করোনা: ফের সংকটে বলিউড

বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় ভারতে চলছে মহামারি করোনার ভয়ঙ্কর তাণ্ডব। দেশটিতে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। করোনাকালের মধ্যেই অনেকটা স্বাভাবিক ছন্দে ফিরেছিল মুম্বাইয়ের বিনোদন ইন্ডাস্ট্রি। মহারাষ্ট্রে আবার করোনার সংক্রমণ বাড়ছে। এ কারণে মহারাষ্ট্র সরকার ‘ব্রেক দ্য চেইন’ অভিযান শুরু করেছে। ১৩ এপ্রিল রাতে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ভব ঠাকরে ১৫ দিনের জন্য রাজ্যজুড়ে লকডাউন ঘোষণা করেছেন। ১৪ এপ্রিল রাত আটটা থেকে আগামী ১ মে সকাল সাতটা পর্যন্ত লকডাউন পালন করা হবে।

১৫ দিনের লকডাউনে আবার অন্ধকার নেমে এসেছে মুম্বাইয়ের বিনোদনজগতে। এই কদিন সিনেমা, ধারাবাহিক, ওয়েব সিরিজ, বিজ্ঞাপন ফিল্মের শুটিং বন্ধ থাকবে। ১৫ দিন মহারাষ্ট্রের সব প্রেক্ষাগৃহও বন্ধ থাকবে। তবে যেসব ছবি বা ওয়েব সিরিজের শুটিং অন্যান্য রাজ্যে প্রথম থেকেই নির্ধারিত ছিল, সেসব শুটিং চলবে। ফেডারেশন অব ওয়েস্টার্ন ইন্ডিয়া সিনে এমপ্লয়িজের (এফডব্লুআইসিই) প্রধান বি এন তিওয়ারি বলেছেন, ‘সরকার সাধারণ মানুষের কথা ভেবে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু বিনোদনজগতের এতে কোনো মঙ্গল হবে না। কারণ শুটিং বন্ধ হলে প্রচুর আর্থিক ক্ষতি হবে।’

ইন্ডিয়ান ফিল্ম অ্যান্ড টিভি প্রোডিউসার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান জেডি মোজিটিয়া বলেছেন, ‘এখনকার নিয়ম অনুযায়ী শুটিং বন্ধ থাকবে। আমরাও একপ্রকার প্রথম সারির যোদ্ধা হিসেবে কাজ করছি। কারণ, আমরা গৃহবন্দী মানুষের বিনোদনের ব্যবস্থা করছি। আমরা মানসিক অবসাদ থেকে সবাইকে দূরে রাখার চেষ্টা করছি। আমরা সরকারের নিয়ম নিশ্চয়ই মানব।’

লকডাউনের কারণে ‘পাঠান’, ‘গাঙ্গুবাই কাঠিয়াবাড়ি’, ‘টাইগার থ্রি’, ‘ময়দান’সহ অনেক ছবির শুটিং বন্ধ হয়ে গেল। ‘গাঙ্গুবাই কাঠিয়াবাড়ি’ ছবিতে আলিয়া ভাটের মাত্র এক দিনের শুটিং বাকি আছে। ২০২০ সালের মতো এবারও বিনোদনজগতকে আর্থিক মন্দার মুখ দেখতে হচ্ছে। গত বছরের আর্থিক ক্ষতি সামলে ওঠার আগে আবার একটি বড় ধাক্কা এল ভারতীয় বিনোদনজগতের জন্য। করোনার মারা গেছেন প্রবীণ বলিউড অভিনেতা কিশোর নন্দলস্কর

বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় ভারতে চলছে মহামারি করোনার ভয়ঙ্কর তাণ্ডব। দেশটিতে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। বলিউডে আবারও করোনার মরণ থাবা। এবার প্রাণঘাতী করোনায় সংক্রমিত হয়ে মারা গেছেন বর্ষীয়ান অভিনেতা কিশোর নন্দলস্কর। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮১ বছর। তিনি সেই অর্থে জনপ্রিয় তারকা না হলেও বলিউডের পরিচিত মুখ। কয়েক দশক কাজ করেছেন বিভিন্ন চলচ্চিত্রে। হিন্দির পাশাপাশি মারাঠি ছবিতে তিনি অভিনয় করেছেন। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে না-ফেরার দেশে পাড়ি জমান কিশোর নন্দলস্কর।

\’বাস্তব\’, \’সিংঘম\’, \’সিম্বা\’র মতো বলিউডের একাধিক হিট ছবির অভিনেতা কিশোর নন্দলস্করের মৃত্যুসংবাদ নিশ্চিত করেন তাঁর নাতি অনীশ। ভারতীয় গণমাধ্যমকে তিনি জানান, অভিনেতার কোভিড পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ আসার পর স্থানীয় একটি কোভিড-১৯ সেন্টারে তাঁকে ভর্তি করা হয়েছিল, তবে পরিস্থিতি খারাপের দিকে গেলে গত সপ্তাহেই অন্য আরেকটি বড় হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। তবু শেষ রক্ষা হলো না। তাঁর শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল, শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা দ্রুত হারে কমছিল।

১৯৮৯ সালে \’ইনা মিনা ডিকা\’ ছবি দিয়েই রুপালি দুনিয়ায় আত্মপ্রকাশ কিশোর নন্দলস্করের। এরপর \’মিস ইউ মিস\’, \’গাওন থোর পুডারি চোর\’, \’জারা জাপুন কারা\’, \’মধ্যমবর্গ—দ্য মিডল ক্লাস\’-এর মতো একাধিক জনপ্রিয় মারাঠি ছবিতে অভিনয় করেছেন অভিনেতা।

\’খাঁকি\’, \’বাস্তব : দ্য রিয়েলিটি\’, \’সিংঘম\’-এর মতো সুপারহিট বলিউড ছবিরও অংশ থেকেছেন কিশোর নন্দলস্কর। তবে গোবিন্দার \’জিস দেশ মে গঙ্গা রাহতা হ্যায়\’ ছবির \’সন্নাটা\’ চরিত্রে অভিনয়ের জন্যই দর্শক সবচেয়ে বেশি তাঁকে মনে রেখেছে।

এদিকে করোনায় আক্রান্ত হয়ে বলিউডের নব্বইয়ের দশকের সংগীত পরিচালক শ্রাবণ রাঠৌরের শারীরিক অবস্থাও আশঙ্কাজনক। দিন কয়েক আগে করোনায় আক্রান্ত হন তিনি। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। হাসপাতাল সূত্রের খবর, আপাতত ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছে সংগীত পরিচালককে।

ভারতীয় এক সংবাদমাধ্যমকে শ্রাবণের ছেলে জানিয়েছেন, তাঁর বাবার শারীরিক অবস্থা বেশ আশঙ্কাজনক। এমনিতে তাঁর বাবা ডায়াবেটিস রোগে ভুগছিলেন । তার ওপর করোনা সংক্রমণের ফলে তাঁর ফুসফুসেরও ক্ষতি হয়।

নব্বইয়ের দশকে নাদিম আখতার সাইফির সঙ্গে জুটি বেঁধে কাজ করতেন শ্রাবণ। বলিউডে নাদিম-শ্রাবণ নামেই পরিচিত ছিলেন তাঁরা। \’সজন\’, \’সড়ক\’, \’পারদেশ\’, \’আশিকি\’র মতো ছবিতে সংগীত পরিচালনা করেছিলেন এই জুটি।

Scroll to Top