ভালো মৌলভিত্তিসম্পন্ন কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়ছে, শীর্ষে রবি

ঢাকার শেয়ারবাজারে আজ সকালেও সূচকের বড় উত্থান দেখা যাচ্ছে। দিনের লেনদেনের প্রথম পাঁচ মিনিটেই প্রধান সূচক ১০০ পয়েন্ট বেড়েছে। সেই সঙ্গে বাকি দুটি সূচকও ছিল ঊর্ধ্বমুখী।

দেশের শীর্ষস্থানীয় দুটি ব্রোকারেজ হাউসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আজও বাজারে ব্যক্তি শ্রেণির বিনিয়োগকারীরা বেশি সক্রিয়। সূচকের বড় উত্থানের আরেকটি কারণ হিসেবে তাঁরা বলছেন, ভালো মৌল ভিত্তিসম্পন্ন কোম্পানির দরবৃদ্ধি। শেয়ারবাজারের গত কয়েক বছরের ইতিহাসে এই ঘটনা বিরল; গত কয়েক বছরে মূলত দুর্বল মৌল ভিত্তিসম্পন্ন কোম্পানির দাপট দেখা গেছে।

প্রথমে সূচকের দ্রুত ঊর্ধ্বগতি দেখা গেলেও প্রথম ৪৫ মিনিটের পর তা কিছুটা কমেছে। প্রথম ৪৫ মিনিট লেনদেনের পর দেখা যাচ্ছে, প্রধান সূচক ডিএসইএক্সের উত্থান হয়েছে ৭৭ দশমিক ১৮ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৪২ শতাংশ। ডিএসইএস সূচকের উত্থান হয়েছে ১২ দশমিক ৮৯ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ০৯ শতাংশ আর ডিএস ৩০ সূচকের উত্থান হয়েছে ৩৪ দশমিক ৯২ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৮০ শতাংশ।

আজ দিনের প্রথম ৪৫ মিনিটে লেনদেনের শীর্ষে উঠে এসেছে টেলিকম কোম্পানি রবি; এই কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে মোট ১৩ কোটি ৮৩ লাখ টাকার। দ্বিতীয় স্থানে আছে বহুজাতিক কোম্পানি ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো; এই কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৯ কোটি ৭০ লাখ টাকার শেয়ার। তৃতীয় স্থানে আছে একমি ল্যাব; এই কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৬ কোটি ৪২ লাখ টাকার।

লেনদেন শুরুর কয়েক মিনিটের মধ্যে রবি ও গ্রামীণ ফোনের সর্বোচ্চ দরবৃদ্ধি হয়েছে। এই দুটি কোম্পানি বৃহৎ মূলধনী কোম্পানি। ফলে এসব কোম্পানির সর্বোচ্চ দরবৃদ্ধি হলে সূচকে তার বড় প্রভাব পড়ে; সে কারণে আজও সূচক ঊর্ধ্বমুখী।

এ ছাড়া স্কয়ার ফার্মসহ ভালো মৌল ভিত্তিসম্পন্ন কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়ছে; সূচকেও তার প্রভাব পড়ছে। গতকাল লেনদেনের শীর্ষে ছিল ট্রাস্ট ব্যাংক; আজ তার জায়গা নিয়েছে রবি।

গতকালের মতো আজও লেনদেনের প্রথম ৩০ মিনিটে সালমান এফ রহমানের মালিকানাধীন বেক্সিমকো ফার্মার শেয়ারের ক্রেতার স্বল্পতা দেখা গেছে। এই কোম্পানির শেয়ারের দাম সকালে সর্বোচ্চ তিন শতাংশ কমে গেছে, যদিও এই শেয়ারের বিশেষ ক্রেতা নেই।

শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগের পর গতকাল মঙ্গলবার শেয়ারবাজারে বড় ধরনের উত্থান হয়েছে। সেদিন লেনদেন শুরুর প্রথম ১৫ মিনিটের মধ্যেই দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৫২ পয়েন্ট বেড়ে যায়। বাজারে লেনদেন হওয়া অধিকাংশ শেয়ারেরই দাম বাড়ে; বৃদ্ধি পায় লেনদেনও। দিন শেষে ডিএসইএক্স সূচক ১৯৭ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়ায় ৫ হাজার ৪২৬ পয়েন্টে।

ঢাকার বাজারে গতকাল দিন শেষে লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৭৫০ কোটি টাকা। গত ১০ জুলাইয়ের পর অর্থাৎ প্রায় এক মাসের ব্যবধানে এটিই ছিল ঢাকার বাজারের সর্বোচ্চ লেনদেন।

বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীরা কিছুটা শঙ্কামুক্ত হয়েছেন। তাতে বাজারে ব্যক্তিশ্রেণির বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ বেড়েছে। এতে বাজারে কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ ছাড়াই বড় উত্থান হয়েছে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে গতকাল পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) খুব একটা দাপ্তরিক কাজ হয়নি।

সংগৃহিত

Scroll to Top