ব্যাংক ঋণের সুদ নিয়ে তীব্র আপত্তি ব্যবসায়ীদের, রফতানি কমার শঙ্কা

ব্যাংক ঋণের সুদের হার বাড়ানোয় তীব্র আপত্তি জানাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। তাদের দাবি, এতে ব্যবসার খরচ বাড়ছে, যা মূলত বহন করতে হচ্ছে ক্রেতা কিংবা ভোক্তাকেই। এ ছাড়া প্রতিযোগিতা সক্ষমতা হারিয়ে রফতানি কমার শঙ্কাও দেখছেন তারা। অবশ্য ভিন্ন মত পোষণ করে ব্যাংকাররা বলছেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের স্বার্থে বাড়তি সুদ আপাতত মেনে নিতে হবে।

ব্যবসার খরচ কমানোর দোহাই দিয়ে তৎকালীন সরকারের সম্মতিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে চাপে ফেলে ২০২০ সালের এপ্রিলে ব্যাংক ঋণে নয়–ছয় সুদ বেঁধে দেয়ার ব্যবস্থা করেছিলেন ব্যবসায়ীরা। ২০২৩ সালের জুলাই মাসে এই সীমা তুলে দিলেও সুদহার বাজারভিত্তিক করেনি বাংলাদেশ ব্যাংক।

অন্তর্ববর্তী সরকার দায়িত্ব নিয়েই সুদ বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করতে চাইছে। ফলে নীতি সুদহার কয়েক দফা বাড়িয়ে করা হয়েছে ১০ শতাংশ। এতে ব্যাংক ঋণের সুদহার এখন ১৩ দশমিক ৫৫ শতাংশে ওঠে গেছে। যদিও এই হার কম বেশি ১৫ শতাংশ বলে জানাচ্ছেন ঋণগ্রহীতারা।

উচ্চ সুদহার ব্যবসার খরচ বাড়ানোর পাশাপাশি রফতানি আয়কেও বাধাগ্রস্ত করবে বলে শঙ্কা প্রকাশ করছেন ব্যবসায়ীরা।

বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) নির্বাহী সভাপতি ফজলে শামীম এহসান সময় সংবাদকে বলেন, ‘দেশের মানুষ খুব ভালো আছে। কিন্তু জিনসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে। মুদ্রাস্ফীতি বাড়লে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় নিম্ন আয়ের লোকেরা। আর রফতানি বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িতদের খুব বিপদে পড়তে হয়। প্রতিযোগিতায় টিকতে কঠিন হয়ে যাচ্ছে।’

তবে এমন শঙ্কার সঙ্গে একমত হতে পারছেন না ব্যাংকাররা। তাদের অভিযোগ, সুদহার বৃদ্ধির কারণে খরচ কত বাড়ছে তা কখনো খোলাসা করেন না ব্যবসায়ীরা।

ব্র্যাক ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যান ফারুক মাইনুদ্দিন বলেন, ‘তাদের মোট ব্যবসার খরচে সুদের হারের কত শতাংশ যায়, সেটা বলছে না। তাদের অনেকগুলো খরচ আছে। সেগুলো তারা বহন করছে। কিন্তু সুদের হারের কথা আসলে তারা বলেন, যে খরচ বেড়ে যাচ্ছে। তাই এটা যে ব্যবসায় মারাত্মক ক্ষতি করছে, সেটা আমি মনে করছি না। সামান্য ক্ষতি হয়, সেটা মানছি। কিন্তু মূল্যস্ফীতির স্বার্থে এটাকে আপাতত আমাদেরকে মেনে নিতে হবে।’

দীর্ঘ মেয়াদে উচ্চ সুদহার, ঋণের চাহিদা কমিয়ে ব্যাংকগুলোর মুনাফায় টান দিতে পারে। অন্যদিকে, সুদহার না বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বাজার সিন্ডিকেট ভাঙার পরামর্শ দিচ্ছেন ব্যবসায়ীর।

Scroll to Top