জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম মোল্লা। গতকাল বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) নিজ ক্যাম্পাসে দু’দফা মারধরের শিকার হন তিনি। সেদিন রাতে গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে মারা যান শামীম।
নিহত শামীম মোল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী। ৩৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন তিনি। একজন সাবেক শিক্ষার্থীকে এভাবে পিটিয়ে মারার প্রতিবাদে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেছে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন।
এ ব্যাপারে একজন শিক্ষার্থী বলেন– ফুটেজে দেখা গেছে, যারা এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে ছিল, তাদের অধিকাংশই ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। আর এই ঘটনা যে বা যারাই ঘটিয়ে থাকুক না কেন, তাদের ব্যাপারে সুষ্ঠু তদন্তের দাবি ও বিচারের দাবি জানাচ্ছি। গণঅভ্যুত্থানের পর এরকম এক ঘটনা ক্যাম্পাসে ঘটা মানে এটা আমাদের সকলের ব্যর্থতা।
হামলায় জড়িত কাউকে ছাড় দেয়া না হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। সংগঠনটির সমন্বয়ক আরিফ সোহেল বলেন– আমরা যতগুলো ভিডিও দেখেছি, তার মধ্যে বেশ কিছু ভিডিওতে আহসান হাবিবকে দেখা গেছে। তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নিচ্ছে। প্রক্রিয়া চলমান।
তিনি আরও বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্য অনেককেও প্রক্টর অফিসের সামনে দেখা গেছে। তারা আহত শামীমকে পুলিশের গাড়িতে তুলে দিচ্ছিলেন, যাতে শিক্ষার্থীরা শামীমের আর কোনো ক্ষতি করতে না পারে। ওই সময় সেখানে সাংবাদিক, প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও ভিসি স্যার ছিলেন। এর সুষ্ঠু তদন্ত হোক।
জাবি ছাত্রদলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জহির উদ্দিন মোহাম্মদ বাবর বলেন, শামীম মোল্লাকে যেভাবে গণপিটুনি দিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে, এটার তীব্র নিন্দা জানাই আমরা। এই ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের তদন্তের মাধ্যমে তাদের আইনের আওতায় আনা হয়, সে ব্যাপারে আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা দাবি জানাচ্ছি।
সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে জানা গেছে, এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জাবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ভিডিও ফুটেজ দেখে জড়িতদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে।
যদিও শামীম মোল্লাকে পিটিয়ে মারার ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি। আটকও হয়নি কেউ। হত্যার প্রতিবাদে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেছে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন।
গত ১৫ জুলাই রাতে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে ভিসি’র বাসভবনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার অভিযোগ রয়েছে শামীম মোল্লার বিরুদ্ধে।