জ্বালানি সংকট কাটাতে সৌদি আরবের সহযোগিতা চায় বাংলাদেশ

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে দেশের বিদ্যুৎ জ্বালানি সংকট আরও গভীর হচ্ছে। সরকার যেখানে বিদ্যুৎ খাতে উন্নয়নের সবচেয়ে বড় অবদানের কথা বলে আসছিল, তখন এমন বিপর্যয় তাদের ভাবিয়ে তুলেছে। গত মার্চে যে নেপালকে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ দেওয়ার কথা বলেছিল, সেই নেপাল থেকে সামান্য কিছু বিদ্যুৎ আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

বৈশ্বিক জ্বালানি সংকটের মধ্যে বিদ্যুৎ চাহিদা মেটাতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বাংলাদেশ তেল-সমৃদ্ধ ভ্রাতৃপ্রতীম সৌদি আরব থেকে সহযোগিতার আশা প্রকাশ করেছে। সাশ্রয়ী মূল্যে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস এল‌এনজি ও জ্বালানি তেল কেনাসহ সংকট মোকাবেলায় সৌদি আরবের সহযোগিতা চাওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে।

৩০ ও ৩১ অক্টোবর সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে অনুষ্ঠিত হবে দুই দেশের মধ্যে ১৪তম যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের বৈঠক (জেইসি)। এই বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে জ্বালানি খাতের সহযোগিতা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে বলে জানা গেছে। বৈঠকের কার্যপত্রেও জ্বালানি খাতের বিভিন্ন ইস্যু গুরুত্বের সঙ্গে স্থান পেয়েছে। আগামী শনিবার অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব শরীফা খানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল সৌদি আরবে যাবেন।

ওই বৈঠকে অর্থনৈতিক অঞ্চলে সৌদি কোম্পানির বিনিয়োগ, ওষুধ রপ্তানি, সরকারি–বেসরকারি অংশীদারত্বে (পিপিপি) সৌদি আরবের কোম্পানির বিনিয়োগ, প্রবাসী শ্রমিকসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হবে বলে জানা গেছে।

সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান গণমাধ্যমকে বলেন, এখন দেশে বিদ্যুৎ খাতের সংকট চলমান রয়েছে। এ সময়ে সৌদি আরব থেকে কম দামে জ্বালানি তেল পাওয়া যায় কি না, তা নিয়ে আলোচনা করা যেতে পরে। কারণ, সৌদি আরব বলছে, তারা তেলের উৎপাদন কমাবে। এতে বিশ্ববাজারে তেলের দাম আবারও বেড়ে যেতে পারে। তিনি আরও বলেন, কাতারের পর এখন সৌদি আরব থেকে এলএনজি কেনার উদ্যোগটি ভালো। কারণ, বাংলাদেশ শিগগিরই এলএনজি–নির্ভরতা কমাতে পারবে না। স্পট প্রাইসের পরিবর্তে দ্বিপক্ষীয় আলোচনার ভিত্তিতে কম দামে যদি এলএনজি পাওয়া যায়, তাহলে তা বিদেশি মুদ্রা সাশ্রয়ে কার্যকর হবে।

উপরন্তু জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোয় সংকট আরও বাড়ছে। এর প্রভাব সাড়ে ১৬ কোটি মানুষের ওপর পড়েছে। বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে সরকার রোস্টার করে লোডশেডিং করে আসছিল। এখন আর রোস্টার নেই। কোথাও লাগাতার, কোথাও কয়েক ঘণ্টা। বিপর্যস্ত মানুষ। ব্যবসা খাত। শিল্পায়ন। সরকার এখন বিভিন্ন দেশের সঙ্গে যোগাযোগ করে সমাধানের চেষ্টা করছে।