দুটি হাত ও একটি পা জন্ম থেকেই নেই তামান্না আক্তার নূরার। সেই তামান্নাই এইচএসসি পরীক্ষায়ও এক পায়ে লিখে জিপিএ-৫ পেয়েছেন। এর আগে পিইসি, জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষায় তিনি জিপিএ-৫ অর্জন করেন। সাফল্যের ধারাবাহিকতায় এবার এইচএসসিতেও রয়েছে। এখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষা নিয়ে বিসিএস ক্যাডার ও গবেষক হওয়া।
যশোর শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ঝিকরগাছা উপজেলার বাঁকড়া ডিগ্রি কলেজ থেকে তামান্না বিজ্ঞান বিভাগে পরীক্ষা দিয়েছিলেন। তিনি যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার বাঁকড়া ইউনিয়নের আলীপুর গ্রামের রওশন আলী ও খাদিজা পারভীন শিল্পী দম্পতির সন্তান। তার বাবা ছোট পোদাউলিয়া দাখিল মাদরাসার বিএসসি শিক্ষক। মা গৃহিণী। তাদের তিন সন্তানের মধ্যে তামান্না সবার বড়।
তামান্না এইচএসসির ফলাফলে খুশি জানিয়ে বলেন, তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণাধর্মী কোনো বিষয়ে পড়ালেখা করে বিসিএস ক্যাডার হতে চান। দেশ ও মানুষের কল্যাণে গবেষণায় আত্মনিয়োগই হবে তার জীবনের ব্রত। যদিও পরিবারের আর্থিক অনটন সেই স্বপ্নের অভিযাত্রায় বাধ সাধবে কিনা তা নিয়ে তামান্নার অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে। স্বপ্নকে বাঁচিয়ে রাখতে ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটি চিঠিও লিখেছেন তামান্না।
বাঁকড়া ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ সামছুর রহমান জানান, তামান্না আমাদের কলেজের শিক্ষার্থী। তামান্না প্রতিবন্ধকতা জয় করে সমাজকে দেখিয়ে দিয়েছে। শুধু পড়াশোনা না, তামান্না ভালো ছবিও আঁকে। এমনকি কম্পিউটার প্রযুক্তিতেও সে দক্ষ। জন্ম থেকেই তার দুটি হাত ও একটা পা নেই। অথচ একটা পা দিয়েই তামান্নার যুদ্ধ চলছে। আমি আশা করি সে ভবিষ্যতে ভালো কিছু করবে।
তামান্নার বাবা রওশন আলী বলেন, ছোটবেলা থেকেই তামান্নার স্বপ্ন ছিল ডাক্তার হওয়ার। কিন্তু তার শারীরিক প্রতিবন্ধকতার বিষয়টি উপলব্ধি করে এখন সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে গবেষক হতে চায়।