ব্রয়লার মুরগির দাম অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে ৩০০ ছুঁই ছুঁই

দ্রব্যমূল্য প্রতিনিয়ত বাড়ছেই। রমজান মাস সামনে রেখেও ফিরছে না বাজারে স্থিতিশীলতা। সাধারণ ব্যবসায়ীরা মনে করেন, একশ্রেণির অসাধু চক্র বা বাজার সিন্ডিকেটের জন্য অনেকাংশে দায়ী। তবে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বারবারই বলছে, রমজানে সব পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখা হবে। দেশে খাদ্যপণ্যের পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে। নিয়মিত বাজার মনিটরিং করা হবে। কিন্তু বাস্তব চিত্র ভিন্ন।

বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যাচ্ছে, প্রতিদিনই কোনো না কোনো খাদ্যপণ্যের দাম বাড়ছে। সবশেষ ২৪ ঘণ্টায় বাজারে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিপ্রতি ২০ থেকে ২২ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এর আগের দিন গত শনিবারও কেজিতে দাম বাড়ে ৭-৮ টাকা। সে হিসাবে গত শুক্রবারের পর অর্থাৎ তিনদিনে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিপ্রতি ৩০ থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।

গত শুক্রবার প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ২৫০ থেকে ২৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। সোমবার (২০ মার্চ) তা বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ২৯০ টাকা পর্যন্ত। বিক্রেতারা বলছেন, সরবরাহ কম থাকায় এমনিতেই মুরগির সংকট। তার ওপর গত দুই দিনে বৃষ্টিতে সরবরাহ আরো কমেছে। এ কারণে বাজারে দাম বেড়ে গেছে। তবে এক্ষেত্রে করপোরেট কোম্পানিগুলোর বাজার নিয়ন্ত্রণের বিষয়টিও তাদের কথায় উঠে আসে।

বাজার সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ব্রয়লার মুরগির বর্তমান দাম অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে ব্রয়লার মুরগির দাম বাড়তে বাড়তে এখন প্রতি কেজি প্রায় স্বাভাবিক দামের থেকে ১২০ থেকে ১৩০ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। মাসখানেক আগেও প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম ছিলো ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা।

খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এতোটা বাড়তি দামে ব্রয়লার মুরগি কখনো বিক্রি হয়নি। ব্রয়লারের দাম বাড়ার কারণে এখন বেড়েছে সোনালি ও কর্কসহ দেশি মুরগির দামও। দেশি মুরগির দাম সাধারণের নাগালের বাইরে গেছে অনেক আগেই।

খামারিরা জানিয়েছেন, উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি ও অনেক খামার বন্ধ হওয়ায় বাজারে ডিম ও মুরগির সংকট দেখা দিয়েছে। তাতে প্রকৃতপক্ষেই দাম কিছুটা বেড়েছে। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী দাম আরো বাড়াচ্ছেন।

বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুমন হাওলাদার বলেন, খাদ্য ও বাচ্চার মূল্যবৃদ্ধির ফলে মুরগির দাম বেড়েছে। তবে এখনকার দাম মাত্রাতিরিক্ত। এতো বেশি দামে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হোক, সেটি আমরাও চাই না। কারণ প্রান্তিক খামারিরা বাড়তি দাম পাচ্ছেন না। এ মুনাফা নিয়ে যাচ্ছে করপোরেট কোম্পানিগুলো। তারা প্রতিদিনের দাম নির্ধারণ করেন। বাজার নিয়ন্ত্রণ করেন।

এদিন বাজারে গরুর মাংস প্রতি কেজি ৭৫০ টাকা আর খাসির মাংস প্রতি কেজি এক হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।