বিচ্ছেদের নোটিশ পাওয়ার পরও আমি সম্পর্কটি পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করেছি : বাঁধন

অভিনেত্রী বাঁধনের ডির্ভোসের খবর নিয়ে শোবিজ জগতে এখন হইচই অবস্থা। ২০১৪ সালের নভেম্বর মাসে প্রাক্তন স্বামী মাশরুর সিদ্দিকী সনেট বাঁধনকে ডিভোর্স করেন। তবে ডির্ভোসের খবর জানার পরও দীর্ঘ ৩ বছর বাঁধন চেষ্টা করেছেন সংসার টিকিয়ে রাখতে।

৪ (অক্টোবর) বাঁধন তার নিজের ফেসবুকে ওয়ালে একটি স্ট্যটাস দেন।

বাঁধনের স্ট্যাটাসটি পাঠকদের জন্য হুবুহু তুলে ধরা হচ্ছে,

“গত কয়েকদিনে অনলাইন, পত্রিকাসহ কিছু গণমাধ্যমে আমাকে নিয়ে মাশরুর সিদ্দিকী সনেটের নানান কুৎসামূলক মন্তব্যকে উপজীব্য করে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। সম্প্রতি সেগুলো আমার দৃষ্টিগোচর হয়। এ পরিপ্রেক্ষিতে আমি কিছু কথা বলা প্রয়োজন মনে করছি।

আসলে এসব প্রতিবেদনে তার যেসব উদ্ধৃতির উল্লেখ রয়েছে তা দেখে আমি স্তম্ভিত ও হতবাক হয়ে গেছি। এমন সর্বৈব মিথ্যাচার ও নোংরামী কীভাবে সম্ভব কোনো সভ্য মানুষের পক্ষে? কোনো ব্যক্তি, বিশেষ করে কোনো নারীর প্রতি এত অকথ্য, আপত্তিকর ভাষায় এহেন অভব্য আক্রমণ! এতদিন আমি ও আমার মেয়ের প্রতি মাশরুর সিদ্দিকী সনেট যে অপরিসীম অবহেলা ও দায়িত্বহীনতা দেখিয়েছেন, আমাকে যেভাবে নিগ্রহ করেছেন, আমার সঙ্গে যেসব নির্যাতনমূলক আচরণ করে এসেছেন, আমার বাবা-মা-ভাইসহ আমাদের পরিবার ও আত্মীয়স্বজনদের মধ্যে যে ধরনের উদ্বেগের মধ্যে ফেলেছেন, তাদের যেমন আতঙ্কেও মধ্যে রেখেছেন, মা হিসেবে আমি শুধু আমার মেয়ের মানসিক দিকের কথা ভেবে সে বিষয়গুলো সবসময় চেপে গিয়েছি। মেয়েটিকে সামাজিক অবজ্ঞা বা বিদ্রুপের মুখে পড়তে হবে এই ভয়ে দাম্পত্য সম্পর্ক রক্ষায় সর্বতোভাবে চেষ্টা চালিয়েছি। এমনকি তাঁর কাছ থেকে বিবাহবিচ্ছেদের নোটিশ পাওয়ার পরও আমি সম্পর্কটি পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করেছি।

কিন্তু এসব গণমাধ্যমে তিনি আমাকে নিয়ে যা যা বলছেন বলে জানতে পারছি, তা শুধু অরুচিকর ও স্থূলই নয়, একই সঙ্গে ভয়াবহ নিষ্ঠুরও বটে। কেননা তিনি যে চরিত্রহননের মাধ্যমে আমাকে দুর্বল করে দিয়ে আমাকে আমার মেয়ের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করার উদ্দেশ্যে এসব করছেন, তা ইতোমধ্যেই স্পষ্ট হয়ে গেছে। তিনি ও তাঁর বর্তমান স্ত্রী দু’জনের কাছ থেকে, আমার মেয়েকে আমার কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়ার হুমকি পাওয়ার পর থেকে, যে কোনো সময়ই আমার মেয়েকে অপহরণ করা হতে পারে, এমন আতঙ্ক আমাকে গ্রাস করছে। তাছাড়া তাঁরা আমার সঙ্গে এবং গণমাধ্যমে আমাকে নিয়ে যে কথাবার্তা বলেছেন, তাতে আমার মেয়ের নিরাপত্তা নিয়ে আমার মধ্যে তীব্র শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে।

