মুন্সীগঞ্জের মিরকাদিম মাছের আড়তে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে ইলিশ। মাত্র পাঁচদিনের ব্যবধানে কেজিতে ৪শ’ টাকা বেড়ে বড় ইলিশের দাম উঠেছে ২৫শ’ টাকা। এদিকে, চিংড়িতে নিষিদ্ধ জেলি ও শিং মাছে কাপড়ের রঙ মিশিয়ে বিক্রির অভিযোগ করেছেন ক্রেতারা।
মুন্সীগঞ্জের ধলেশ্বরী তীরের মিরকাদিম হাট। সাত সকালেই নানান ধরনের মাছের পাইকারি কেনাবেচা চলে এখানে। রুই, কাতল, আইড়, বোয়াল, মৃগেল, কৈ-শিংসহ স্থানীয় খালবিলের হরেক রকম মাছ ওঠে এ বাজারে।
অন্যান্য মাছের পাশাপাশি এখানে ইলিশের সরবরাহও বেশ উল্লেখ করার মতো। বাজারে মাছটির দাম সপ্তাহ না পেরোতেই বেড়েছে কেজি প্রতি ৪শ’ টাকা।
ইলিশের চড়া দামে ক্ষুব্ধ ক্রেতারা। তারা বলেন, ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে ভরা মৌসুমেও ইলিশসহ অন্যান্য মাছের বাজার অস্থির করে তুলছে। এতে ইলিশ খেতে পারছেন না সাধারণ মানুষ।
এদিকে, ইলিশ ছাড়াও রুই, আইড়, বোয়াল, শোল, পাঙ্গাস, শিং ও কৈসহ দেশি প্রজাতির মাছের পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকলেও দাম বেশি। বর্তমানে প্রতিকেজি নদীর পাঙাশ ৬০০-৯০০ টাকা, চাষের পাঙাশ ১৩০-১৮০ টাকা, নদীর রুই ৫০০-৯০০ টাকা, চাষের রুই ২৫০-৪৫০ টাকা, নদীর কাতল ৭০০-১০০০ টাকা, চাষের কাতল ৩০০-৫০০ টাকা ও কার্ফু ২০০-২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতিকেজি গলদা চিংড়ি ৮০০-১৩০০ টাকা, বাগদা চিংড়ি ৪০০-৬০০ টাকা, আইড় ৯০০-১৪০০ টাকা, চাষের কৈ ১৬০-১৯০ টাকা চাষের শিং ৩৫০-৪০০ টাকা, বোয়াল ৪০০-৮০০ টাকা ও পোয়া মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৫০-৩৫০ টাকায়।
হঠাৎ মাছের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে আড়তদারদের দাবি, নদী ও সাগরে ইলিশ ধরা পড়ছে কম। মুন্সীগঞ্জ মিরকাদিম মৎস্য আড়ত সমিতির সভাপতি হাজী রুহুল আমিন বলেন, বাজারে চাহিদার তুলনায় পর্যাপ্ত মাছ না আসায় বাড়ছে। ইলিশের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতায় বাইরে চলে যাচ্ছে।
এদিকে, চিংড়িতে নিষিদ্ধ জেলি ও শিং মাছে কাপড়ের রঙ মেশানোর অভিযোগ করেছেন ক্রেতারা। তারা বলেন, মাছের ওজন ও দেশি প্রমাণ করার জন্য মাছে জেলি ও রঙ ব্যবহার করছেন ব্যবসায়ীরা। যা শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।
তবে রঙ মেশানোর কথা স্বীকার করে বিক্রেতারা বলেন, যেখান থেকে মাছ উৎপাদন করা হয় সেখানেই রঙ ও জেলি পুশ করা হয় মাছে।
জেলা মৎস্য অফিসের তথ্য মতে, নদী বেষ্টিত মুন্সীগঞ্জে প্রতি বছর ৩১ হাজার মেট্রিক টন মাছ উৎপাদন হয়। এর মধ্যে ইলিশ উৎপাদন হয় প্রায় ১ হাজার মেট্রিক টন।
উল্লেখ্য, শত বছরের প্রাচীন এই হাটের ৪৫টি আড়তে ৪ হাজার মানুষ কাজ করেন। ধলেশ্বরী তীরের এই হাটে ২ থেকে ৩ ঘণ্টায় বিক্রি হয় প্রায় কোটি টাকার মাছ।