থামলো পেঁয়াজ, ছুটছে আদা-রসুন

সরবরাহ বৃদ্ধির ফলে নিম্নমুখী পেঁয়াজের দর। তবে পেঁয়াজের দাম কমার ফলে যেখানে ভোক্তাদের একটু স্বস্তি মেলার কথা সেখানে অস্বস্তি হয়ে বাড়তে শুরু করেছে আদা রসুনের দাম। গেল তিন থেকে চারদিনের ব্যবধানে ঢাকার বাজারে প্রতি কেজি আদার দর বেড়েছে প্রায় ৪০ টাকা ও রসুনের দাম বেড়েছে প্রায় ৫০ টাকা।

আজ বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, যেখানে চার দিন আগে রাজধানীর খুচরা বাজারে দেশি রসুনের কেজি বিক্রি হয়েছিল ২০০ থেকে ২১০ টাকা, সেই দেশি রসুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ২৬০ টাকা দরে। সেই হিসেবে চার দিনে বেড়েছে ৫০ টাকা। একইভাবে বড় আকারের চায়না রসুন কেজিতে ৪০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৪০ টাকা। যা ১৮০ থেকে ২০০ টাকার মধ্যে ছিলো।

একইভাবে বাজারে দেশি আদা বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকায় আর আমদানি করা আদার দাম ২০০ থেকে ২৪০ টাকায়। যা গত সপ্তাহের তুলনায় ৪০ টাকা পর্যন্ত বেশি।

রামপুরা বাজারে আদা-রসুন বিক্রেতা খালেক মিয়া বলেন, কয়েকদিন থেকে আদা-রসুনের বাজার বাড়তি। কি কারণে দাম বাড়ছে জানিনা, আমরা বেশি দামে কিনছি তাই বেশি দামে বিক্রি করি।

তবে শ্যামবাজারে এস এম ট্রের্ডাসের স্বত্বাধিকারী ফারুক হোসেন বলেন, চীনে আদার-রসুনের দাম বৃদ্ধি ও দেশে ডলারের দাম বাড়ার কারণে এখন দাম বাড়ছে। এছাড়া দেশি রসুনের মৌসুম শেষ। সে কারণে যোগান কম।

এদিকে সরকারি সংস্থা টিসিবির হিসাবে দেখা গেছে, এক বছরের ব্যবধানে দেশি রসুনের ২৪০ শতাংশ এবং আমদানি করা চায়না রসুনের ৯৫ শতাংশ দাম বেড়েছে। একইভাবে দেশি আদা ২০০ শতাংশ এবং আমদানি করা আদা ৮৫ শতাংশ বেড়েছে।

কারওয়ান বাজারে বেশ কয়েক বছর থেকে আদা-রসুন পাইকারি বিক্রি করেন করিম হোসেন। তিনি বলেন, প্রতি বছর মৌসুমের শেষে আদা রসুনের দাম বাড়ে। তবে এ বছর অনেক আগে থেকে দাম একটু একটু করে বাড়ছে। দেশে আদা-রসুনের মৌসুম ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি থেকে এপ্রিলের মাঝামাঝি পর্যন্ত। ফলে নতুন পণ্য আসতে এখনও দীর্ঘ সময় বাকি। এর মধ্যে আমদানি ব্যাহত হলে বাজার আরও চড়া হতে পারে।

কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, দেশে রসুনের চাহিদা রয়েছে ৭ লাখ ১০ হাজার টন। এর বিপরীতে গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে উৎপাদন হয়েছে ৬ লাখ ৪৮ হাজার ৩০০ টন। আর আদার চাহিদা প্রায় ৩ লাখ ৭১ হাজার ৩৩৫ মেট্রিক টন, উৎপাদন ১ লাখ ৯৩ হাজার টন। এদিকে এই দুই পণ্যের উৎপাদনের পর তা সংরক্ষণ করা পর্যন্ত কমবেশি ২০ শতাংশ নষ্ট হয়ে যায়।

ফলে অর্ধেকের বেশি ঘাটতি থেকে যায়। যা আমদানির মাধ্যমে পূরণ হয়ে থাকে। আর আদা-রসুনের আমদানির দুই-তৃতীয়াংশ আসে চীন থেকে। বাকিটা আসে ভারত, মিয়ানমারসহ অন্য দেশ থেকে।

 

Scroll to Top