এবারের অমর একুশে বইমেলায় বাংলাদেশের ছোট পর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী আশনা হাবিব ভাবনার লেখা ‘গোলাপী জমিন’ ও ‘রাস্তার ধারে গাছটির কোনো ধর্ম ছিল না’ শিরোনামের দুটি বই বেরিয়েছে। সম্প্রতি বইমেলায় গিয়েছিলেন তিনি। বইমেলায় ভাবনার পরে যাওয়ার পোশাক নিয়ে বিতর্ক চলছে। এ দিয়ে বিরক্ত অভিনেত্রী। ফেসবুকে তিনি লিখেছেন, আমার দোষ আমি হাটাকাটা ব্লাউজ পরে বইমেলায় গিয়েছি? সত্যি! আমাদের নানী দাদীরা এখনও হাটাকাটা ব্লাউজ পরে থাকেন। এই ছবিটি সবাই পোস্ট করছে , আমাকে নিয়ে বাজে কথা লিখছে । অশ্লীল বলছে! যারা পোস্ট করে বাজে লিখছে তারা বেশিরভাগ পুরুষ। সব পুরুষ কে খারাপ বলব কি করে? আমার বাবা তো আমাকে কখনো বলে দেয়নি কি পোশাক পরা উচিত? আমি কী পরবো ? আমরা নারীরা কী পরবো তা ঠিক করবেন আপনি?
আরেকটি পোস্টে ভাবনা লিখেছেন, আমার সত্যি কিছু বলার নেই । গত তিন চার দিন ধরে আমি বিরক্ত খুবই ,এবং হতাশ ও আমরা আসলেই কি নারীর সম্মান কখনই দিতে পারব না! ২০২১ সালে স্লিভলেস ব্লাউজ নিয়ে কথা বলতে হয়, এটা নিয়ে আমাকে হেয় করা হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়। এর চেয়ে লজ্জার আর কিছু নেই।
ষাটের দশকে, সত্তর দশকেও স্লিভলেস ব্লাউজ পরতো আমাদের দাদি-নানিরা। তখনও এটা স্বাভাবিক ছিল। এখনও তাই আছে বলে আমি বিশ্বাস করি । অথচ এই সময়ে এসে স্লিভলেস ব্লাউজের কারণে কথা হচ্ছে- এর চেয়ে লজ্জার আর কী হতে পারে? আমি কেবল তাদের কথা ভাবি ,যারা প্রতিদিন বাসে যায়, যারা প্রতিদিন পার্লারে কাজ করে রিকশা করে বা হেঁটে বাড়ি ফেরে, প্রতিমুহূর্তে আমাদের সচেতন থাকতে হবে, কাপড় ঠিক করতে হবে? কতটা জঘন্য এদের মানসিকতা! এরাই ধর্ষক।
আমি এসব নিয়ে পাত্তা দেই না , কারণ আমার সময় নেই, বা আমি অভ্যস্ত বা আমি অভিনয় করি , আমাকে টেলিভিশনে দেখা যায়, তাই \’\’আমাকে নিয়ে যে কেউ যা খুশি তাই বলার অধিকার রাখে\’\’। এবং আমি এসব পাত্তা দেব না এটাই সদা সত্য, তবে আমি তাদের নিয়ে ভাবি, কত মেয়েকে সাইবার বুলিংয়ের শিকার হতে হয় প্রতিনিয়ত।
আমার কাপড় নিয়ে কথা বলার তুই কে? \’আমাদের সরকার- আমাদের পুলিশ যদি একটু সহায়তা করতো তাহলে এইসব অপরাধ হয়তো অনেকটা কমে যেতে পারতো। সাইবার ক্রাইমের তত্ত্বাবধানে যদি ১০ জন এরকম অপরাধীকে ধরে শাস্তি দেওয়া যেত তাহলে একটা দৃষ্টান্ত তৈরি হতে পারতো। এই দৃষ্টান্ত এইসব অপরাধ অনেক কমিয়ে দিতে পারতো।