ভারতের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান রেল ইন্ডিয়া টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকনোমিক সার্ভিসের (আরইটিইএস) কাছ থেকে ব্রডগেজ লাইনের জন্য ২০০টি যাত্রীবাহী বগি সংগ্রহ করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ রেলওয়ে।সোমবার বিকালে রেলভবনের যমুনা মিলনায়তনে এ সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।
চুক্তি অনুযায়ী, ২০ মাস পর থেকে বগি দেওয়া শুরু হবে, যা চলবে ৩৬ মাস পর্যন্ত। অনুষ্ঠানে রেলমন্ত্রী জিল্লুল হাকিম বলেন, “আমাদের ক্যারেজের খুব সমস্যা। এই মুহূর্তে আপনারা (ভারতীয়) যে ক্যারেজ দিচ্ছেন এর জন্য ধন্যবাদ। ভারত আমাদের পরীক্ষীত বন্ধু। চুক্তিতে ক্যারেজ কবে দেওয়া হবে সেই সময় নেই, এটা করলে আমাদের সুবিধা হবে।
“আমরা সেই অনুযায়ী পরিকল্পনা করতে পারি। আগামী দুইমাসের মধ্যে যদি দুই সেট ক্যারেজ দেওয়া যায় তবে সেটা আমাদের জন্য ভালো হবে। বাকিগুলো শিডিউল করে নিলে হবে।”
রেলের কর্মকর্তাদের ভূমিকা প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, “রেলের কর্মকর্তারা স্লো, এটা আমার জন্য দুঃখজনক। তারা ভাবে, এটা ৫ থেকে ৬ মাস লাগবে। আরও আগে আনা যায় কি না, সেটি তারা ভাবে না। আমাদের আরও বগি লাগবে।”
রেলসচিব হুমায়ুন কবীর বলেন, “সাম্প্রতিক সময়ে দক্ষিণ অংশে রেলের সংযোগ স্থাপন হয়েছে। এতে করে ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণের জেলাগুলোর যোগাযোগ বাড়ছে। এর ফলে এসব প্যাসেঞ্জার ক্যারেজ (নতুন বগি) রেল যোগাযোগকে ত্বরান্বিত করবে।”
অনুষ্ঠানে রেলওয়ে মহাপরিচালক সরদার সাহাদাত আলী বলেন, “রেলের লক্ষ্য হচ্ছে যোগাযোগ পরিধি বাড়ানো, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে রেল সংযোগ স্থাপন করা, যাত্রীসেবা দেওয়া। আর এই প্রকল্পের মাধ্যমে সেটা অনেকাংশে সম্ভব হবে।”
রেলওয়ে জানিয়েছে, ২০০ বগি সংগ্রহের প্রকল্পে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ২৯৮ কোটি ৫৮ লাখ ৭৭ হাজার ১৩৯ টাকা (ডলার ১১৬ টাকা ৭১ পয়সা)। তার মানে প্রতিটি বগির দাম পড়বে ৬ কোটি ৪৯ টাকা।
এ প্রকল্পের মেয়াদ ২০২২ সালের ১ জুলাই থেকে ২০২৬ সালের ৩০ জুন। বাংলাদেশ সরকার ও ইউরোপিয়ান ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (ইআইবি) যৌথভাবে প্রকল্পটিতে অর্থায়ন করছে।
প্রথমে ম্যাটিরিয়াল চার্জ হিসেবে অর্থ দিবে ইআইবি। বগিগুলো দেশে আসার পর চট্টগ্রাম বন্দর থেকে সেটি খালাস বাবদ ৩৫ শতাংশ অর্থ খরচ হবে। এই অর্থ দিবে বাংলাদেশ সরকার, যার পরিমাণ প্রায় ৩০৩ কোটি টাকা।
বগিগুলো হবে স্টেইনলেস স্টিলের, দ্রুত গতি সম্পন্ন। এসি থাকবে বগির ছাদে, অটোমেটিক এয়ার ব্রেক পদ্ধতি ও পরিবেশবান্ধব হবে। এসব বগি দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ট্রেনগুলোর সঙ্গে যুক্ত করা হবে বলে জানিয়েছে রেলওয়ে।
চুক্তি সাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রেলমন্ত্রী জিল্লুল হাকিম, রেলপথ সচিব হুমায়ুন কবীর, মহাপরিচালক সরদার সাহাদাত আলী, আরইটিইএসের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাহুল মিত্তাল, ভারতীয় রেলওয়ের প্রোডাকশন ইউনিটের অতিরিক্ত সদস্য সঞ্জয় কুমার পংকজ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের হেড অব ডেভেলপমেন্ট মিচেল ক্রেজা।