রাজশাহীতে ৪২ শিক্ষক জাল সনদ দিয়ে বছরের পর বছর চাকরি করছেন। সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদফতর (ডিআইএ) এসব জাল সনদধারী শিক্ষকদের শনাক্ত করেছে। অনিয়মের আশ্রয় নিয়ে চাকরি করে যাওয়া এসব শিক্ষকের এমপিও বাতিলসহ সরকারি কোষাগারের টাকা ফেরতের সুপারিশও ডিআইএ করেছে।
তবে আঞ্চলিক শিক্ষা কার্যালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করেছেন তারা।
রাজশাহী মোহনপুর উপজেলার পাকুড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা সুনীতা রানী সাহা ভুয়া সনদে চাকরিরতদের একজন। তিনি ভুয়া নিবন্ধন সনদে চাকরি করছেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা বিভাগ ডিআইএ’র তদন্তে সেটি ধরা পড়ে। জাল সনদে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আরও তিন শিক্ষকের চাকরি হয়েছে। সেটির প্রমাণ পাবার পরেও তারা বহাল তবিয়তে রয়েছেন। এছাড়া ভুয়া সনদে চাকরি বাগিয়েছেন মোহনপুর সরকারি ডিগ্রি কলেজের ৫ শিক্ষক। বিষয়টি আঁচ করতে পেরে অভিযুক্তরা গণমাধ্যমের ক্যামেরা দেখে পালিয়ে যান।
স্কুল শিক্ষিকা সুনীতা রানী সাহা বলেন, হাইকোর্টে এ বিষয়ে রিট করা আছে। নিবন্ধনের ব্যাপারে অভিযোগ আছে। মোহনপুর সরকারি ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মফিজ উদ্দিন কবিরাজ বলেন, শিক্ষক নিবন্ধনের তথাকথিত কাগজ বা সার্টিফিকেট জমা দিয়েছিল, সেই জমা দেয়াটা সঠিক হয় নাই।
প্রতিষ্ঠান প্রধানরা বলছেন, এ ব্যাপারে নির্দেশনা না পাওয়ায় তাদের কোনো দায় নেই। পাকুড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শামসুজ্জামান বলেন, টাকা ফেরত দেয়ার বিষয়টি নেটে দেখেছি। তবে অফিসিয়ালি কোনো নির্দেশনা আমাদের কাছে আসেনি।
রাজশাহী আঞ্চলিক শিক্ষা বিভাগের উপপরিচালক ড. শারমিন ফেরদৌস চৌধুরী বলেন, সবকিছুই একটি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে চলে। চাইলেই রাতারাতি কোনো কিছু বন্ধ করে দেয়া যায় না। মাউশি মন্ত্রণালয়ে বলবেন এমপিও বন্ধ করে দেয়ার জন্য। তারপর তাদের কাছে নির্দেশনা আসলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জাল সনদধারী ৪২ শিক্ষকের ২৩ জনই এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের। আর ১৯ জন নন এমপিও। এরইমধ্যে এমপিওভুক্ত ২৩ শিক্ষককে সরকারি ১০ কোটি টাকা ফেরত দেয়ার নির্দেশনা দিয়েছে ডিআইএ।