একদিনে গ্যাসের তীব্র সংকট; অন্যদিকে রয়েছে নানামুখী সীমাবদ্ধতা। তারপরও চাঙ্গা রফতানি বাণিজ্য। কারণ- উৎপাদন ধরে রেখেছে এ দেশের হাজার হাজার উদ্যোক্তা।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ৫ মাসে অর্থনীতিকে স্বস্তি দিয়েছে রফতানি আয়। মোট রফতানি হয়েছে ২৪ বিলিয়ন ডলারের পণ্য। অর্থনীতির ভিতকে কিছুটা শক্ত করেছে রেমিটেন্স আয়। জুলাই থেকে ডিসেম্বর-এই ছয় মাসে প্রবাসী আয় এসেছে ১৪ বিলিয়ন ডলার। এর ফলে আমদানি ব্যয় মেটাতে স্বস্তি তৈরী হয়েছে। পাশাপাশি ঠেকানো গেছে রিজার্ভের পতন।
অর্থনীতিবিদ ড. মুস্তফা কে মুজেরি বলেছেন, অর্থনীতির স্বাভাবিক সচলতা ফিরিয়ে আনার জন্যে অর্থায়ন অত্যন্ত প্রয়োজন।
ভেঙ্গে পড়া ব্যাংক খাত টেনে তুলতে নেয়া হয়েছে নানান সংস্কার পদক্ষেপ। ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে ১১টি ব্যাংকের পর্ষদ। সরিয়ে দেয়া হয়েছে বিতর্কিত ব্যাংক এমডি ও চেয়ারম্যানদের। তবে, খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনা এখন বড় চ্যালেঞ্জ। লাফিয়ে বাড়তে থাকা মূল্যস্ফীতির সূচক এখন কিছুটা নিম্নমুখী।
জুলাই থেকে নভেম্বর-এই পাঁচ মাসে বাড়ে মূল্যস্ফীতি। তবে, ডিসেম্বর মাসে কিছুটা কমেছে পারদ। যদিও খাদ্য মূল্যস্ফীতি এখনও ১২ ভাগের বেশি। যা অস্বস্তির কারণ।
অর্থনীতিবিদ ড. মুস্তফা কে মুজেরি আরও বলেন, মূল্যস্ফীতি রোধে যেগুলো সহায়ক হবে, সেগুলোকে গুরুত্ব দিতে হবে। শ্রমবাজারে যারা আসছেন, তাদের যদি কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা না করা যায়, তাহলে কিন্তু সামাজিক অসন্তোষের সৃষ্টি হবে। সেই সাথে আমাদের উন্নয়ন প্রক্রিয়া এবং প্রবৃত্তিও ব্যাহত হবে।
রাজস্ব আহরণ বা অভ্যন্তরীণ আয়ে স্বস্তি নেই। বরং দিন দিন বাড়ছে ঘাটতি। অর্থবছরের পাঁচ মাসে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৪২ হাজার কোটি টাকা। গেল ছয় মাসে, উন্নয়ন ব্যয়ে লাগাম টেনেছে সরকার। একই সঙ্গে বেসরকারি খাতের উৎপাদন কমে যাওয়ায়, তলানিতে মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপি।
এফবিসিসিআই সাবেক সভাপতি মীর নাসির হোসেন বলেছেন, প্রত্যেকটি ইন্ডাস্ট্রি যেটা গ্যাসভিত্তিক, সেখানের সবাই ভুগছে। বিদ্যুতের একই অবস্থা। সেজন্যে, সামগ্রিক অবস্থার যদি উন্নয়ন না হয়, তাহলে শিল্পায়ন ব্যাহত হবে।
নতুন করে ডলারের উচ্চমূল্য আর্থিক খাতে নানামুখী চাপ তৈরী করতে পারে। পাচার করা অর্থ ফিরিয়ে আনাও সরকারের সামনে এখনও বড় চ্যালেঞ্জ।