রাজশাহীর পবা উপজেলার পারিলা ইউনিয়নের খড়খড়ি বাইপাস বাজারে তিনি থেকে পাঁচ গুণ বেশি খাজনা আদায়ের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার সকাল আটটার দিকে বাজার এলাকায় এ কর্মসূচির পাশাপাশি গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করেছেন শিক্ষার্থীরা। পারিলা ইউনিয়ন সর্বস্তরের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার ব্যানারে এসব কর্মসূচিতে স্থানীয় কৃষক ও ব্যবসায়ীরাও অংশ নেন।
স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিন ভোর থেকেই বাজারটিতে সবজি কেনাবেচার হাট বসে। স্থানীয় কৃষকেরা সরাসরি সেখানে সবজি এনে বিক্রি করেন। ব্যবসায়ীরা এসব সবজি কিনে রাজশাহীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করেন। বাজারটিতে খাজনা সর্বোচ্চ ৩০ টাকা হলেও আদায় করা হয় ১০০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত। এর প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে পুরো বাজার প্রদক্ষিণ করা হয়। পরে শিক্ষার্থী-জনতা ও ব্যবসায়ীরা সমাবেশে মিলিত হয়ে গণস্বাক্ষর কর্মসূচি শুরু করেন। গণস্বাক্ষরসহ একটি আবেদন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে জমা দেওয়া হবে।
রাজশাহীর বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দা মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘এই বাজারে ১০ টাকা, ২০ টাকা ও ৩০ টাকার খাজনার রসিদ আছে। তবে এসব রসিদ দিয়ে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত আদায় করা হয়। অনেক সময় রসিদ-ই দেওয়া হয় না। এতে করে বাজারে সবজি বিক্রি করতে আসা সাধারণ কৃষকেরা সবজির বিক্রির কিছু অংশ চাঁদাবাজির মধ্যে দিতে হয়। তাঁরা দীর্ঘদিন এই জুলুম সহ্য করেছেন। আর তাঁরা এটা হতে দেবেন না।’
খড়খড়ি বাজার থেকে সবজি কিনে ভ্যানে বিক্রি করেন মো. বাবু নামের এক ব্যক্তি। তিনি বলেন, এক ভ্যান সবজি কিনলে দিতে হয় ৬০ থেকে ১০০ টাকা। অথচ রসিদ দেয় মাত্র ৩০ টাকার। এ কারণে সবজির দাম বেশি পড়ে যায়। তিনি আরও বলেন, কাঁচা মরিচে কেজি প্রতি ৪ টাকাও খাজনা দিয়েছেন তিনি।
শিক্ষার্থীদের গণস্বাক্ষর কর্মসূচিতে স্বাক্ষর করেন স্থানীয় ব্যবসায়ী মো. সেন্টু। তিনি বলেন, যে পরিমাণ সবজিই কিনি না কেন, খাজনা দিতে হবে অন্তত ১০০ টাকা। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পরও গত শনিবার পর্যন্ত এ টাকা তাঁদের দিতে হয়েছে। তবে কয়েক দিন ধরে দিতে হচ্ছে না।
বাৎসরিক ৭০ লাখ টাকায় বাজারটির ইজারা নিয়েছেন পারিলা ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. মেহেদী হাসান (মন্টু)। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘৭০ লাখ টাকায় হাটের ইজারা নিতে তাঁর প্রায় দেড় কোটি টাকা খরচ হয়েছে। এমপি-মন্ত্রী তো আছেই। শিক্ষার্থীরা যে অভিযোগ তুলছেন, তা সত্য নয়। খাজনা তুলতে গেলে এদিক-সেদিক হতে পারে, কিন্তু কোনো জুলুম করা হয় না।’
মেহেদী হাসানের মতে, সরকার ক্ষমতা থেকে চলে যাওয়ার সুযোগে শিক্ষার্থীদের দিয়ে এটি কেউ করাচ্ছেন।
এসব বিষয়ে পবা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু সালেহ্ মোহাম্মদ হাসনাত বলেন, তিনি মৌখিকভাবে বিষয়টি জেনেছেন। এ ব্যাপারে শিক্ষার্থীদের একটি লিখিত আবেদন দিতে পরামর্শ দিয়েছেন। তাঁরা এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেবেন।