পররাষ্ট্র ক্যাডারে প্রথমঃ সফলতার পেছনের গল্প বললেন ডা. আলো

৩৬ তম বিসিএস পরীক্ষার পররাষ্ট্র ক্যাডারে ১ম স্থান অর্জন করেছেন ডা. সুবর্ণা শামীম আলো। তিনি এবারই প্রথম বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নেন। ডা. সুবর্ণা শামীম আলো রাজধানী ঢাকার ‘স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের’ ৩৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। ২০১৩ সালে এমবিবিএস পাশের পর বিসিপিএস থেকে শিশু বিভাগে এফসিপিএস-পার্ট ১ সম্পন্ন করেন। বর্তমানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে শিশু বিভাগে এমডি কোর্সে অধ্যয়নরত আছেন তিনি। ডা. আলো তার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার হোমনা উপজেলায়। তিনি হোমনা উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ফজলুল হক মোল্লার ছোট মেয়ে। মা নাজমা বেগম গৃহিণী। তিন বোন এক ভাইয়ের মধ্যে আলো সর্ব কনিষ্ঠ।

ডা. সুবর্ণ শামীম আলো ২০০৪ সালে কুমিল্লার কলাগাছ এমইউ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন। এরপরে ২০০৬ সালে এইচএসসিতে ভর্তি হন ঢাকার ভিকারুন্নেসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে। ডা. আলো প্রথম কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখেন এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায়।

দু’টাতেই জিপিএ গোল্ডেন ফাইভ পেয়ে পাস করেন। ২০০৭ সালে ভর্তি পরীক্ষায় সুযোগ পান স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজে। ২০০৭-২০০৮ সেশনে এই মেডিকেল কলেজের ৩৬তম ব্যাচে ভর্তি হয়ে এমবিবিএস কোর্স সম্পন্ন করেন ২০১৩ সালে। আর ইন্টার্ন শেষ হয় ২০১৪ সালের মে মাসে। এরপর এফসিপিএস পার্ট-১ পাস করেন ২০১৫ সালের জানুয়ারি মাসে পেডিয়াট্রিক্সে (শিশু রোগ বিষয়)। নিত্যনতুন সাফল্য যোগ হতে থাকে ডা. আলোর নামের পাশে। যার ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) এমডি কোর্সে রেসিডেন্সিতে সুযোগ পান। ডা. সুবর্ণ শামীম আলোর স্বামী আশিকুর রহমান খানও পেশায় চিকিৎসক। বর্তমানে তিনি মেডিকেল অফিসার হিসেবে কর্মরত রয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। ৩০তম বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারের এ চিকিৎসক এরই মধ্যে এফসিপিএস পার্ট-১ শেষ করেছেন। তাই ডা. আলোর সব থেকে বড় অনুপ্রেরণাও তার স্বামী।

চিকিৎসক হয়েও কেন পররাষ্ট্র ক্যাডার প্রথম পছন্দ সে সম্পর্কে ডা. আলো বলেন, আমার দীর্ঘ দিনের ইচ্ছা ছিলো ক্যারিয়ারে ডিপ্লোম্যাট হিসেবে কাজ করব। বর্তমানে বিভিন্ন দেশে আমাদের নারীরা কূটনৈতিক হিসেবে কাজ করছে। তাদের দেখে উৎসাহ পেয়েই আমি এ ক্যাডার পছন্দ করেছি। বাংলাদেশে অনেক পরিশ্রম করে একজন চিকিৎসক হয়েও ভালোভাবে ক্যারিয়ার গড়তে পারে না। কতটা কঠিন পথ অতিক্রম করে একজন চিকিৎসক হতে হয় তার প্রমাণ আমি নিজেই। এর বিনিময়ে চিকিৎসকরা যথার্থ মর্যাদাও পান না। আমার প্রথম পছন্দ পররাষ্ট্র ক্যাডারে সুযোগ হয়েছে। আমার স্বপ্ন পূরণ হওয়ায় দেশের বাহিরে প্রতিনিধিত্ব করা আমার জন্য অনেক সহজ হবে।

ডা. সুবর্ণ শামীম আলো জানান, একজন মেডিকেল শিক্ষার্থী হিসেবে তার নিয়মিত পড়ার অভ্যাস রয়েছে। এটাই তাকে সবচেয়ে বেশি সহায়তা করেছে। নিজের সর্বোচ্চ পরিশ্রম কাজে লেগেছে। সকালে বিকালে হাসপাতাল ডিউটি করে দিনে পড়ার সময় পাওয় যেত না তাই রাতে নিয়মিত ৫-৬ ঘণ্টা পড়েছেন। সবসময় চেষ্টা করেছেন সবকিছু বুঝে পড়তে এজন্য তার কোনো ধরনের কোচিং করার প্রয়োজন পড়েনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৫০৫ ঘণ্টা, ২৪ অক্টোবর    ২০১৭

লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/এস পি

Scroll to Top