চলতি অর্থবছর শেষে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন প্রথমবারের মত ৮ শতাংশের ঘর ছাড়িয়ে যাবে বলে প্রাক্কলন করেছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো। অর্থবছরের প্রথম আট মাসের (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) তথ্য বিশ্লেষণ করে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো যে হিসাব করেছে, তাতে ২০১৮-১৯ অর্থবছর শেষে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হবে রেকর্ড ৮ দশমিক ১৩ শতাংশ। সেই সঙ্গে এবার বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু আয় বেড়ে ১ হাজার ৯০৯ ডলারে পৌঁছাবে বলে আশা করছে সরকার।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদে (এনইসি) এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর চূড়ান্ত হিসাবে গত অর্থবছর জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ৭ দশমিক ৮৬ শতাংশ। আর গত অর্থবছর বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু আয় ছিল এক হাজার ৭৫১ ডলার। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেটে ৭ দশমিক ৪ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ঠিক করেন তখনকার অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
তবে গত জানুয়ারিতে আওয়ামী লীগ টানা তৃতীয়বারের মত সরকার গঠন করার পর থেকেই নতুন অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল বলে আসছিলেন, প্রবৃদ্ধির হার এবারই আট শতাংশ ছাড়িয়ে যাবে। প্রায় এক দশক ৬ শতাংশের বৃত্তে ‘আটকে’ থাকার পর ২০১৫-১৬ অর্থবছরে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশের ‘ঘর’ অতিক্রম করে। এরপর তা ৮ শতাংশের ঘরে পৌঁছাতে সময় লাগলো মাত্র তিন বছর।
অর্থমন্ত্রী ব্রিফিংয়ে বলেন, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর প্রাক্কলন অনুযায়ী চলতি অর্থবছর শেষে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) আকার দাঁড়াবে প্রায় ২৫ লাখ ৩৬ হাজার ১৭৭ কোটি টাকায়। গত অর্থবছরে জিডিপির আকার ছিল ২২ লাখ ৫০ হাজার ৪৭৯ কোটি টাকা। পরিসংখ্যান ব্যুরো প্রাক্কলিত যে হিসাব দিয়েছে, তাতে চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরে শিল্প খাতে প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ১৭.৬১ শতাংশ। গত অর্থবছরের এ খাতে প্রবৃদ্ধি ছিল প্রায় ১৭.১৩ শতাংশ।
এছাড়া কৃষি খাতে ৯.১৩ শতাংশ এবং সেবা খাতে ১২.১০ শতাংশ প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলন করা হয়েছে এবার, যা গতবার যথাক্রমে ১১.০২ শতাংশ ও ১২.৮০ শতাংশ ছিল। অর্থমন্ত্রী বলেন, চলতি অর্থবছরে জিডিপি ৩১.৫৭ শতাংশ বিনিয়োগে আসছে বলে এই হিসাবে ধরা হয়েছে। গত অর্থবছর এই হার ছিল ৩১.১৩ শতাংশ। এবারের বিনিয়োগের মধ্যে সরকারি খাতের অবদান ৮.১৭ শতাংশ, আর বেসরকারি খাত থেকে ২৩.৪০ শতাংশ আসছে বলে তথ্য দেন মন্ত্রী।