সাভার-গাজীপুর শিল্পাঞ্চলে দুমাস ধরে পোশাক শ্রমিকদের অসন্তোষ চললেও বন্দরনগরী চট্টগ্রামে পরিস্থিতি পুরো ব্যতিক্রম। বহিরাগতগত ছাড়াও অন্যদের উসকানি কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করায় এখানে শ্রমিক অন্দোলন শূন্যের কোটায়। গত ৬ আগস্ট থেকেই বন্দরনগরীতে ৬০০টির বেশি পোশাক কারখানায় চলছে নিরবচ্ছিন্ন উৎপাদন।
গত ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পরদিনই চট্টগ্রামে খুলে দেয়া হয় সব গার্মেন্টস কারখানা। প্রথম দিন হিসেবে ৬ আগস্ট শ্রমিক উপস্থিতির হার ৮০ শতাংশ হলেও ৭ আগস্ট শতভাগ শ্রমিক উপস্থিতি নিয়ে উৎপাদনে যায় কারখানাগুলো। এরপর থেকে কোনো রকম সংকট ছাড়াই চলছে তৈরি পোশাকের উৎপাদন। বেতন-ভাতা নিয়মিত পরিশোধ হওয়ায় শ্রমিকরাও সাচ্ছন্দ্যে কর্মস্থলে আসছেন, কাজ করছেন।
তবে সাভার, আশুলিয়া ও গাজীপুরের শ্রমিক অসন্তোষ মাথায় রেখে চট্টগ্রামের নিরাপত্তা সাজিয়ে নিয়েছে শিল্প পুলিশ। বিশেষ করে গোয়েন্দা তথ্যের মাধ্যমে ঠেকানো হয়েছে সব ধরনের গুজব এবং উস্কানিমূলক তৎপরতা। শ্রমিক অধ্যুষিত এলাকা হিসেবে পরিচিত ষোলশহর দুই নম্বর গেট, বায়েজিদ, শেরশাহ এবং অক্সিজেন এলাকায়ও নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম শিল্প পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ সুলাইমান জানান, শ্রমিক এবং মালিকদের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরির চেষ্ট করা হয়েছে। এছাড়া, জোরদার করা হয়েছে সব ধরনের নিরাপত্তাব্যবস্থা।
বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) দাবি, নাশকতা ঠেকাতে চট্টগ্রামের গার্মেন্টস মালিকরা যেমন প্রশাসনের সহযোগিতা পেয়েছেন, তেমনি নিজেরাও কারখানায় উপস্থিত থেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করছেন। আর শ্রমিক নেতারাও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন স্থিতিশীল পরিবেশ বজায় রাখার।
বিজিএমইএর সহ-সভাপতি রাকিবুল আলম চৌধুরী বলেন, দুষ্কৃতকারীদের শনাক্ত করা হয়েছে। শ্রমিক নেতা ও শ্রমিকদের সঙ্গে নিয়ে সব ধরনের ষড়যন্ত্র প্রতিহত করা হচ্ছে।
জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের চট্টগ্রাম বিভাগের সভাপতি এ এম নাজিম উদ্দিন বলেন, কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার তথ্য পেলে বা আশঙ্কা করা মাত্রই শ্রমিক, মালিক ও বিজিএমইএ নেতারা বসে আলোচনা করে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে। এটি অব্যাহত থাকবে।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম নগরীতে ৪৫৬টি গার্মেন্টস কারখানায় ১১ লাখের বেশি শ্রমিক কর্মরত রয়েছেন। এছাড়া, চট্টগ্রাম ইপিজেড, কোরিয়ান ইপিজেড এবং কর্ণফুলী ইপিজেডে গার্মেন্টস কারখানা আছে ১৫০টি। এগুলোতে শ্রমিকসংখ্যা দুলাখের মতো।