ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোর খাবারের মান নিয়ে শিক্ষার্থীদের ক্ষোভের শেষ নেই। ডাইনিংয়ের খাবারের মান নিম্নমানের ও স্বাদহীন-যে অনেকেই এখানে খেতে চান না।
খাবারের মান সম্পর্কে বলতে গিয়ে শিক্ষার্থী বলেন, ‘খাবারের মান খুবই খারাপ। অপরিষ্কার ও অপরিচ্ছন্ন থাকে। খাবারের মধ্যে অনাকাঙ্ক্ষিত অনেক কিছুই পাওয়া যায়, যেমন, ময়লা, আবর্জনা ও পোকা। ডালের মান এতই খারাপ যে কোনটা ডাল আর কোনটা প্লেট ধোঁওয়ার পানি সেটাই বুঝতে পারা যায় না।’
যারা এই খাবার খান তারা অনেকটা বাধ্য হয়েই খান। ভাত, ছোট এক টুকরা মাছ বা মাংস এবং হলুদ রংয়ের পাতলা ডাল হলের ডাইনিংয়ের খাবার মেনু। যা প্রায় প্রতিদিনই থাকে। চলে মাসের পর মাস মাস এমনকি বছর ধরেও। পুষ্টিগুণ কতটকু আছে তা নিয়েও আছে নানান অভিযোগ।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ বেশিরভাগ ডাইনিং ম্যানেজার বাজারের কম মূল্যে পাওয়া বা নিম্নমানের তরকারি, মাছ ও মাংস সংগ্রহ করেন। ফলে শারীরিকভাবে অনেককেই অসুস্থতার মুখোমুখি হতে হয়।
আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘অধিকাংশ সময় দেখা যায় পঁচা, বাশি ও যত নিম্ন মানের খাবার পাওয়া যায় বাজারে তাই নিয়ে আসে এখানে। যার ফলে আমরা আমাদের খাবারের দাম অনুযায়ী মান সম্মত খাবার পাচ্ছি না।’
এক ছাত্র বললেন, ‘আমার ওজন ছিল ৫৯ কেজি, এখন হয়ে গেছে ৫৩ কেজি। অর্থাৎ খাবারের মান কেমন, আমি নিজেই সেটার একজন যথার্থ উদাহরণ।’
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলছে, বাজেট বরাদ্দের অভাবের পাশপাশি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোর ডাইনিং বা ক্যান্টিনও জিম্মি সিন্ডিকেট ব্যবসায়িদের কাছে। তাতে জড়িত থাকার অভিযোগও আছে ছাত্র সংগঠনের নেতাদেরও। ছাত্র নেতাদের ফ্রি খাওয়ার সংস্কৃতি, ক্যান্টিনে ভর্তুকির অভাবসহ অভিযোগ আছে প্রশাসনের উদাসীনতা নিয়েও।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ জানান, ‘এখানে কিছু লোক আছে, তারাই এটা চালায়। এরা একধরণের সিন্ডিকেট তৈরি করেছে। আমাদের প্রশাসনের কাজ হবে, এই সিন্ডিকেটটা ভেঙ্গে দিয়ে একটি উন্মুক্ত প্রতিযোগিতার মাধ্যমে যারা কেন্টিন পরিচালনা করে বা যারা খাবার সরবরাহ করে বা যারা হলে থাকে আরও দায়িত্বশীল হওয়া যাতে খাবারের মান আরও বাড়ানো যায়।’
হলের ডাইনিং বা ক্যান্টিনের খারাপ অবস্থার কারণে অনেক শিক্ষার্থী খাচ্ছেন বাইরে কিংবা নিজেরাই মেস করে আলাদাভাবে খাবারের ব্যবস্থা করে নিচ্ছেন।