অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাসে কিছুটা পরিবর্তন আনলো এশিয়ান ডেভলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি)। নতুন প্রকাশিত এই পূর্বাভাসে উন্নয়নশীল এশিয়া এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর প্রবৃদ্ধি সামান্য বাড়ানো হয়েছে।
বুধবার (১৭ জুলাই) প্রকাশিত এই পূর্বাভাসে এই তথ্য জানায় সংস্থাটি।
চলতি বছরে উন্নয়নশীল এশিয়া এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৫ শতাংশ হবে বলে নতুন করে পূর্বাভাস দিয়েছে এডিবি। এর আগে এই প্রবৃদ্ধি ৪ দশমিক ৯ শতাংশ হওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছিল সংস্থাটি। এছাড়া পরবর্তী বছরের এই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি আগের পূর্বাভাস অনুযায়ী ৪ দশমিক ৯ শতাংশেই স্থির রাখা হয়েছে।
মূলত চলতি বছরে এ অঞ্চলের দেশীয় চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়ে রফতানির পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে মনে করে এডিবি। এ জন্য এ বছরে দেশগুলোতে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিও বাড়তে যাচ্ছে।
পাশাপাশি বিশ্ববাজারে খাদ্যপণ্যের দাম ধীরে ধীরে সহনশীল পর্যায়ে নিয়ে আসা এবং উচ্চ সুদহারের দীর্ঘস্থায়ী প্রভাবের জন্য এ অঞ্চলের মুদ্রাস্ফীতিও কমে ২ দশমিক ৯ শতাংশে নেমে আসবে বলে মনে করা হচ্ছে।
মহামারি পরবর্তী সময়ে দেশগুলোতে অভ্যন্তরীণ চাহিদা সমন্বয় করতে পারার কারণে অর্থনৈতিক গতি ফিরে আসছে বলে মনে করছে সংস্থাটি। তাছাড়া মহামারির পরে রফতানি কার্যক্রম ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাওয়ার কারণেও, এ অঞ্চলের অর্থনীতিকে পুনরুদ্ধার দ্রুত হচ্ছে বলে জানায় এডিবি।
এ ব্যাপারে এডিবির প্রধান অর্থনীতিবিদ আলবার্ট পার্ক বলেন, গত বছরের দ্বিতীয়ার্ধের তুলনায় এ বছরের একই সময়ে এশিয়া এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অধিকাংশ দেশের দ্রুত প্রবৃদ্ধি ঘটছে। তবে এখনও কিছু ঝুঁকি রয়েছে, সেক্ষেত্রে নীতি-নির্ধারকদের আরও সচেতন হতে হবে। বিশেষ করে, নির্বাচনের কারণে অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং সুদহারের সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে আরও লক্ষ্য রাখা প্রয়োজন।
দক্ষিণ এশিয়া, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বিরূপ আবহাওয়া এবং খাদ্যপণ্য রফতানিতে বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞার জন্য এখনও খাদ্য মূল্যস্ফীতি অনেক বেশি। তবে এ অঞ্চলের মধ্যে ভারত এখনও সবচাইতে বেশি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি দেখিয়েছে, ২০২৪ অর্থবছরেও অপরিবর্তিত ৭ শতাংশ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বজায় রেখেছে দেশটি। এ ক্ষেত্রে ভারতের শিল্পখাত আরও শক্তিশালী হবে বলে ধারণা করছে সংস্থাটি।
এর আগে গত ১১ এপ্রিলে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে উঠে আসে ২০২৩ সালে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ছিল ৫ দশমিক ৮ শতাংশ। যা ২০২৪ সালে বেড়ে দাঁড়াবে ৬ দশমিক ১ শতাংশে এবং ক্রমান্বয়ে বেড়ে ২০২৫ সালে এই প্রবৃদ্ধি গিয়ে দাঁড়াবে ৬ দশমিক ৬ শতাংশে।
সেইসঙ্গে মূল্যস্ফীতির ক্ষেত্রে উল্টো চিত্র ঘটবে বলে জানিয়েছিল এডিবি। ২০২৩ সালে দেশের সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ শতাংশ, যা কমে ২০২৪ সালে ৮ দশমিক ৪ শতাংশ হবে বলে জানানো হয়েছিল। পরবর্তী অর্থবছরে (২০২৪-২৫) এর পরিমাণ আরও কমে ৭ শতাংশে নামবে বলে জানিয়েছিল এডিবি।
চলতি অর্থবছরে ভারতের সর্বোচ্চ ৭ শতাংশের পরে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ হিসেবে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছিল এডিবি।