দক্ষিণ এশিয়ার রাষ্ট্র ভারতের পশ্চিমবঙ্গের প্রখ্যাত কবি শঙ্খ ঘোষ আর নেই। মহামারি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আজ বুধবার (২১ এপ্রিল) সকালে মারা যান তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯০ বছর।
জানা গেছে, গত ১৪ এপ্রিল কবি শঙ্খ ঘোষের করোনা শনাক্ত হয়। এমনিতেই বার্ধক্যজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন কবি, তার মধ্যে করোনা শারীরিকভাবে দুর্বল করে দিয়েছিল তাকে।
করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর নিজ বাড়িতেই চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। মঙ্গলবার রাতে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। বুধবার ভেন্টিলেটরে দেওয়ার চেষ্টাও হয়। কিন্তু চিকিৎসকদের সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে চিরতরে চলে গেলেন তিনি।
কবি শঙ্খ ঘোষের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং দুই বাংলার জনপ্রিয় কথা সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় ও সমরেশ মজুমদারসহ অনেকেই।
দীর্ঘ কর্মজীবনে শঙ্খ ঘোষ দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়, ইউনিভার্সিটি অব আইওয়া এবং বিশ্বভারতীর মতো প্রতিষ্ঠানে অধ্যাপনা করেছেন। ১৯৯২ সালে তিনি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবসরে যান।
সাহিত্য জীবনে একাধিক সম্মানে ভূষিত হয়েছেন শঙ্খ ঘোষ। ১৯৭৭ সালে ‘বাবরের প্রার্থনা’ কাব্যগ্রন্থটির জন্য তিনি ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ‘সাহিত্য একাডেমি’ সাহিত্য পুরস্কার পান। ১৯৯৯ সালে কন্নড় ভাষা থেকে বাংলায় ‘রক্তকল্যাণ’ নাটকটি অনুবাদ করে ফের সাহিত্য একাডেমি পুরস্কার পান তিনি। এছাড়াও রবীন্দ্র পুরস্কার, সরস্বতী সম্মান, জ্ঞানপীঠ পুরস্কার পেয়েছেন। ২০১১ সালে তাকে পদ্মভূষণে সম্মানিত করে ভারতের তৎকালীন সরকার।
শঙ্খ ঘোষের আসল নাম চিত্তপ্রিয় ঘোষ। তার বাবা মনীন্দ্রকুমার ঘোষ এবং মা অমলা ঘোষ। ১৯৩২ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের বর্তমান চাঁদপুর জেলায় তার জন্ম। বংশানুক্রমিকভাবে পৈত্রিক বাড়ি বরিশালের বানারিপাড়ায়। তবে শঙ্খ ঘোষ বড় হয়েছেন পাবনায়। বাবার কর্মস্থল হওয়ায় তিনি বেশ কয়েক বছর পাবনায় অবস্থান করেন এবং সেখানকার চন্দ্রপ্রভা বিদ্যাপীঠ থেকে ম্যাট্রিকুলেশন পাস করেন। ১৯৫১ সালে প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে বাংলায় কলা বিভাগে স্নাতক এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন।