রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) বেড়েছে পানিবাহিত রোগ জণ্ডিস তথা হেপাটাইটিস এ ভাইরাস রোগের প্রকোপ। গত তিনদিনে ২৫ জন শিক্ষার্থী এ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। দূষিত পানি ও ফুটপাতের অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি খাবার খেয়ে শিক্ষার্থীরা এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসকরা। এদিকে আতঙ্কে আছে শিক্ষার্থীরা।
আজ মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) বিকেলে এই তথ্যটি নিশ্চিত করেন বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রের উপ-প্রধান চিকিৎসক ডা. মো. লোমান মঞ্জুর (অপু)।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত তিন সপ্তাহ ধরে প্রতিনিয়ত বাড়ছে এ রোগীর সংখ্যা। বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসিক হল, অ্যাকাডেমিক ভবনসহ পুরো ক্যাম্পাসে সাবমারসিবল পাম্পের সংখ্যা খুবই কম। এদিকে টিউবওয়েল ও মোটরের পানিতে প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকায় এ রোগের সৃষ্টি হচ্ছে। গত তিনদিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে ৪৮ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ২৫ জন এ রোগে আক্রান্ত হয়। তবে আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন হওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের আহ্বান জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রের প্রধান চিকিৎসক ড. তবিবুর রহমান শেখ।
বিশ্ববিদ্যালয় উপ-প্রধান চিকিৎসক ডা. মো. লোমান মঞ্জুর বলেন, \’গত তিন সপ্তাহ ধরে জণ্ডিসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। গত তিনদিনে ৪৮টি রোগীর মধ্যে ২৫ জন এ রোগে আক্রান্ত হয়। মূলত শীতকালে ঠাণ্ডাজনিত সমস্যার কারণে এ রোগে বেশি আক্রান্ত হয় মানুষ। এছাড়াও পানিবাহিত রোগ ও ফুটপাতের খাবার থেকে হেপাটাইটিস এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয় রোগীরা। তবে সঠিক বিশ্রাম ও ফুটপাতের খাবার এড়িয়ে চললে এ রোগ থেকে নিরাময় পাওয়া সম্ভব বলে জানান তিনি\’।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান চিকিৎসক ডা. তবিবুর রহমান শেখ বলেন, \’শীতকালে ঠাণ্ডার কারণে মানুষ চলাচল কম করে যার ফলে রক্ত চলাচলও কম করে। হেপাটাইটিস এ ভাইরাসের কারণেই জণ্ডিস হচ্ছে। এটি মূলত একটি পানিবাহিত রোগ। এ রোগ থেকে নিরাময় পেতে হলে সবার আগে প্রয়োজন শিক্ষার্থীদের সচেতনতা। যেসব শিক্ষার্থী হলে থাকে তারা সাবমারসিবলের পানি খেতে হবে। ক্যাম্পাসে হোটেল ও ক্যান্টিন মালিকদের উচিত পিউর টিউবওয়েল বা সাবমারসিবলের পানি দিয়ে রান্নার কাজ করা এবং শিক্ষার্থীদের জন্য পিউর পানি সরবরাহ করা। যাদের লক্ষণ খারাপ মনে হয়, তারা দেরি না করে দ্রুত চিকিৎসা কেন্দ্রে এসে ট্রিটমেন্ট নেওয়ার জন্য আহবান জানান তিনি\’।
আতঙ্কে আছে জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী মেহেদী সজীব বলেন, ক্যাম্পাসে জণ্ডিস মহামারী আকার ধারণ করেছে। এ নিয়ে আমরা খুবই উদ্বিগ্ন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিকট দাবি থাকবে যতদ্রুত সম্ভব এ বিষয়ে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে।