উপমহাদেশের প্রখ্যাত কথা সাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন প্রিয় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ক্যাম্পাসে। আজ মঙ্গলবার জোহরের নামাজের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে জানাজা শেষে তাকে সমাহিত করা হয় কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার চত্বরে। জানাজায় অংশ নেন শিক্ষক, শিক্ষার্থী, রাজনীতিবিদ ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা ছাড়াও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।
এর আগে প্রয়াত কথাসাহিত্যিকের মরদেহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে নেয়া হয়। প্রথমে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে হাসান আজিজুল হকের মরদেহে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। এরপর প্রশাসন, শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও সর্বস্তরের মানুষ শেষবারের মতো শ্রদ্ধা জানান।
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মরদেহ নেয়া হয় দর্শন বিভাগে। ১৯৬০ সালে এই বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন হাসান আজিজুল হক। ১৯৭৩ সালে এই বিভাগেই শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন তিনি ২০০৪ সালে তিনি অধ্যাপনা থেকে অবসর নেন।
গতকাল সোমবার দিবাগত রাত সোয়া ৯টার দিকে রাজশাহী নগরীর চৌদ্দপাই এলাকার নিজ বাসভবন উজানে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বাংলা সাহিত্যের শক্তিমান কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক। গত ২১ আগস্ট অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে রাজশাহী থেকে ঢাকায় নেয়া হয়। ২২ দিন চিকিৎসা শেষে তিনি রাজশাহী ফিরে আসেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত নিজ বাসভবনেই ছিলেন তিনি।
হাসান আজিজুল হক ১৯৩৯ সালে ২ ফেব্রুয়ারি ভারতের বর্ধমান জেলার জব গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। কর্মসূত্রে দীর্ঘদিন তিনি রাজশাহীতেই কাটিয়েছেন। কথাসাহিত্যে অনবদ্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ পেয়েছেন অসংখ্য পুরস্কার, পদক ও সম্মাননা। এর মধ্যে রয়েছে আদমজী সাহিত্য পুরস্কার (১৯৬৭), বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার (১৯৭০), অলক্ত সাহিত্য পুরস্কার (১৯৮১), আলাওল সাহিত্য পুরস্কার (১৯৮৩), অগ্রণী ব্যাংক সাহিত্য পুরস্কার (১৯৮৪), ফিলিপস সাহিত্য পুরস্কার (১৯৮৮), কাজী মাহবুব উল্লাহ ও বেগম জেবুন্নিসা পুরস্কার। এছাড়া ১৯৯৯ সালে ‘একুশে পদকে’ ভূষিত হন হাসান আজিজুল হক। আগুনপাখি উপন্যাসের জন্য পেয়েছেন আনন্দ পুরস্কার। ২০১২ সালে তিনি ভারতের আসাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানসূচক ডিলিট ডিগ্রি পান। ২০১৯ সালে তিনি স্বাধীনতা পদক পান।