রমজানের দিনক্ষণ যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই বেড়ে চলেছে নিত্যপণ্যের দাম। বিভিন্ন ধরনের চাউলের দাম বৃদ্ধির পাশাপাশি এবার দেশি পিয়াজও মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত ক্রেতাদের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। কয়েকদিনের ব্যবধানে দেশিপিয়াজের দাম ১০ থেকে ১৫ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। সর্বশেষ গতকাল শনিবারও ক্রেতারা খুচরা বাজার থেকে সর্বনিম্ন ৫০ টাকায় পিয়াজ ক্রয় করছেন বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।
পাইকারী ব্যবসায়ীরা পিয়াজের দামের বিষয়ে বলেন, বর্তমানে হিলিতে ভারতীয় পিয়াজ না থাকায় দেশি পিয়াজের ওপর চাপ পড়েছে বেশি। খুচরা বাজারে তেমন দেখা যাচ্ছে না পিয়াজ। পাশাপাশি বাজারে দেশিও পিয়াজের সরবরাহও কম। তাই চট্টগ্রামের বাজারসহ বিভিন্ন বাজারে পিয়াজের দাম বেড়ে গেছে।
ব্যবসায়ী ও খুচরা ক্রেতা সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম নগরীর পাহাড়তলী ও ঈদগা কাঁচাবাজারের পাশাপাশি চকবাজার, বহদ্দারহাট, ২নং গেইট, কাজির দেউরিসহ বিভিন্ন খুচরা দোকানে আগেরই তুলনায় ১০-১৫ টাকা বেশি দামে কিনতে হচ্ছে পিয়াজ। এতে ক্রেতারা যেমনি ক্রয়ের ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে, ঠিক তেমনি খুচরা বিক্রেতারাও পাইকারী থেকে বেশি দামে ক্রয় করার কারণে অনিশ্চাসত্ত্বেও বেশি দামে বিক্রয় করতে হচ্ছে। হিলিতেও পিয়াজের দাম বেড়েছে। সেখানেই ৩৫ টাকায় বিক্রি হওয়া দেশি পিয়াজ এখন ৪০-৪৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। তারপর চট্টগ্রামের মোকাম হয়ে খুচরা বাজারে আসতে আসতে দাম বেড়ে ৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি চট্টগ্রামের পাহাড়তলী, খাতুনগঞ্জসহ বিভিন্ন স্থানে খুচরা বাজারে দেশি রসুন ৫০, আমদানি রসুন ১২০ ও দেশি আদা ১০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
শীর্ষ এক সংবাদ মাধ্যমকে চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ আড়তদার ও সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, রমজানকে সামনে রেখেই প্রতি বছরের ন্যায় এবারও পিয়াজ-রসুন-আদার দাম কিছুটা বাড়তে পারে। রমজান যতই ঘনিয়ে আসছে, পিয়াজ-রসুনের বাজার ততই অস্তির হয়ে উঠছে।
তিনি বলেন, বাজারে কিছু অসাধু ব্যবসায়ীদের চক্র রয়েছে। তারাই মূলত এই বাজার উত্তান-পতনের চেষ্টা করে। তাছাড়া চলমান করোনার সময়ে সাধারণ ক্রেতারা আর্থিকভাবে নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে সরকার আন্তরিক এবং চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের কঠোর মনিটরিং থাকলে দাম নিয়ন্ত্রণে থাকবে বলে জানান তিনি।
এস এম নাজের হোসাইন যিনি কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি দেশের শীর্ষ এক সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, বাজার নিয়ন্ত্রণে না থাকলে রমজানের মধ্যেও পিয়াজসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম অস্থিতিশীল অবস্থার মধ্যে থাকবেই। তবে সুষ্ঠুভাবে মনিটরিং না হলে আবারও দাম বৃদ্ধি হবে।
এদিকে, চলতি শীতের মৌসুম প্রায় শেষ হওয়ায় সবজি চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। বাজারে প্রতি কেজি সিম-বেগুন ৪০ থেকে ৫০, ফুলকপি-বাঁধাকপি-শসা ৩০, মরিচ ৩০ থেকে ৪০, চাল কুমড়া ৪০ থেকে ৫০, মূলা ২০ এবং গাজর-টমেটো ৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। তাছাড়া প্রতি কেজি রুই-কাতল-শিং-টাকি ২৫০ থেকে ৩০০’, তেলাপিয়া ও পাঙ্গাস ১৫০, চিংড়ি ৬০০ ও বড় সাইজের ইলিশ ১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
অন্যদিকে, মুরগি বিক্রি হচ্ছে আগের দরেই। বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৫০ থেকে ১৫৫ টাকা, পাকিস্তানি কক মুরগি ২৫০ থেকে ২৬০ ও দেশি মুরগি ৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।