বিশ্ববাজারে তেলের দাম বেড়েছে, ফেডের ঘোষণা ও ভূরাজনৈতিক উত্তেজনার জের

মধ্যপ্রাচ্যে ভূরাজনৈতিক উত্তেজনার জেরে আজ সোমবার তেলের দাম বেড়েছে। হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েলের সংঘাত এবং সেই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ নীতি সুদহার কমাতে যাচ্ছে—মূলত এই দুটি কারণে তেলের দাম বেড়েছে।

আজ সকালে ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ব্যারেলপ্রতি ৩৭ সেন্ট বা শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ বেড়ে ৭৯ দশমিক ৩৯ ডলারে উঠেছে। সেই সঙ্গে ডব্লিউটিআই ক্রুডের দাম ব্যারেলপ্রতি ৩৬ সেন্ট বা শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ বেড়ে ৭৫ দশমিক ১৯ ডলারে উঠেছে। খবর রয়টার্স

গাজায় ইসরায়েলের হামলা শুরু হওয়ার পর বিশ্ববাজারে তেলের দাম যতটা বাড়বে বলে ধারণা করা হয়েছিল, বাস্তবে অতটা বাড়েনি। ইসরায়েলে হিজবুল্লাহ বাহিনীর শত শত রকেট ও ড্রোন হামলার মধ্যে এই সংঘাত পুরো মধ্যপ্রাচ্যে ছড়িয়ে পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইসরায়েলও পাল্টা হামলা চালাচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, এর মধ্য দিয়ে হিজবুল্লাহ বাহিনীর পৃষ্ঠপোষক হিসেবে পরিচিত ইরান ও ইসরায়েলের প্রধান পৃষ্ঠপোষক যুক্তরাষ্ট্র এই সংঘাতে জড়িয়ে পড়তে পারে।

এর আগে গত শুক্রবার ফেডারেল রিজার্ভের নীতি সুদ কমানোর সুস্পষ্ট ঘোষণা আসার পর তেলের বাজার চাঙা হয়। সেদিন ব্রেন্ট ক্রুড ও ডব্লিউটিআই ক্রুড উভয়ের দামই ২ শতাংশের বেশি বেড়েছে।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের নীতি সুদ কমতে যাচ্ছে—এই খবর আসার পর বিশ্বের সব পণ্যের বাজারেই একধরনের চাঙা ভাব এসেছে। বাজার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মনে করছেন, একবার সুদ কমতে শুরু করলে ধারাবাহিকভাবে তা কমবে। এই খবরে বাজারে একধরনের আত্মবিশ্বাস এসেছে। যদিও গত সপ্তাহে বিশ্বের বৃহৎ অর্থনীতির চাহিদা নিয়ে শঙ্কা তৈরি হওয়ায় তেলের দাম কমেছিল।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, স্ট্র্যাটেজিক পেট্রোলিয়াম রিজার্ভ বা কৌশলগত মজুতের জন্য তারা প্রায় ২ দশমিক ৫ মিলিয়ন ব্যারেল বা ২৫ লাখ ব্যারেল তেল কিনেছে। সেই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রিয়াশীল তেলখনির সংখ্যা গত সপ্তাহে অপরিবর্তিত ছিল।

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের আগে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম অনেক দিন নিম্নমুখী ছিল। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ১০০ ডলার ছাড়িয়ে যায়। ২০২২ সালের শেষভাগেই তেলের দাম আবার যুদ্ধের আগের অবস্থায় চলে আসে। এর পর থেকে দাম ওঠানামা করছে।

বাজারের মূল বিষয় হচ্ছে, চাহিদা ও জোগান। বিশ্ব অর্থনীতিতে একধরনের ধীরগতি থাকায় ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা ও ওপেকের উৎপাদন হ্রাসের পরও তেলের দাম খুব একটা বাড়েনি। এখনো তা ব্যারেলপ্রতি ৮০ ডলারের নিচে।

Scroll to Top