বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাসের কারণে দীর্ঘ এক বছর পর স্বাস্থ্যবিধি মেনে আগামী ৩০ মার্চ সারাদেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে যাচ্ছে। এ জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে প্রস্তুতি নিতে নির্দেশনা দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)।
মাউশি\’র এক অফিস আদেশে গত মঙ্গলবার (১৬ মার্চ) শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের এ নির্দেশনা দেওয়া হয়।
অফিস আদেশে বলা হয়, ৩০ মার্চ সব সরকারি-বেসরকারি মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে পাঠদান কার্যক্রম শুরু করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হলো। কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভবনে সংস্কার বা মেরামতের প্রয়োজন হলে তা ৩০ মার্চের আগে করতে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর ও শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
অফিস আদেশে আরও বলা হয়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পর এসএসসি শিক্ষার্থীদের ৬০ কর্মদিবস এবং এইচএসসি শিক্ষার্থীদের ৮০ কর্মদিবস পাঠদান করে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষা নেওয়ার জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর, আন্তশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটি এবং মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডগুলোকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এর আগে শুক্রবার (১২ মার্চ) শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি জানান, করোনা সংক্রমণ বাড়তে থাকলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার তারিখ পেছাতে পারে। তিনি বলেন, এ বিষয়টি আমরা পর্যবেক্ষণ করছি। শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবকদের নিরাপত্তা আগে। করোনা সংক্রমণ ঊর্ধ্বগতি থাকলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্তের তারিখ পেছাতে পারে।
গত ২৭ ফেব্রুয়ারি শিক্ষামন্ত্রী আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে জানিয়েছিলেন আগামী ৩০ মার্চ দেশের সব স্কুল-কলেজ খুলে দেওয়া হবে। এদিন তিনি বলেন, দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান ২৪ মে থেকে শুরু হবে এবং হল খুলবে ১৭ মে। এর আগে সব ধরনের পাঠদান ও পরীক্ষা বন্ধ থাকবে। ১৭ মের আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব আবাসিক শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মচারীদের করোনা টিকা দেওয়া হবে। এ ছাড়া বিসিএস পরীক্ষার আবেদন ও পরীক্ষার তারিখ বিশ্ববিদ্যালয় খোলার সঙ্গে সংগতি রেখে নির্ধারণ করা হবে।
গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। কয়েক ধাপে বাড়ানোর পর ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করা হয়। গত ২২ জানুয়ারি করোনা পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে গাইডলাইন প্রকাশ করে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর।
এ গাইডলাইন অনুসরণ করে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার প্রস্তুতি নিতে বলা হয়। স্কুল-কলেজগুলোতে ৩৯ পাতার গাইডলাইন পাঠিয়ে বলা হয়, ৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে স্কুলগুলো প্রস্তুত করে রাখতে, যাতে যে কোনো মুহূর্তে সেগুলো খুলে দেয়া যেতে পারে।
উল্লেখ্য, করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে গোটা বিশ্বকে নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হচ্ছে। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের এই প্রতিকূল স্রোতের মুখোমুখি বাংলাদেশও। অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মতো বাংলাদেশের জন্য আরেকটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে শিক্ষা খাত। প্রায় ১২ মাস ধরে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। কিছু ক্ষেত্রে অনলাইনে কার্যক্রম চলমান।