সুযোগ পেলেই শহুরে হট্টগোল থেকে দূরে চলে যান জনপ্রিয় অভিনেত্রী রাকুল প্রীত। আলোয় মোড়া শহরে নয়। দীপাবলির রাত কাটিয়েছেন গহিন জঙ্গলে, প্রকৃতির সঙ্গে। তিন বন্ধু মিলে গিয়েছিলেন সিলিমে। অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয় এই নায়িকা দক্ষিণ ভারতীয় সিনেমার দুনিয়ায় রীতিমতো রাজত্ব করছেন। বলিউডেও নিজের জায়গা গড়ে নিয়েছেন রাকুল। মুক্তি পেতে চলেছে তাঁর অভিনীত ছবি মারজাওয়া। মিলাপ জাভেরি পরিচালিত এই ছবিতে তাঁকে দেখা যাবে যৌনকর্মীর চরিত্রে। মুম্বাইয়ের পাঁচ তারা হোটেলের এই আড্ডায় রাকুল বলেন, ‘আমার চরিত্রটি ৯০ দশকের নায়িকাদের দ্বারা অনুপ্রাণিত। মিলাপের ছবিতে নায়কদের ভারী ভারী সংলাপ দেওয়া হয়।
মারজাওয়া-তে আমাকে এই ধরনের সংলাপ বলতে শোনা যাবে। আমাকে মিলাপ বলেছিলেন যে এই ছবিতে আমি ওর রেখা।’ তবে রেখাকে অনুসরণ করেননি এই নায়িকা। তিনি বলেন, ‘শুটিংয়ের আগে রেখা বা নব্বইয়ের কোনো নায়িকার সিনেমা দেখলে কোথাও ওনাদের কপি করে ফেলব। তাই শুটিংয়ের সময় আমি কোনো ছবি দেখিনি। আমি বারে গিয়ে লক্ষ করেছি একজন যৌনকর্মীর দাঁড়ানোর ধরন, কথা বলা, অঙ্গভঙ্গি। সেসব কিছু আমি আমার চরিত্রে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছি’।
সেনা পরিবারের মেয়ে রাকুল প্রীত। ছোটবেলায় তিনি অভিনেত্রী হতে চাননি। মায়ের ইচ্ছাতেই তাঁর অভিনয়ে আসা। মিস ইন্ডিয়া খেতাবজয়ী রাকুলের মডেলিং দিয়ে ক্যারিয়ার শুরু। এরপর ধীরে ধীরে অভিনয়ের জগতে আসেন এই অভিনেত্রী। তবে দক্ষিণের ছবিতে তাঁর দাপট বেশি। রাকুল বলেন, ‘সবাই ভাবেন দক্ষিণী ছবি দিয়ে আমার ক্যারিয়ার শুরু।
আসলে আমার অভিনয়জীবন শুরু হিন্দি ছবি দিয়ে। ইয়ারিয়া আমার প্রথম ছবি।’ দক্ষিণ বনাম বলিউড সম্পর্কে এই নায়িকা বলেন, ‘দক্ষিণ ও বলিউড এই দুই ইন্ডাস্ট্রিতে ১২ ঘণ্টা কাজ করতে হয়। তবে দক্ষিণ ভারতীয় সিনেমাপাড়ার মানুষদের সময়জ্ঞান অনেক বেশি। সময়মতো কাজ শুরু হয়, সন্ধ্যা ছয়টার মধ্যে প্যাক–আপ হয়ে যায়। সেটা মুম্বাইতে হয় না। তাই দক্ষিণী সিনেমায় কাজ করলে নিজের জন্য একটু সময় পাওয়া যায়।’
রাকুলের শেষ মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি দে দে প্যায়ার দে বক্স অফিসে ভালো ব্যবসা করেছিল। অজয় দেবগনের সঙ্গে তাঁর জুটি দর্শক পছন্দ করেছিলেন। নিজের এই সফল ছবি প্রসঙ্গে রাকুল বলেন, ‘ছবি সফলতা পেলে নিশ্চয় ভালো লাগে। দে দে প্যায়ার দে ছবি মুক্তির পর আমাকে প্রচুর মানুষ অভিনন্দন জানিয়েছিল। ভক্তদের পাশাপাশি সিনেমাজগতের মানুষের কাছ থেকেও অনেক শুভেচ্ছা পাই।’
বলিউডি ঘরানার বাইরে থেকে এসেছিলেন রাকুল প্রীত। তবে এ কারণে কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয়নি তাঁকে। রাকুল বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমি খুব লাকি। আমাকে কেউ বাজে প্রস্তাব দেয়নি কখনো। আমার পরিবারের সাপোর্ট সব সময় আমার সঙ্গে ছিল। আমি একা ছিলাম না। তাই আমার মধ্যে কখনোই এমন কোনো অসহায়ত্ব কাজ করেনি, যেটার সুযোগ নিয়ে কেউ আমাকে বাজে প্রস্তাব দেবেন।’
সিদ্ধার্থ মালহোত্রার সঙ্গে রাকুলের দ্বিতীয় ছবি এটি। এর আগে তাঁদের দেখা গেছে আইয়ারি ছবিতে। সিদ্ধার্থকে নিয়ে রাকুলের ভাষ্য হলো, ‘আমি আর সিদ্ধার্থ দুজনেই এসেছি দিল্লি থেকে। আইয়ারি করার পর আমাদের মধ্যে বন্ধুত্ব তৈরি হয়েছিল। তাই ও আমার সহশিল্পী কম, বন্ধু বেশি।