জুলাইয়ে বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রকল্পে বিদেশি ঋণ বিতরণ আগের বছরের চেয়ে প্রায় ১২ শতাংশ কমেছে।
প্রকল্প বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠানগুলো সাধারণত প্রতি মাসে বা অগ্রগতির ভিত্তিতে বিল জমা দেয়। এরপর সরকার বিল পরিশোধ করে এবং পরে বিদেশি সংস্থা ও দেশের কাছ থেকে পাওয়া ঋণ বিতরণ করে।
তাই বিদেশি ঋণ বিতরণের কমার অন্যতম একটি কারণ হতে পারে বাস্তবায়নকারী সংস্থাগুলোর অদক্ষতা।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) কর্মকর্তারা বলছেন, সাধারণত অর্থবছরের শুরুতে প্রকল্প বাস্তবায়নে ধীরগতি থাকে, ফলে ঋণ বিতরণ কমে যায়।
তারা আরও বলছেন, এছাড়া জুলাই জুড়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কারণে সৃষ্ট রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে কিছু প্রকল্পের বাস্তবায়নের গতি হয়তো কমে গেছে। এ কারণেও বিদেশি ঋণ বিতরণ কমতে পারে।
ইআরডির তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম মাসে ৩৫৮ মিলিয়ন ডলার বিদেশি ঋণ পেয়েছে বাংলাদেশ।
এর মধ্যে জাপান সর্বোচ্চ ১০৫ মিলিয়ন ডলার দিয়েছে, এরপর আছে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (৮১ দশমিক ৫৬ মিলিয়ন ডলার), ইউরোপীয় ইউনিয়ন (৬৪ দশমিক ৫৭ মিলিয়ন ডলার), বিশ্বব্যাংক (৩৮ দশমিক ৩৯ মিলিয়ন ডলার), রাশিয়া (২৯ মিলিয়ন ডলার) এবং ভারত (২১ দশমিক ৫৯ মিলিয়ন ডলার)।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব মেনে গত ২১ আগস্ট পর্যন্ত রিজার্ভ ছিল ২০ দশমিক ৪৮ বিলিয়ন ডলার।
এটি প্রায় তিন মাসের আমদানি বিল মেটানোর জন্য যথেষ্ট, যা একটি নিম্ন আয়ের দেশের জন্য আইএমএফের নির্ধারণ করে দেওয়া ন্যূনতম রিজার্ভ।
তবে জুলাইয়ে আসল ও সুদ মিলিয়ে বাংলাদেশ পরিশোধ করেছে ৩৮৫ মিলিয়ন ডলার, যা গত বছর ২৫৩ মিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে আসল ছিল ২৬৫ মিলিয়ন, গত বছর আসল ছিল ১৪৭ মিয়িলন ডলার। জুলাইয়ে সুদ পরিশোধ করা হয়েছে ১২১ মিলিয়ন ডলার, গত বছরের একই সময়ে যা ছিল ১০৬ মিলিয়ন ডলার।
এছাড়া জুলাইয়ে বিদেশি ঋণের প্রতিশ্রুতির পরিমাণ ছিল ১৬ দশমিক ৪০ মিলিয়ন ডলার, যা গত বছরের একই সময়ের ৬ দশমিক ৯২ মিলিয়ন ডলারের বেশি। সাধারণত উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে ঋণ চুক্তি হলে তাকে ঋণ প্রতিশ্রুতি হিসেবে বিবেচনা করা হয়।