত্তির দলিল, ক্রেডিট কার্ড, অলিখিত স্ট্যাম্প, বিভিন্ন ব্যাংকের চেক বই, ভিসা কার্ড, পেনড্রাইভ ও মোবাইল সেট জব্দ করা হয়।

তিনি বলেন, অমি ও তার সহযোগীরা মানুষকে অধিক বেতনে বিদেশে ভালো চাকরির লোভ দেখিয়ে ভিকটিমদের কাছ থেকে বিপুল অংকের অর্থ আদায় করে আসছিল। কিন্তু তারা ভুক্তভোগীদের চাকরি না দিয়ে বিভিন্ন দেশে পাচার করে দেয়। এ ছাড়া তারা অনেক নিরীহ লোকদের দুবাই, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুরসহ বিভিন্ন দেশে পাঠানোর কথা বলে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। চক্রটি ভুক্তভোগীদের যথাযথ পদ্ধতিতে বিদেশে পাঠায়নি বলে এখন তারা ওই দেশে কাজ পাচ্ছে না। ফলে তারা মানবেতর জীবনযাপন করছে। এদিকে অমি ও তার সহযোগীরা স্বল্প সময়ের মধ্যে নামে-বেনামে বিপুল পরিমাণ সম্পদের মালিক হয়েছেন।

ভিডিও দেখতে ক্লিক করুন

Scroll to Top