মামলাসহ সব জটিলতার অবসান ঘটিয়ে ১০০টি গাড়ি অবশেষে নিলামে বিক্রি করছে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস। এরমধ্যে বিভিন্ন সময়ে সংসদ সদস্য কোটায় শুল্কমুক্ত সুবিধায় আনা ৩১টি ল্যান্ড ক্রুজারও রয়েছে। ইতোমধ্যে এসব গাড়ির ইনভেন্ট্রিও শেষ হয়েছে। কাস্টমস ইতিহাসের সবচেয়ে বড় গাড়ি নিলাম থেকে অন্তত ৪০০ কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
৬০ শতাংশ হিসেবে ৯ কোটি ৫০ লাখ টাকা রিজার্ভ ভ্যালু নির্ধারণ করে নিলামে তোলা হয়েছে বিভিন্ন সময়ে সংসদ সদস্যদের নামে শুল্কমুক্ত সুবিধায় আনা ৩১টি ল্যান্ড ক্রুজার। তার সঙ্গে যুক্ত হবে ২৫ শতাংশ ভ্যাট ও ট্যাক্স। সব মিলিয়ে এই ৩১টি গাড়ি থেকেই রাজস্ব আদায় হবে অন্তত ২২১ কোটি টাকা।
এর বাইরে নিলামে তোলা হয়েছে ৫টি হ্যারিয়ার, ১৩টি হাবাল, ৩টি করে স্কয়ার, প্রিমিও এবং নোয়া। এ ছাড়া ১টি করে রয়েছে র্যাভ-ফোর এবং ওসাকা ব্র্যান্ডের গাড়ি।
চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজের সহকারী কমিশনার মো. সাকিব হোসেন বলেন,
আশা করা যাচ্ছে এসব গাড়ি বিক্রি করে ১০০ কোটি টাকার বেশি রাজস্ব আদায় করা যাবে। তবে এটি পুরোটাই নির্ভর করছে বিডারদের ওপর। তারা যত বেশি দাম হাঁকাবে ততই বাড়বে রাজস্বের পরিমাণ।
চট্টগ্রাম বন্দরের কার শেডসহ বিভিন্ন পয়েন্টে বর্তমানে ৯০০-র বেশি আমদানি করা গাড়ি রয়েছে, যেগুলো নানা জটিলতার কারণে আমদানিকারক ছাড় করছেন না। এমনকি মামলার কারণে গাড়িগুলোও নিলামে তোলা যাচ্ছিল না। এতে বন্দরের শেডগুলোতে বাড়ছিল গাড়ির জট। শেষ পর্যন্ত চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজ কঠোরতার মধ্যে নিলাম প্রক্রিয়া শুরু করার পরপরই ৩১টি গাড়ি জরিমানা দিয়ে আমদানিকারক ছাড় করিয়ে নিয়েছেন।
চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজের উপকমিশনার মো. সাইদুল ইসলাম বলেন, গাড়িগুলোর ডিউটি ট্যাক্স অনেক বেশি। তারল্য সংকট ও বাজারে চাহিদা কম থাকায় অনেকেই এত টাকা দিয়ে গাড়িগুলো ছাড় করাতে আগ্রহী নয়। তবে নিলামে যাওয়ার হাত থেকে বাঁচাতে কেউ কেউ বাধ্য হয়ে গাড়ি ছাড় করিয়েছেন।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে অনুমোদন পাওয়ার পর নিলামে তোলা ১০০টি গাড়ির ইনভেন্ট্রি শেষ করার পর অন্তত ৫০টির ভ্যালু নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে বন্দরের খোলা শেডে পড়ে থাকা ৩০০ গাড়ি ইতোমধ্যে নষ্ট হয়ে গেছে। এই গাড়িগুলো নিলামের সিদ্ধান্ত না হওয়ায় দেখা দিয়েছে জটিলতা।
চট্টগ্রাম কাস্টম বিডার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. ইয়াকুব চৌধুরী বলেন, বন্দরের অভ্যন্তরের যেসব গাড়ি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, সেগুলো দ্রুত নিষ্পত্তি করতে হবে। এতে বাড়বে রাজস্ব আহরণ।
এদিকে দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রাম বন্দরের কার শেডে পড়ে থাকা ৩০টি সিমেন্ট মিক্সার মেশিন এবং ১০টি ডাম্পট্রাকও নিলামে বিক্রি করবে কাস্টম হাউজ।