অনিশ্চয়তার মুখে হাজী মো. শামসুদ্দিন নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রায় ৩০০ শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন। নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের আসতে দেয়া হচ্ছে না, ক্লাস নিচ্ছেন দপ্তরি, আয়া ও নৈশপ্রহরী।
মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরি আবু আহম্মেদ শৈলকুপা উপজেলার নিত্যানন্দপুরে হাজী মো. শামসুদ্দিন নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পড়াচ্ছেন। শৈলকুপা উপজেলার নতুন এমপিওভুক্ত একটি বিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠাকালীন শিক্ষকদের বাদ দিয়ে নতুন শিক্ষক নিয়োগের মাধ্যমে অর্থ বাণিজ্যের পাচার চলছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শিক্ষকবিহীন বিদ্যালয়টিতে নৈশপ্রহরী, আয়া ও দপ্তরি দিয়ে বর্তমানে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করানো হচ্ছে। এতে ভেঙে পড়েছে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাদান কার্যক্রম। এতে অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে প্রায় ৩০০ শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন।
২০১২ সালে ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার নিত্যানন্দপুরে হাজী মো. শামসুদ্দিন নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়। বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার পর থেকে সেখানে বিনা বেতনে নিয়মিত পাঠদান করছেন আসাদুজ্জামান, নাসিরুল ইসলাম, আমির হামজা, রচনা খাতুনসহ আরো কয়েকজন শিক্ষক। সম্প্রতি ওই বিদ্যালয় এমপিওভুক্তির আওতায় এসেছে। শৈলকুপা উপজেলার নতুন এমপিওভুক্ত বিদ্যালয়টি এমপিওভুক্তির পর বর্তমান সভাপতি সাহাবুল ইসলাম সাবু ও প্রধান শিক্ষক রণজিৎ কুমার বিশ্বাস প্রতিষ্ঠাকালীন শিক্ষকদের তাড়িয়ে দিয়ে নতুন শিক্ষক নিয়োগের পাঁয়তারা করছেন। নতুন শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে মোটা অঙ্কের অর্থ বাণিজ্যেই হাতিয়ে নেওয়ায় তাঁদের মূল উদ্দেশ্য। নতুন শিক্ষক নিয়োগের জন্য শিক্ষা অফিসের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে শিক্ষক চাহিদা পাঠিয়েছেন তাঁরা। বর্তমানে শিক্ষকবিহীন মাধ্যমিক বিদ্যালয়টিতে শিক্ষার্থীদের ক্লাস নিচ্ছেন বিদ্যালয়ের দপ্তরি, নাইটগার্ড ও আয়া।
২৬ আগস্ট দেখা যায়, বিদ্যালয়টিতে প্রধান শিক্ষক ছাড়া অন্য কোনো শিক্ষক নেই। ছাত্র-ছাত্রীদের ক্লাস নিচ্ছেন বিদ্যালয়ের দপ্তরি, নাইটগার্ড ও আয়া।
বিদ্যালয়ের দপ্তরি ক্লাস নিচ্ছেন, অষ্টম শ্রেণিতে গিয়ে দেখা যায়। তাছাড়া অন্যান্য ক্লাসে শিক্ষা পাঠদান করানো হচ্ছে না।
বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র অর্ণব রায় জানায়, তাদের বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের স্কুলে আসতে দেওয়া হচ্ছে না। এখন তাদের ক্লাস নিচ্ছে বিদ্যালয়ের নাইটগার্ড, দপ্তরি ও আয়া। কয়েক দিন পরই এসএসসি পরীক্ষা তাদের। এখন পড়াশোনা নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে আছে বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থীরা ।
বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক আমির হামজা বলেন, ‘আমরা এত দিন কষ্ট করে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেছি, কিন্তু আজ আমাদের তাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।
সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়টিতে নতুন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার জন্য পাঁয়তারা করছেন। আরেক প্রতিষ্ঠাকালীন শিক্ষক আসাদুজ্জামান অভিযোগ করে বলেন, প্রধান শিক্ষক রণজিৎ কুমার ২০২০ সালে বিদ্যালয়ে যোগদান করেন।
নতুন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার ব্যাপারে বিদ্যালয়ের সভাপতি সাহাবুল ইসলাম সাবু বলেন, ‘বিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। এখানে নতুন শিক্ষক নিয়োগ বাণিজ্যের কোনো পরিকল্পনা নেই। ’ জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘ নিত্যানন্দপুরে হাজী মো. শামসুদ্দিন নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে একটি চাহিদা এসেছে। এ বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ দেখবেন। ’