ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো স্নাতক চতুর্থ বর্ষ ও স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থীদের জন্য ৫ অক্টোবর খুলে দেওয়ার পর এবার বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো সবার জন্য খুলে দেওয়া হলো।
গতকাল রবিবার (১০ অক্টোবর) সকাল ৮টা থেকে হলে উঠতে শুরু করেন সকল বর্ষের শিক্ষার্থীরা। প্রাধ্যক্ষগণ সকাল ৮টা থেকে হলের শিক্ষার্থীদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেন। এসময় শিক্ষার্থীদের দেখাতে হয়েছে টিকার কার্ড ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচয়পত্র। দীর্ঘদিন পর হলে প্রবেশ করতে পেরে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের।
গতকাল সকাল ১১টায় ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হল পরিদর্শন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। এ সময় তিনি বলেন, ‘গণরুমের বিষয়ে হল প্রশাসন একটি বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে। যাতে কোনোক্রমেই আগের মতো ঠাসাঠাসি করে শিক্ষার্থীরা হলে অবস্থান না করে। এটি স্বাস্থ্যবিধি পরিপন্থী, স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ায়। অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের জীবনমানের উপরও নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।’
উপাচার্য বলেন, ‘কথিত গণরুম কোনোভাবেই কাম্য নয়। এই সংকট নিরসনে হল প্রশাসনের যে বিশেষ উদ্যোগ, সে উদ্যোগের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট সব মহলেরই সদয় সহযোগিতা করা খুবই জরুরি। এই উদ্যোগটি তখনই সফল হবে, যখন শিক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন স্টকহোল্ডারদের ইতিবাচক ভূমিকা থাকবে। তাহলে দীর্ঘদিনের এই সংকট থেকে আমরা মুক্ত হতে পারব।’
অধ্যাপক আখতারুজ্জামান সব বর্ষের জন্য হল খোলার বিষয়ে বলেন, ‘পর্যায়ক্রমে আমরা আজ সব আবাসিক শিক্ষার্থীকে হলে তুলেছি। আমাদের শিক্ষার্থীদের মধ্যে যথেষ্ট স্বাস্থ্য সচেতনতাবোধ তৈরি হয়েছে। এই ধরনের মহামারি প্রতিরোধে এটি দরকার ছিল। কিছু শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলেছি, তারা দুই ডোজ টিকাও নিয়েছে। হল প্রশাসনও যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মানার প্রতি তাগিদ দিচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধি মানা এবং টিকা নেওয়ার ধারাটা যদি অব্যাহত থাকে, তাহলে বড় ধরনের ঝুঁকি থাকবে না।’
গতকাল সকাল ৮টা থেকে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের হলে উঠতে দেখা যায়। তাদের ফুল, চকলেট ও মাস্ক দিয়ে বরণ করে নিচ্ছে হল প্রশাসন। তবে ছেলেদের কিছু হলে এই আমেজ দেখা যায়নি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বেশিরভাগ শিক্ষার্থী অনার্স চতুর্থ বর্ষ ও মাস্টার্সের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে হলে উঠে যাওয়ার কারণেই তেমন আমেজ নেই।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিজয় একাত্তর হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আব্দুল বাছির বলেন, ‘আমরা শুধুমাত্র আবাসিক শিক্ষার্থীদের হলে তুলছি। কিছু অনাবাসিক শিক্ষার্থী উঠতে চাইলেও আমরা ফেরত পাঠিয়েছি। আগামী ১৭ তারিখ লিগ্যাল সিট দিয়েই আমরা তাদের হলে তুলব। আপাতত কাউকে আমরা স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্য দিয়ে হলে তুলব না।’