ড. আহসান এইচ মনসুরকে বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন গভর্নর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ব্যাংকিং বিভাগ সূত্র থেকে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। তিনি আবদুর রউফ তালুকদারের স্থলাভিষিক্ত হবেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের জন্য নির্ধারিত বয়সসীমা তুলে দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। আগে নির্ধারিত বয়সসীমা ছিল সর্বোচ্চ ৬৭ বছর।
গভর্নরের নিয়োগের ক্ষেত্রে নির্ধারিত বয়সসীমা তুলে দেওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংকের আদেশ সংশোধনের প্রস্তাব আজকের উপদেষ্টা পরিষদের সভায় রাখা হবে বলে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের উচ্চ পর্যায়ের সূত্র নিশ্চিত করেছে।
ড. মনসুর ১৯৭৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের প্রভাষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন।
বাংলাদেশের পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, একই বছর তিনি অর্থনীতিতে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের জন্য কানাডা চলে যান।
একজন স্নাতকোত্তর ছাত্র এবং গবেষণা সহকারী হিসেবে তিনি কানাডার ওয়েস্টার্ন অন্টারিও বিশ্ববিদ্যালয়ে (১৯৭৮-৮১) স্নাতক পর্যায়ে নিয়মিত অর্থনীতি কোর্সও পড়াতেন।
এরপর তিনি ১৯৮১ সালে ইকোনমিস্ট প্রোগ্রামের অধীনে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলে (আইএমএফ) যোগদান করেন এবং তারপরে ১৯৮২ সালে ওয়েস্টার্ন অন্টারিও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে পিএইচডি সম্পন্ন করেন।
আইএমএফ-এ তার দীর্ঘ কর্মজীবনে ড. আহসান এইচ মনসুর মধ্যপ্রাচ্য, এশিয়া, আফ্রিকা এবং মধ্য আমেরিকার বিভিন্ন দেশে কাজ করেছেন।
তিনি আইএমএফ-এর গুরুত্বপূর্ণ কার্যকরী বিভাগগুলোতে (রাজস্ব বিষয়ক ও নীতি পর্যালোচনা ও উন্নয়ন বিভাগ) এবং অঞ্চলভিত্তিক বিভাগগুলোতে (মধ্যপ্রাচ্য ও মধ্য এশিয়া এবং এশীয় বিভাগ) কাজ করেছেন। এছাড়াও তিনি ১৯৯৮ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত পাকিস্তানে আইএমএফ-এর সিনিয়র আবাসিক প্রতিনিধি এবং বাংলাদেশ সরকারের অর্থমন্ত্রীর (১৯৮৯-৯১) আর্থিক উপদেষ্টা হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
বাংলাদেশে তার নিয়োগের সময় ড. মনসুর প্রাথমিকভাবে ১৯৯১ সালে বাংলাদেশে মূল্য সংযোজন করের সফল প্রবর্তনের সাথে জড়িত ছিলেন।
সম্প্রতি তিনি উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদ (জিসিসি) বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং সৌদি আরব, কুয়েত ও ওমানে আইএমএফ মিশনের প্রধান ছিলেন।
আইএমএফ থেকে দ্রুত অবসর গ্রহণের পর নীতি বিশ্লেষণের লক্ষ্যে ও একটি ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে অন্যান্য পেশাদারদের সাথে সমন্বয় করে ড. মনসুর বাংলাদেশের পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক এবং নির্বাহী পরিচালক হিসেবে যোগদান করেন।
বিভিন্ন মর্যাদাপূর্ণ জার্নালে ড. মনসুরের অসংখ্য প্রকাশনা করেছেন রয়েছে। তিনি একজন বিশিষ্ট লেখক হিসেবে সুপরিচিত।