সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে সহকারী শিক্ষক নিয়োগে প্রথম ধাপের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ৮ ডিসেম্বর। পরীক্ষাটি স্থগিতের আবেদন জানিয়েছে একাংশ।
গতকাল বুধবার প্রার্থীদের পক্ষে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) আবেদন জমা দিয়েছেন মো. আশরাফুল ইসলাম নামের এক পরীক্ষার্থী। হরতাল-অবরোধের মধ্যে পরীক্ষার্থীদের নিরাপত্তা সংকটের কারণ দেখিয়ে এই আবেদন করা হয়েছে।
আগামী ৮ ডিসেম্বর শুক্রবার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগে প্রথম ধাপে রংপুর, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের ১৮ জেলায় পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এরই মধ্যে প্রবেশপত্র ডাউনলোডও শুরু করেছেন চাকরিপ্রার্থীরা।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) বরাবর দেওয়া আবেদনে প্রার্থীরা উল্লেখ করেন, ‘আমরা প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ–২০২৩–এর প্রথম ধাপের পরীক্ষার্থী। আমাদের নিয়োগ পরীক্ষাটি আগামী ৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম ধাপের এ নিয়োগ পরীক্ষা রংপুর, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের ১৮ জেলায় পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এতে মোট ৩ লাখ ৬০ হাজার পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করবেন।’
এতে আরও বলা হয়, ‘দেশের সবচেয়ে বড় এ নিয়োগ পরীক্ষায় অর্ধেকের বেশি পরীক্ষার্থী বিভিন্ন কারণে নিজ জেলার বাইরে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে অবস্থান করছেন। দেশে হরতাল ও অবরোধের কারণে বুধ ও বৃহস্পতিবারের মধ্যে আমরা নিজ জেলায় যেতে পারছি না। এর সঙ্গে জীবনের ঝুঁকিও রয়েছে। সেই সঙ্গে অনেকের প্রবেশপত্র ডাউনলোডের মেসেজ এখনো আসেনি।’
আবেদনে তাঁরা আরও উল্লেখ করেন, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর সব প্রতিষ্ঠান নির্বাচন কমিশনের আওতাধীন থাকে। দেশের এ পরিস্থিতিতে যদি ৮ ডিসেম্বর পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়, তবে অর্ধেকের বেশি পরীক্ষার্থী অবরোধের কারণে পরীক্ষা দিতে নিজ জেলাতে উপস্থিত হতে পারবেন না। বিষয়টি বিবেচনা করে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের প্রথম ধাপের পরীক্ষা স্থগিত করতে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন তাঁরা।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ইসিতে আবেদন দেওয়া আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘শুক্রবার আমাদের পরীক্ষা। ওই দিন ভোর পর্যন্ত রাজনৈতিক দলগুলোর ডাকা অবরোধ চলবে। কিন্তু অনেক প্রার্থী পড়াশোনা বা চাকরির প্রস্তুতির জন্য বাইরের জেলায় বা ঢাকাতেও থাকেন। তাঁদের এ অবরোধের মধ্যে জেলার কেন্দ্রে গিয়ে পৌঁছাতে হবে। এটা কষ্টসাধ্য ও ঝুঁকিপূর্ণ।’
তিনি বলেন, ‘শুক্রবার সাতটি ব্যাংকের সমন্বিত নিয়োগ পরীক্ষা ছিল। প্রার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনা করে সেটা কিন্তু স্থগিত করা হয়েছে। এর আগে বিসিএসের লিখিত পরীক্ষাও স্থগিত করেছে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। তাহলে প্রাথমিকের নিয়োগ পরীক্ষা কেন স্থগিত করা হবে না? এটা তো সবচেয়ে বড় (প্রার্থী ও শূন্য পদের হিসাবে) নিয়োগ পরীক্ষা। আমাদের দাবি, ঝুঁকিপূর্ণ এ সময়ে পরীক্ষা স্থগিত করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে নেওয়া হোক।’
জানতে চাইলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াত বলেন, ‘এখনো পরীক্ষা পেছানো বা স্থগিতের সিদ্ধান্ত হয়নি। নির্বাচন কমিশন কিংবা প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকেও আমাদের এ নিয়ে কিছু জানানো হয়নি।’