চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৪৩টি পণ্য ও খাতকে রপ্তানির বিপরীতে ভর্তুকি বা নগদ সহায়তা দেয়া হবে। তবে এসব পণ্যের রপ্তানিতে নগদ সহায়তা কমিয়েছে সরকার। খাতভেদে সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ পর্যন্ত এ সহায়তা কম পাবেন রপ্তানিকারকরা। গত অর্থবছরে ১ থেকে সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ হারে এ নগদ সহায়তা পেয়েছিলেন রপ্তানিকারকরা। আর এ বছর জুন পর্যন্ত রপ্তানিকারকরা সর্বোচ্চ ১৫ শতাংশ প্রণোদনা পাবেন।
গত মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত সার্কুলার জারি করা হয়েছে।
সার্কুলারে বলা হয়েছে, দেশের রপ্তানি বাণিজ্যকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে সরকার চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৪৩টি খাতে রপ্তানির বিপরীতে রফতানি প্রণোদনা বা নগদ সহায়তা দিয়েছে। ডব্লিউটিওর বিধিবিধান অনুসারে বিষয়টি রপ্তানিনির্ভর সাবসিডি (সাবসিডি কন্টিনজেন্ট আপন এক্সপোর্ট পারফরমেন্স) হিসেবে বিবেচিত হয় এবং এগ্রিমেন্ট অন সাবসিডিস অ্যান্ড কাউন্টারভেইলিং মেজার্স (এএসসিএম) অনুযায়ী স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণ হলে কোনোরূপ রফতানি প্রণোদনা বা নগদ সহায়তা দেওয়া যাবে না।
২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বাংলাদেশের উত্তরণ ঘটতে যাচ্ছে উল্লেখ করে সার্কুলারে বলা হয়েছে, উত্তরণ পরবর্তী সময়ে রপ্তানি প্রণোদনা বা নগদ সহায়তা সম্পূর্ণভাবে একত্রে প্রত্যাহার করা হলে রফতানি খাত চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে পারে। তাই ১ জানুয়ারি থেকে বিভিন্ন খাতে নগদ সহায়তার হার অল্প অল্প করে কমিয়ে আনার বিষয়ে সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এ সিদ্ধান্ত অনুসারে ১ জানুয়ারি থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত সময়ে জাহাজিকরণ করা পণ্যের ক্ষেত্রে বিদ্যমান ৪৩টি খাতে রপ্তানি প্রণোদনা বা নগদ সহায়তার জন্য নতুন প্রণোদনার হার নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এর মধ্যে রপ্তানিমুখী দেশীয় বস্ত্রখাতের শুল্ক বন্ড ও ডিউটি ড্র-ব্যাকের পরিবর্তে বিকল্প নগদ সহায়তা কমিয়ে ৪ শতাংশ থেকে করা হয়েছে ৩ শতাংশ। ইউরো অঞ্চলে বস্ত্রখাতের রপ্তানিকারকদের জন্য বিদ্যমান ৩ শতাংশের অতিরিক্ত বিশেষ সহায়তা ১ শতাংশ, রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক খাতের (নিট, ওভেন ও সোয়েটার) অন্তর্ভূক্ত সব ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের অতিরিক্ত সুবিধা ৪ শতাংশ, নতুন পণ্য/নতুন বাজার (বস্ত্রখাত) সম্প্রসারণ সহায়তা (আমেরিকা/কানাডা/ইইউ/ইউকে/ভারত/জাপান/অস্ট্রেলিয়া ছাড়া) ৩ শতাংশ এবং তৈরি পোশাক খাতের বিশেষ নগদ সহায়তা ১ শতাংশ থেকে কমিয়ে করা হয়েছে শূন্য দশমিক ৫০ শতাংশ। এগুলোসহ মোট ৪৩টি খাতের রপ্তানি প্রণোদনা ও নগদ সহায়তা কমিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এদিকে সরকারের এই সিদ্ধান্তে নাখোশ ব্যবসায়ীরা। বিশেষ করে তৈরি পোশাক মালিকরা বলছেন, সংকটে থাকা পোশাক খাত এতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বেতন বৃদ্ধি এবং বিদ্যুৎ-গ্যাস সংকটের মধ্যে এই সিদ্ধান্ত তাদের নতুন করে বেকায়দায় ফেলবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।