একুশে পদকপ্রাপ্ত নজরুলসঙ্গীতশিল্পী, গবেষক ও স্বরলিপিকার খালিদ হোসেনকে তার কুষ্টিয়ার বাড়িতে মায়ের কবরের পাশে চিরশায়িত করা হবে। তার আগে সকালে এই শিল্পীর মরদেহ নেওয়া হবে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ইনস্টিটিউটে। খালিদ হোসেনের ছেলে আসিফ এ তথ্য জানিয়েছেন। বুধবার (২২ মে) রাত ১০টা ১৫ মিনিটে ঢাকার জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন খালিদ। তার বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর।
আসিফ বলেন, মোহাম্মদপুরের তাজমহল রোডের বাইতুল আমান মিনা মসজিদে প্রথম নামাজে জানাজা সম্পন্ন হওয়ার পর সকাল ১০টায় বাবার মরদেহ জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ইনস্টিটিউটে নেওয়া হবে। সেখানে সকাল ১১টা পর্যন্ত তার মরদেহ রাখা হবে। এরপর আমরা কুষ্টিয়ার কোর্টপাড়ার উদ্দেশ্যে রওয়ানা করবো। সেখানে অসিয়ত মতো তার মায়ের কবরের পাশে বাবাকে সমাহিত করা হবে।
খালিদ হোসেন দীর্ঘদিন ধরে হার্ড, কিডনি ও ফুসফুসের সমস্যার পাশাপাশি বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছিলেন। গত ৪ মে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তিনি ডা. উত্তম বড়ুয়ার অধীনে হাসপাতালটির করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) চিকিৎসাধীন ছিলেন। তিনি হৃদরোগের পাশাপাশি কিডনি রোগসহ নানা জটিলতায় ভুগছিলেন বলে জানা গেছে।
গুণী শিল্পী খালিদ হোসেন ১৯৩৫ সালের ৪ ডিসেম্বর কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি গত পাঁচ দশক ধরে বাংলাদেশে নজরুল গীতির শিক্ষক, গবেষক ও শুদ্ধ স্বরলিপি প্রণয়নে কাজ করে গেছেন। খালিদ হোসেন সঙ্গীত প্রশিক্ষক ও নিরীক্ষক হিসেবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় কবি কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় ও দেশের সকল মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড ও বাংলাদেশ টেক্সট বুক বোর্ডে দায়িত্ব পালন করেছেন।
তিনি নজরুল ইনস্টিটিউটে নজরুল সংগীতের আদি সুরভিত্তিক নজরুল স্বরলিপি প্রমাণীকরণ পরিষদের সদস্য ছিলেন।
খালিদ হোসেনের এ পর্যন্ত ছয়টি নজরুল সংগীতের অ্যালবাম প্রকাশিত হয়েছে। ‘চম্পা নদীর তীরে’ নামে তাঁর একমাত্র আধুনিক গানের অ্যালবাম রয়েছে। এছাড়া তিনি ১২টি ইসলামী গানের অ্যালবামও প্রকাশ করেছেন।
নজরুল সংগীতে অনবদ্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি একুশে পদক অর্জন করেন।