মাশরুর সিদ্দিকী সনেট শুধু আমার প্রতি অমর্যাদাকর মন্তব্য করেই ক্ষান্ত হননি, তিনি গোটা সাংস্কৃতিক অঙ্গনের ব্যক্তিবর্গদের ঢালাওভাবে হেয় করেছেন। আপনারা অবগত আছেন, তিনি যেভাবে আমাকে লক্ষ্য করে যেসব কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দিয়েছেন, তার আইনি প্রতিবিধান রয়েছে। তবে আমি সেই পথ খুঁজতে চাইনি।

একজন সংস্কৃতিকর্মী বা গণমাধ্যমের সঙ্গে সম্পর্কিত ব্যক্তি হিসেবে নয়, একজন সাধারণ মানুষ বা একজন বিপন্ন নারী হিসেবেই এ পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণে আপনাদের কাছ থেকে আমি সাহায্য চাই। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও রাষ্ট্রের কাছ থেকে আমি অন্তত নৈতিক সমর্থনটুকু পাবো। আমার সুহৃদ ও শুভাকাংখী যারা রয়েছেন, গণমাধ্যমে এখন পর্যন্ত আমার নীরবতার সুযোগে একপক্ষের প্রচারিত মিথ্যায় বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য তাদের প্রতি অনুরোধ রাখছি। আমি তাঁদের জানিয়ে রাখতে চাই, আমার মেয়েকে নিয়ে যাওয়ার হুমকি পাওয়ার পর আইনানুগ রাস্তায় হাঁটা ছাড়া আমার হাতে কোনো সভ্যবিকল্প ছিল না। আমি এ বিষয়ে অবশেষে একটি মামলা দায়ের করেছি। এবং এতদিন আমার মুখ বুঁজে সয়ে যাওয়ার সুযোগে তিনি যেভাবে আমার নারীত্বের অবমাননা করে চলেছেন, আমার মেয়েকে মাতৃস্নেহ বঞ্চিত করার পাঁয়তারা করছেন, আমি বাধ্য হয়েই সে বিষয়গুলো আপনাদের জানিয়ে রাখার প্রয়োজন বোধ করছি।

আমি আপনাদের বলতে চাই, এ পর্যন্ত বিয়েসহ বিভিন্ন বিষয়ে তথ্য গোপন করাসহ ধারাবাহিকভাবে যেভাবে তিনি মিথ্যের ওপর ভর করে এসেছেন, আমার বিরুদ্ধে গণমাধ্যমে দেওয়া তাঁর কথাগুলো তার আরেকটি নজির মাত্র।

জোরপূর্বক মধ্যরাতে আমাদের বাড়িতে অনুপ্রবেশ করে আমার পরিবারের সদস্য, প্রতিবেশী ও আমার ওপর আক্রমণ চালিয়ে উল্টো তিনি আমাদের নামেই মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাদের হয়রানি করেছেন। এখনও আমার মেয়ের পাসপোর্ট আটকে রেখেছেন মাসরুর চৌধুরী সনেট।

এই পরিস্থিতিতে আমার গণমাধ্যমের বন্ধুরা সত্যনিষ্ঠার অঙ্গীকারের প্রতি দায়বদ্ধতাকে সমুন্নত রেখে এ বিপন্নতা থেকে আমাকে উদ্ধারে, এবং আমার কন্যার নিরাপদ ভবিষ্যতটুকু রক্ষায়, সবসময়ের মতোই আমাদের পাশে এসে দাঁড়াবেন বলেই আমি প্রত্যাশা করি।”

বাংলাদেশ সময় : ১৩০২ ঘণ্টা, ০৪ অক্টোবর, ২০১৭,
লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/এ

Scroll to Top