অভিনেতা, লেখক ও শিক্ষক ডা. ইনামুল হক আর নেই। তার জামাতা লিটু আনাম গণমাধ্যমকে এ খবর নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘সোমবার দুপুরের খাবার খেয়ে চেয়ারে বসে রেস্ট নিচ্ছিলেন। এ অবস্থায়ই তার মৃত্যু হয়। তার কোনো শারীরিক জটিলতা ছিল না। সম্পূর্ণ সুস্থ ছিলেন।’ লিটু আনাম জানান, হাসপাতাল থেকে মৃতদেহ কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনে আনা হয়েছে গোসল করানোর জন্য। তবে কোথায় কখন জানাজা ও দাফন করা হবে সে বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় নাই।
ড. ইনামুল হকের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে সংস্কৃতি অঙ্গনে।
ড. ইনামুল হকের দাম্পত্য সঙ্গী ছিলেন বরেণ্য নাট্যজন লাকী ইনাম। তাদের সংসারে দুই মেয়ে হৃদি হক ও প্রৈতি হক। হৃদি হকের বিয়ে হয়েছে নাট্যাভিনেতা লিটু আনাম ও প্রৈতি হকের বিয়ে হয়েছে নাট্যাভিতা সাজু খাদেমের সঙ্গে।
ইনামুল হকের জন্ম ফেনীতে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি রসায়নে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রী লাভ করেন। যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি নিয়ে ১৯৬৫ সালে প্রভাষক হিসেবে বুয়েটের রসায়ন বিভাগে যোগ দেন। পরে ১৯৭০, ১৯৭৯, এবং ১৯৮৭ সালে যথাক্রমে সহকারী অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক এবং অধ্যাপক পদে উন্নীত হন।
একুশে পুরস্কার ও স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত এই অভিনেতা দীর্ঘদিন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে রসায়ন বিভাগে শিক্ষকতা করেছেন। ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে বিভিন্ন আন্দোলনমুখী নাটকে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৭০ সালে আইয়ুব খানের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে তৎকালীন অসহযোগ আন্দোলনে অংশ নেন নাট্যচর্চাকে হাতিয়ার করে। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ সৃজনীর ব্যানারে পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে ট্রাকে ট্রাকে ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থানে পথনাটক করেন। তার ১৮টি নাটক বিভিন্ন নাট্যপত্রে, বিশেষ ম্যাগাজিনে এবং বই আকারে প্রকাশিত হয়েছে। নির্জন সৈকতে, গৃহবাসী, মুক্তিযুদ্ধ নাটকসমগ্র, স্ট্রিন্ডবার্গ এর দু\’টো নাটক, মহাকালের ঘোর সওয়ার, বাংলা আমার বাংলা তার প্রকাশিত গ্রন্থ।