ক্যাভেন্ডিস গ্রুপের ‘জি-নাইন’ কলা দেশে কলা চাষে বিপ্লব আনতে পারে। পৃথিবীতে যে ধরণের কলা মানুষ বেশি খেয়ে থাকে- সেগুলো ক্যাভেন্ডিস নামে পরিচিত।
প্রতি একরে ১১০০ থেকে ১৪০০টি জি-নাইন কলার চারা লাগানো যায়। শতভাগ গাছের কলা কাটার উপযোগী হয় চারা লাগানোর ১১ থেকে ১৫ মাসেই। প্রতি কাঁদি কলার ওজন হয় ৩০ থেকে ৪০ কেজি। একবার চারা লাগানোর পর ৩ থেকে ৪ বছর চারা লাগাতে হয় না। তাতেও ফলন প্রায় একই হয়ে থাকে।
নরসিংদী, মুন্সীগঞ্জ, ময়মনসিংহ, যশোর, বরিশাল, বগুড়া, রংপুর, জয়পুরহাট, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুরসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপকভাবে কলার চাষ হয়ে আসছে। সারা বছর দেশের প্রায় সব অঞ্চলে উঁচু জমিতেই কলা চাষ করা যায়।
বছরে তিন মৌসুমে কলার চারা রোপণ করা যায়। প্রথম মৌসুম মধ্য জানুয়ারি থেকে মধ্য মার্চ। দ্বিতীয় মৌসুম মধ্য মার্চ থেকে মধ্য মে। তৃতীয় মৌসুম মধ্য সেপ্টেম্বর থেকে মধ্য নভেম্বর। উত্তম মৌসুম হলো তৃতীয় মৌসুম। কলা চাষে টিস্যু কালচার একটি উত্তম পদ্ধতি। টিস্যু কালচারের মাধ্যমে উৎপাদিত ‘জি-নাইন’কলার চারার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক বেশি।
সিরাজগঞ্জ জেলার রায়গঞ্জ উপজেলায় দীর্ঘদিন ধরে কলা চাষ করছেন রুবেল শেখ, আব্দুস সবুর ও মোহাম্মদ আলী। তারা জানান, স্থানীয় কৃষি অফিসের সহায়তায় তারা ‘জি-নাইন’কলার আবাদ করে আসছেন। ভাল ফলন হচ্ছে। কিন্তু টিস্যু কালচারের চারা সংগ্রহ করা খুব কঠিন। দেশে সরকারিভাবে টিস্যু কালচার ল্যাব নেই। বিভাগীয় পর্যায়ে একটি করে টিস্যু কালচার ল্যাব থাকলে কৃষকেরা সহজে কলার চারা সংগ্রহ করে আবাদ করতে পারতো।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনিস্টিটিউটের (বারি) উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের ফল বিভাগের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. বাবুল চন্দ্র সরকার জানান, বাংলাদেশে টিস্যু কালচার পদ্ধতিতে ‘জি-নাইন’কলা চাষ করে কৃষকেরা সবচেয়ে বেশি লাভবান হতে পারেন। ব্র্যাক, এসিআই, স্কয়ারসহ বেশ কয়েকটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান টিস্যু কালচার পদ্ধতিতে কলার চারা তৈরি করছে। আমরা গাছ ও অন্যান্য সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছি। দেশের অনেক কৃষক এখন আধুনিক পদ্ধতিতে কলাসহ বিভিন্ন ফলের চাষাবাদ করছেন।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সরকারিভাবে বিভাগীয় পর্যায়ে বা কৃষি অঞ্চল গুলোতে টিস্যু কালচার ল্যাব স্থাপন করার কোনো পরিকল্পনা আপাতত সরকারের নেই।