গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেছেন, তৃতীয় ও চতুর্থ প্রজন্মের ব্যাংকগুলো ক্লিনিক্যালি ডেড হয়ে গেছে। এগুলো বন্ধ করে দেওয়া উচিত। আবার কিছু কিছু ব্যাংক মরে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। মরে যাওয়ার উপক্রম হওয়া ব্যাংকগুলো চালানোর ইচ্ছা থাকলে পরিচালনা পর্ষদ পুর্নগঠন করতে হবে।
সোমবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে সিপিডি কার্যালয়ে ‘ব্যাংকিংখাতে সুশাসন ফিরিয়ে আনতে করণীয়’ নিয়ে আয়োজিত মিডিয়া ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় সিপিডির সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান, গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেমসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
ফাহমিদা খাতুন বলেন, পরিচালকদের সুবিধা দেওয়ার কারণে দুর্বল হয়েছে দেশের ব্যাংকিংখাত। দুর্বলতার কারণে ব্যবস্থা নেওয়া হয় না ইচ্ছাকৃত খেলাপিদের বিরুদ্ধেও। দুর্বল ব্যাংকগুলোকেও এক্সিট দিতে নীতিমালা তৈরি করতে হবে। ব্যাংক একীভূত করার আগে পুর্বশতগুলো পরিপালন করতে হবে।
তিনি বলেন, অর্থমন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ বন্ধ করে দেওয়া উচিত। এই আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে যেসব অনিয়ম হয়েছে সেগুলোর তদন্ত করা উচিত। গত ১৫ বছরে বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনররা যেসব সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিশেষ করে একটি গোষ্ঠীকে বিশেষ সুবিধা দিয়েছে। সেগুলোরও তদন্ত হওয়া উচিত। জড়িতদের শাস্তির আওতায় আনার ব্যবস্থা করতে হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের রির্জাভ চুরির তদন্ত প্রতিবেদন জমার সময় পেছানো হয়েছে ৭৯ বার। আগামী ৪ সেপ্টেম্বর আবার প্রতিবেদন জমা দেওয়ার সময় নির্ধারণ করা রয়েছে। সিআইডি প্রতিবেদন জমা দিলে সেটা জনগণের সামনে উন্মুক্ত করতে হবে।
ফাহমিদা খাতুন বলেন, গর্ভনর নিয়োগে বাংলাদেশ ব্যাংক আইন ২০০১ উপেক্ষা করে বর্তমান ও সাবেক সরকারি আমলাদের নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। অথচ আইনে স্পষ্ট বলা আছে- সরকারি কর্মকর্তারা গর্ভনর হতে পারবেন না। তাই অন্য জায়গা থেকে যোগ্য ব্যক্তিকে নিয়োগ দিতে হবে।
তিনি বলেন, অর্থঋণ আদালতে বিচারাধীন ৭২ হাজার ৫৪৩টি মামলায় ১ লাখ ৭৮ হাজার ২৭৭ কোটি আটকে আছে। আদালতের বাইরে খেলাপি ঋণ আদায়ের উদ্যোগ নিতে হবে। একই পরিবার থেকে একজনের বেশি পরিচালক দুই মেয়াদে ৬ বছরের বেশি সময় থাকতে পারবেন না- এমন বিধান আবারও চালু করতে হবে। এছাড়া নিয়মিতভাবে ইচ্ছাকতৃ খেলাপিদের তালিকা প্রকাশ করতে হবে। ইচ্ছাকৃত খেলাপিদের ব্যবহৃত এটিএম কার্ড ব্লক করতে ভিসা, মাস্টারসহ অন্যান্য কোম্পানির তালিকা পাঠাতে হবে। যাতে ইচ্ছাকৃত খেলাপিরা বিদেশে গিয়ে এসব কার্ড ব্যবহার করে লেনদেন করতে না পারে।