এই সেপ্টেম্বরের ৪ তারিখে সাদেক বাচ্চু আঙ্কেল আমাকে ফোন দিয়েছিলেন। তখন আমি বাইরে, আমি বললাম আঙ্কেল আমি তো বাইরে। বাসায় গিয়ে ফোন দিচ্ছি। সেদিন বাসায় ফিরতে অনেক রাত হয়ে গেছে। আর তারপরেরদিনও ফোন দেওয়া হলো না। পরে আমি যখন ফোন দিলাম, তখন তিনি হাসপাতালে। ফোন কেউ ধরলো না। উনি আমাকে শেষ কী বলতে চেয়েছিল আমি জানি না। এখন আফসোস লাগছে, জানি এই আফসোসটা চিরদিন থেকে যাবে।
সদ্যপ্রয়াত সাদেক বাচ্চু সম্পর্কে বলতে গিয়ে এভাবেই বাষ্পরুদ্ধ কণ্ঠে বলছিলেন চিত্রনায়িকা আইরিন।
আইরিন বলেন, \’অবশ্য সাম্প্রতিক সময়ে সাদেক বাচ্চু আঙ্কেলের সঙ্গে অনেক কথা হতো। গত বছরে নভেম্বরে মুক্তি পায় পদ্মার প্রেম। এটা জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের জন্য জমা দেওয়া হয়। এই চলচ্চিত্রের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা হতো। করোনার সময় ঘণ্টার পর ঘণ্টা কথা বলেছি। সব অভিনয়ের বিষয়ে কথা। অথচ সর্বশেষ যেটা বলতে চেয়েছিলেন সেটাই বলা হলো না, কিংবা আমার শোনার সৌভাগ হলো না।\’
সাদেক বাচ্চুর সঙ্গে আইরিন প্রথম ভালোবাসা জিন্দাবাদ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। যেখানে তাঁর বাবা ছিলেন সাদেক বাচ্চু। এরপর পদ্মার প্রেমসহ আরও দু\’টি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন আইরিন। যার প্রত্যেকটি ছবিতেই বাবার চরিত্রে অভিনয় করেছেন এই অভিনেতা।
আইরিন বলেন, \’তিনি বাবার চরিত্রে অভিনয় করেছেন আমার প্রত্যেক ছবিতেই। আমাকে একদম মেয়ের মতো দেখতেন। বাবার মতোই স্নেহপূর্ণ কথা বলতেন। তিনি শুধু অভিনেতাই নন একজন শিক্ষকও। আমরা যারা অভিনয় না শিখেই এই জগতে চলে আসি, তাদের তিনি হাতে কলমে অভিনয় শিখিয়ে দিতেন। কোনোভাবেই, কখনই বিরক্ত হতেন না। এই স্কুলিংটা আমরা আর কারো কাছ থেকে সেভাবে পাবো না।
জনপ্রিয় অভিনেতা সাদেক বাচ্চু মারা গেছেন। করোনায় আক্রান্ত হয়ে মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ সোমবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টা ৫ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। ইন্না-লিল্লাহ….. রাজিউন।
ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. আশীষ কুমার চক্রবর্তী এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, সোমবার সকাল থেকেই তার হার্টবিট বন্ধ হয়েছে বেশ কয়েকবার। অবশেষে ১২টা ৫ মিনিটে সাদেক বাচ্চু মৃত্যুবরণ করেন বরেণ্য এই অভিনেতা।