বাংলাদেশ ১৯৭১ সালে যখন পাকিস্তানের কাছ থেকে স্বাধীনতা অর্জন করে এটি পাকিস্তানের চেয়ে অনেক দরিদ্র একটি দেশ। সে সময় বাংলাদেশের জিডিপিতে শিল্পখাতের অবদান ছিল মাত্র ৬-৭ শতাংশ, যা পাকিস্তানে ছিল ২০ শতাংশেরও বেশি। তবে সময়ের সাথে সাথে বাংলাদেশ ক্রমেই বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। বিভিন্ন সূচকে পেছনে ফেলেছে পাকিস্তানকে। সর্বশেষ মাথাপিছু জিডিপিতেও পাকিস্তানকে পেছনে ফেলেছে বাংলাদেশ।
\’দ্য ইকোনমিস্টে\’ বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ৩০ জুন শেষ হওয়া অর্থবছরে পাকিস্তানের মাথাপিছু জিডিপি যেখানে ছিল ১ হাজার ৪৭০ ডলার সেখানে বাংলাদেশের মাথাপিছু জিডিপি ছিল ১ হাজার ৫৩৮ ডলার। গত মাসে এই হিসাব প্রকাশ করা হয়।
তবে গত ২৫ আগস্ট প্রকাশিত পাকিস্তানের সর্বশেষ আদম শুমারির তথ্য মাথাপিছু জিডিপিতে বাংলাদেশে এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে বলে ইকোনমিস্টের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
এতে বলা হয়, সর্বশেষ ওই শুমারির তথ্য অনুযায়ী, পাকিস্তানের জনসংখ্যা এখন ২০ কোটি ৭৮ লাখ, যা দেশটি জনসংখ্যা নিয়ে আগের যে ধারণা ছিল তার ৯০ লাখেরও বেশি। পাকিস্তানের জনসংখ্যার নতুন এই তথ্য হয়তো দেশটিকে বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম জনবহুল দেশে পরিণত করেছে, তবে এই সংখ্যা তাদের মাখাপিছু জিডিপিকে ৪-৫ শতাংশ কমিয়ে দিয়েছে, যা এক্ষেত্রে এগিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশকে।
তবে মাথাপিছু জিডিপিতে বাংলাদেশ এগিয়ে থাকলেও একটি বিষয় এক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে যে, পাকিস্তানে দ্রব্যমূল্য বাংলাদেশের তুলনায় কম। ফলে পাকিস্তানের ১ হাজার ৪৭০ ডলারের ক্রয় ক্ষমতা বাংলাদেশের ১ হাজার ৫৩৮ ডলারের চেয়ে বেশি।
তবে যাই হোক, মাথাপিছু জিডিপিতে পাকিস্তানকে পেছনে ফেলা বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য একটি ইতিবাচক দিক। গত ১০ বছর ধরেই বাংলাদেশ অব্যাহতভাবে ৬ শতাংশের বেশি জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করে আসছে, যা গত দুই বছরে ৭ শতাংশ ছাড়িয়েছে। বর্তমানে দেশটির জিডিপিতে শিল্পখাতের অবদান ২৯ শতাংশ। এক সময় পরিধেয় বস্ত্রের অভাবে থাকা দেশটি এখন ভারত ও পাকিস্তানের চেয়ে বেশি তৈরি পোশাক রফতান্ করে। এখনও বাংলাদেশে কাজের পরিবেশের মান যেখানে থাকা উচিত সেখানে পৌঁছায়নি, তবে এক সময় যা ছিল তার চেয়ে এটি এখন অনেক ভালো।
বাংলাদেশের মাথাপিছু জিডিপি বৃদ্ধিতে আরও একটি উৎস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে উল্লেখ করে ইকোনমিস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের মতো বাংলাদেশের আদম শুমারির তথ্যও দেশটির মাথাপিছু জিডিপি বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা রেখেছে। ২০১১ সালে করা বাংলাদেশের ওই শুমারিতেও পাকিস্তানের মতো ব্যাপক সংশোধন হয়েছিল, তবে পাকিস্তানে যেখানে শুমারির পর জনসংখ্যা প্রকৃত তথ্য বেড়েছে, সেখানে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে তা কমেছে।
বাংলাদেশ সময়:১৫৫৫ ঘণ্টা, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭
লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/এস