দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে শুরু হয়েছে মালয়েশিয়া কর্মী যাওয়া। জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) ছাড়পত্র নিয়ে ৫৩ জন কর্মীর প্রথম দলটি গতকাল সোমবার দিবাগত রাতে ঢাকা থেকে কুয়ালালামপুরের উদ্দেশে যাত্রা করে।
মঙ্গলবার ভোর ৫টা ২২ মিনিটে এয়ার এশিয়ার একটি ফ্লাইট বাংলাদেশ থেকে ৫৩ জন কর্মী নিয়ে কুয়ালালামপুর বিমানবন্দরে অবতরন করে। বিমানবন্দরে উপস্থিত থেকে তাদের স্বাগত জানান মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাই কমিশনার গোলাম সারোয়ার। এই সময়ে হাই কমিশনের শ্রম উইংয়ের মিনিস্টার নাজমুস সাদাত সেলিমসহ মালয়েশিয়ার মানব সম্পদ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা ও দুই দেশের সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের আগস্টে মালয়েশিয়ার পক্ষ থেকে বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগ বন্ধের ঘোষণা আসে। দীর্ঘ আলোচনা-যোগাযোগের পর গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর দুই দেশের মধ্যে এ সংক্রান্ত একটি সমঝোতা সই হয়। পরে গত জুন মাসে ঢাকায় যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকে শ্রমবাজার খোলার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়। একই সঙ্গে জুনের মধ্যে মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর বিষয়ে ঘোষণা দেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ। কিন্তু দীর্ঘসূত্রতা কিছুতেই পিছু ছাড়ছিল না মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারের। সব দীর্ঘসূত্রতা কাটিয়ে অবশেষে দেশটিতে যাচ্ছেন বাংলাদেশি কর্মীরা।
বিএমইটি সূত্র বলছে, ক্যাথারসিস ইন্টারন্যাশনালের মাধ্যমে এসব কর্মী ফ্যাক্টরি ওয়ার্কার হিসেবে মালয়েশিয়ায় গেলেন। তাদের বেতন ১৫০০ মালয়েশিয়ান রিংগিত, বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ৩২ হাজার টাকা। শর্ত অনুসারে তাদের চুক্তি তিন বছরের। ওয়ান ওয়ে প্লেন ভাড়া, বাসস্থান ও যাতায়াত ফ্রি পাবেন কর্মীরা। তবে খাবার ব্যবস্থা করতে হবে নিজেকে।
দীর্ঘ চার বছরের অচলায়তন ভেঙে মালয়েশিয়ার নতুন করে বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগ শুরু হওয়াতে হাই কমিশনার গোলাম সারোয়ারে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে বাংলাদেশে ও মালয়েশিয়ার সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
আশা করা যাচ্ছে যে, আগামী তিন বছরের মধ্যে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের প্রায় ৫ লক্ষাধিক নতুন লোকের কর্মসংস্থান হবে এবং এর মাধ্যমে মালয়েশিয়া থেকে বাংলাদেশের প্রেরিত মোট রেমিট্যান্স তিন বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করবে।